মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী।
মানুষ মানুষের জন্যে নয় বরং নিজের জন্যে কতিপয় ব্যাতিক্রম ছাড়া। মানুষ সব সময় নিজেকে নিয়েই চিন্তা ভাবনা করে। নিজের সাফল্য উন্নতি লাভ লোকসান চিন্তা করে। নিজের জন্যে উপড়ে উঠার সিঁড়ি তালাশ করে। খুঁজে বেড়ায়। অন্যকে সাফল্যের সিঁড়ি এগিয়ে দেয় না। অন্যের বিপদে আপদে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যেতে চায় না। বলা ভালো অন্যের জন্যে রিস্ক নিতে চায় না। চায় না দুঃখে পড়তে। ঝামেলায় জড়াতে। তাঁরা আপন পর চিন্তা করে না।কাজ করে না ধর্মীয় অনুভূতি।
আত্মার বন্ধন, রক্তের বন্ধন, সামাজিক বন্ধনও ক্রিয়াশীল হয়না তাঁদের অন্তরে।কেন জানি মনে হয় মানুষ জন্মগতভাবেই স্বার্থপর। অনেকেই উপকারীর উপকার স্বীকার করতে চায় না। এমনকি তাদের বিপদে দুর্ভোগে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করে না।বিপদগ্রস্তদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করার মধ্যেও যে দান সাদাকার সওয়াব রয়েছে তাও আমরা অনুধাবন করিনা। অন্য বিষয়গুলো না হয় বাদই দিলাম।
মনে প্রশ্ন জাগে, আমরা কি ক্রমশ অবেগ অনুভূতি সহানুভূতি সমবেদনা সহমর্মীতাহীন জড় পদার্থে পরিণত হচ্ছি? পারিবারিক শিক্ষা ঐতিহ্য সামাজিকতা ধর্মীয় রীতিনীতি স্নেহ শ্রদ্ধা ভালবাসা মায়া মমতা বিসর্জন দিয়ে আত্মকেন্দ্রীক অসামাজিক জীবে পরিণত হচ্ছি।তাই-ই যদি হয় তাহলে আমরা কি মানুষ হিসেবে নিজেদেরকে পরিচয় দিতে পারি! জাহির করতে পারি মানবসন্তান হিসেবে। মানবতাবাদী জনদরদী সামাজিক মানুষ হিসেবে।
আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষের এহেন অমানবিক অনৈতিক কর্মকাণ্ড মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। মানবিক নৈতিক গুণাবলী বিবর্জিতরা আর যা-ই হোক নিজেদেরকে মানুষ দাবি করতে পারে না।হয়তবা আমাদের সামনে এমন একটা সময় আসবে যেখানে মানব আর দানবের কোনো পার্থক্য থাকবে না।হায়রে মানুষ রংগিন ফানুস। দম পুরাইলে টুস!