আমার মত একটা ছাত্র যে এইখান পর্যন্ত আসবে
এটা কল্পনায়ও ভাবি নি যদিও আমার বড় ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার আগে জানতামই না যে বিশ্ববিদ্যালয় বলে কিছু আছে এবং সেখানে পরিক্ষা দিয়ে সিট আদায় করে নিতে হয়। এটা হয়ত বা আমার দোষ নয় কারন আমাদের গ্রামের প্রায় সকল ছাত্রই এটা মনে করে।যাইহোক এডমিশন করার জন্য ভাইয়ের কাছে চলে আসলাম।
এসে যা বুঝতে পারলাম তা আমার পরে যারাই গ্রাম থেকে শহরে এডমিশনের জন্য আসবে সবাই সেটা উপলব্ধি করতে পারবে। তাহলো গ্রাম আর শহরের মধ্যে পড়াশোনার মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।গ্রামে পড়াশোনার সময় শুধু সকাল আর রাত। অন্যদিকে শহরে খাওয়া আর ঘুম বাদে সব সময়ই পড়াশোনা করা যায়। গ্রামের ছেলে শহরে এসে এর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল। তারপরও কোনো মতে ধরে ছিলাম।
আমার একমাত্র মোটিভেশন ছিল আমার ভাই। তার সাথে যখন এডমিশন নিয়ে আলোচনা করতাম তখন পড়াশোনার স্পিড বেড়ে যেত। রাবি ছিল আমার প্রথম টার্গেট পরীক্ষা দিলাম পজিশন (৮১৯) হলো যা চান্স পাওয়ার মত।ধীরে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা হলো দিলাম ঢাবি বাদে সব গুলোতেই পজিশন ছিল।জিএসটির এক্সাম ছিল সবার পরে। ভাই বলল জবিতে না হলে ভর্তি হতে দিবে না। জিএসটির পজিশন ছিল ২৯১০।
খুব মন খারাপ হয়ে গেল কারন জিএসটিতে আমার মুল টার্গেট ছিল জবি। এতদূর পজিশনে হবে না ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু তখন দেখলাম গতবছর এর থেকে অনেক দুর পর্যন্ত সাবজেক্ট পেয়েছে। এটা দেখার পর সাহস পেলাম চয়েচ লিস্টে ১-১৬ পর্যন্ত সব জবির সাবজেক্ট দিলাম। প্রথম মেরিটে আসল না চিন্তা পরে গেলাম।সবাই বলল এইবার এ পজিশনে আসবে না আরও চিন্তা প্রায় একমাস পর দ্বিতীয় মেরিট দিল আলহামদুলিল্লাহ জবির নৃবিজ্ঞান পেলাম।
তারপর শুরু হলো আরেক কথা তাহলো জবিতে কোনো হল নেই। “হল নেই হল ছাড়া এ আবার কেমন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়”। “ক্যাম্পাসও ত অনেক ছোট”। এরকম আরও অনেক কথা শুনতে হয়েছে। তারপর একদিন জানতে পারলাম জবিতে নাকি ১১ টা হল ছিল সব এলাকার প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছিল এতদিন।তারপর একদিন দেখলাম মাঠও নাকি ছিল সেটাও দখলে ছিল।ধীরে ধীরে সব উদ্ধার হচ্ছে।
তাই ভাবি আমার জবিতে কোনো হল, মাঠও ক্যাম্পাস নাই জানা সত্ত্বেও ভর্তি হয়েছিলাম। এখনতো দেখছি সবই আছে এটাকে আমি কি বলব God is great!!
আপনি কি বলতেন??