মো:জাবেদুল আনোয়ার
স্টাফ রিপোর্টার কক্সবাজার।
কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার পাহাড়ি জনপদ ঈদগড়ে স্বামী -স্ত্রীকে রাতের অন্ধকারে বসতঘরে প্রবেশ করে জবাই করে হত্যা করেছে।
বুধবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ৩ টার দিকে উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড উপরেরখিল এলাকায় এই লোহমর্ষক ঘটনাটি ঘটে।
নিহত দম্পতিরা হলেন, ঈদগড় ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড উপরেরখিল এলাকার স্বামী পরিত্যক্ত আমেনা খাতুনের মেয়ে রুবিনা আকতার (১৭) ও চট্টগ্রামের রাউজানের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ (১৮)।
রামু থানার ওসি তদন্ত ইমন কান্তি চৌধুরী জানান, প্রাথমিকভাবে এই হত্যাকান্ডে ৪ জনকে সন্দেহ করছে রুবিনা আক্তারের মা। তাদের মধ্যে অন্যতম বড়বিল চরপাড়া এলাকার আবদু রশিদের ছেলে রমজান আলী। রমজান আলী রুবিনা আক্তারের প্রাক্তন প্রেমিক ছিলেন। সে ইতিপূর্বে রুবিনা আক্তারের মা আমেনা খাতুনকে প্রকাশ্যে হুমকি ধমকি প্রদান করেছিলেন বলে পুলিশকে জানান।তাই সন্দেহের তীর রমজান আলীর দিকে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে স্থানীয় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকালে রমজান আলীর বড় ভাই বিভিন্ন অপকর্মের হোতা, হত্যা মামলার আসামী শিল্পী আনোয়ার হোসেনকে তার বসতবাড়ি থেকে আটক করে ঈদগড় পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা।তাকে আটকের খবর পেয়ে আনোয়ারের চাচা বজল আহমেদ প্রকাশ বজল ডাকাত পুলিশকে লক্ষ্য করে উপর্যপুরী গুলি বর্ষণ করে তাকে ছিনিয়ে নেয়।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নিহত রুবিনা আকতারের পিতা কামাল হোছেন বাইশারি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ধুইল্যাজিরি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। পিতা মাতার দাম্পত্য কলহের কারণে নিহত রুবিনা আকতার তার নানার বাড়ি ঈদগড় ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড উপরেরখিল এলাকায় থাকতেন।
রুবিনা আকতার ও নুর মোহাম্মদ দম্পতি প্রেম করে বিয়ে করে। তাদের বিয়েটি ছিল বাল্যবিবাহ।
প্রতিবেশীরা আরও জানান, রুবিনা আক্তারের সঙ্গে রমজান আলীর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের প্রেমের সম্পর্ক আরো দৃঢ় করতে রুবিনার পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় রমজান,কিন্তু রমজানের পরিবার তা মানেননি। প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় রুবিনাকে অন্যত্রে বিয়ে দেয় মা। বিয়ের কথাবার্তা চলাকালীন সময়ে প্রেমিক রমজান আলী এ-ও বলছিল তার পরিবারকে সে রাজি করে রুবিনাকে বিয়ে করবে। ততদিন অপেক্ষা করতে রুবিনার মা আমেনা খাতুনকে বারন করছিল।এ সম্পর্কের জেরে স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সালিসি বৈঠকও হয়েছিল। অপেক্ষা করতে নিষেধ করার পরও সেটি না মেনে অন্যজনকে বিয়ে দেয়ায় কয়েক দফা হুমকি ধমকি প্রদান করেছিলেন রমজান।তারই ধরাবাহিকতায় গভীর রাতে ঘরে ঢুকে জবাই করে হত্যা করে বলে জানান স্থানীয়রা।
ঈদগড় ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার কামরুল আমিন জানান, গভীর রাতে বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে শোনে প্রশাসনকে অবগত করা হয়। রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) ইমন কান্তি চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ দু’টির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মর্গে পাঠায় এবং ঈদগড়সহ জড়িতদের অবস্থানকৃত সম্ভাব্য স্থানে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান ইমন কান্তি চৌধুরী।