চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সদ্য অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষা (২০২৩-২৪) শিক্ষাবর্ষের ‘ডি ইউনিটে’ (PCQ) কোটায় মেরিট লিস্টে “১ম স্থান” অর্জন করায় ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাঙ্গন বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদরাসা চট্টগ্রামের কৃতি শিক্ষার্থী মুহাম্মদ মোবারক হোসাইন-কে ❝ আনজুমনে নওজোয়ান বাংলাদেশ, বায়তুশ শরফ আদর্শ মাদরাসা শাখার ❞ পক্ষ থেকে গতকাল ৩০ এপ্রিল ২০২৪, রোজ মঙ্গলবার ধনিয়ালা পাড়াস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা এবং সংবর্ধনা প্রদান করা হয় ।
উল্লেখ্য, মোবারক হোসাইন অত্র মাদরাসায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কৃতিত্বর সাথে জিপিএ-৫.০০ (A+) নিয়ে দাখিল ও আলিম পাশ করেন।
তারপূর্বে মোবারক টেকনাফের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রঙ্গিখালী দারুল উলুম ফাজিল (ডিগ্রী) মাদরাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা এবং অষ্টম শ্রেনী বোর্ড পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
বাড়ীর পাশের নূরানী থেকে শিক্ষা লাভের পর পরই দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত বাবা তাঁর আদরের সন্তানকে দ্বীনি ইলম হাসিলের জন্য ড. গাজী কামরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠিত রঙ্গিখালী দারুল উলুম ফাজিল (ডিগ্রী) মাদরাসায় এবতেদায়ী শাখায় ভর্তি করিয়ে দেন।
উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে কৃতিত্বের সাথে এক এক করে ইবতেদায়ী সমাপনী এবং অষ্টম শ্রেনী বোর্ড পরীক্ষায় ঈর্ষণীয় ফলাফল লাভ করেন।
এর পরে প্রবল এই মেধাবী উচ্চ শিক্ষার দ্বার উম্মুচনে ভর্তি হন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসায়। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫.০০ (এ+) অর্জন করেন।
কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের সাথে সাথে অদম্য মেধাবী মোবারক চিকিৎসা শাস্ত্রের জ্ঞান অন্বেষণে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। দুর্ভাগ্য,মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে না পারলেও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করে রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় মেরিট লিস্টে ১ম হয়ে চমক দেখিয়ে দিয়েছেন মাদরাসা শিক্ষার্থী মোবারক হোসাইন। শেষ পর্যন্ত নিজের পছন্দের সাবজেক্ট “আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিভাগ” পেয়েছেন।
সহপাঠিদের মধ্যে প্রচন্ড প্রিয়মুখ তাদের মোবারক হোসাইন। প্রতিটি ক্লাসে ফাস্টবয় ছাড়াও স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচনেও বার বার সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত স্টুডেন্ট প্রতিনিধি। প্রবল মেধাবী এই ছাত্র প্রচন্ড নিরহংকার ও যথেষ্ট ভদ্র। শিক্ষকদের যথাযথ মর্যাদা এবং সম্মান এবং শ্রদ্ধা দেখানোর ক্ষেত্রে অন্যদের জন্য আদর্শ।
এছাড়া অভিভাবকতূল্য সিনিয়র ভাইদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দেখাতেও কোন ধরণের কার্পণ্য করতে দেখা যায়নি। মোবারকের মাঝে, মেধার পাশাপাশি আচরণেও অন্য দশজনের চেয়ে ভিন্নতা রয়েছে। তাঁর “মেধা এবং আচরণ” অধুনা যুগের পড়ুয়ারা অনুসরণ করতে পারেন।
যতটুকু জানা গেছে,অদম্য মেধাবী মোবারক হোসাইন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী এলাকার আলীখালী গ্রামের মাওলানা আবু আহমদ ও জামালিদা দম্পত্তির বড় সন্তান। পিতা আবু আহমদ গ্রামের একটি মসজিদের পেশ ইমাম ও খতীব। স্বল্প বেতনের চাকুরী নিয়েও নিজের ছেলেকে মানুষের মত মানুষ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন মাওলানা আবু আহমদ।
উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে তা়ঁর ছেলে একদিন মানবিক এবং নৈতিক গুণাবলী সম্পন্ন মানুষ হবে। সবখানে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিবে। বাবার স্বপ্নের সাথে মিল রেখে নিজেও বিজ্ঞান ভিত্তিক জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন। নিজের এবং বাবার স্বপ্নের মিলবন্ধন রেখেই “মোবারক” উচ্চ শিক্ষা লাভে এগিয়ে যাবে বহুদূর। স্বপ্নবাজ এই মেধাবী মা-বাবা, শিক্ষক, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীদের দোয়া এবং ভালবাসায় বহুদূরে এগিয়ে যেতে চায়।