ইমরান উদ্দীন,স্টাফ রিপোর্টার (কক্সবাজার)
উনিশশত পঁচানব্বই সালে মাত্র কয়েকজন ছাত্রী নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়া জোয়ারিয়ানালা গার্লস হাই স্কুল যা আজ ‘শেখ হাসিনা জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ নামে সুপরিচিত, কক্সবাজার জেলায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়ে শুধু জোয়ারিয়ানালা বাসীকেই নয়, পুরো কক্সবাজার তথা দক্ষিণ চট্টগ্রামকে আলোকিত সম্মানিত করেছে।
এই ঐতিহাসিক,অসামান্য,অনবদ্য অর্জনের পরদে পরদে অসংখ্য গুণগ্রাহী কীর্তিমান ব্যক্তির ত্যাগ,ভালবাসা সবসময় স্মরণীয়।
নব্বই দশকের প্রারম্ভিক সময়ে পিছিয়ে পড়া নারী সমাজের অগ্রগতির জন্য জোয়ারিয়ানালার তৎকালীন কিছু সমাজসেবক, শিক্ষকের দলবদ্ধ ঐক্যের যে স্বীকৃতি তখন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অর্জিত হয়েছিল তার সার্থকতা আজ অর্জিত হয়েছে এই জোয়ারিয়ানালার সফল ব্যক্তি, পরিষদ শিক্ষক, অভিভাবক সহ এলাকাবাসীর নি:সার্থ প্রচেষ্টায়।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অপার মহিমায় এই অর্জনের অন্যতম কৃতিত্ব প্রথমেই দিতে হবে বিদ্যালয়ের ‘ছাত্রীদের’, যারা শিক্ষা-ক্রীড়া-সংস্কৃতির সমন্বয়ে স্কুলকে জেলার সফল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেছেন।
আটাশ বছর বয়সী এই বিদ্যালয়ের ইট-পাথর-বেড়া-টিনের গাথনির সাথে যাদের শ্রম, ভালোবাসা অংকিত হয়েছে, আজ স্কুলের সার্থক সময়ে তাদের স্মরণ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যা প্রজন্মান্তরে নীড়ের প্রতি দায়িত্ববোধকে জাগিয়ে তুলবে।
স্কুলের প্রতিষ্ঠা পূর্ব সময়ে দাতা সমন্বয়, ছাত্রী সংগ্রহ ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তর প্রক্রিয়ায় নিজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতার সমন্বয় করে মরহুম জালাল আহমদ চৌধুরী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠায় নিজেকে নিবেদিত করেছেন প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে নি:সার্থভাবে।
তখনকার সময়ের জেলার প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মাহাবুবর রহমান চৌধুরী নিজের সুচিন্তা, পরিমিতিবোধ, কর্মনিষ্ঠা ও সুসম্পর্ক সমন্বয় করে ‘প্রধান পৃষ্ঠপোষক’ হিসেব বিদ্যালয় কে প্রতিষ্ঠা করতে অবদান রেখেছেন।
এছাড়া স্কুলের প্রতিষ্ঠায় যাদের অবদানে প্রজন্ম সবসময় কৃতজ্ঞ থাকবেন-
মরহুম শামসুল হক ও বেগম শামসুল হক
মোতাহারুল হক সিকদার
নুর আহমদ সিকদার
মফিজুল হক সিকদার
সিরাজুল হক সিকদার
মোজাহের আহমেদ সিকদার প্রমুখ।
দাতাগোষ্ঠী হিসেবে –
মমতাজ আহমেদ
আবু তাহের চৌধুরী
গোলাম কবির
সোনিয়া হাসনাত
ছৈয়দ কাজী ও ডাক্তার কিরণ চন্দ্র শর্মার অবদান অনস্বীকার্য।
জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে শেখ হাসিনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে পরিবর্তন ও বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন প্রকল্প বাস্তবায়নে যার প্রত্যক্ষ সহযোগিতা সবসময়ই বিদ্যালয়কে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছেন – জনাব মোমিনুর রশিদ আমিন, সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সচিব ও বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি।
তাছাড়া প্রাক্তন সভাপতি ইকবালুর রশিদ আমিন, বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হোছন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নি:সার্থভাবে কাজ করে যাওয়া শিক্ষক নুরুল হাকিমের অবদান পাথেয়।
বিদ্যালয়ের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকবৃন্দের কাছে আমাদের সুপ্রত্যাশা থাকবে যাতে বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা, অগ্রগতি কোনভাবেই অপশক্তির কাছে নত না হয় আর জোয়ারিয়ানালার নারী সমাজের শতভাগ শিক্ষার দ্যোতি যাতে এই বিদ্যালয় আলোকিত করে।
স্কুলের সভাপতি মোমিনুর রশিদ আমিন যথার্থই বলেছেন-
“আমার দৃঢ় প্রত্যাশা গ্রামীণ জনপদে নারী শিক্ষার পথিকৃৎ এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আপনাদের সহযোগিতা ও পরামর্শ অতীতের ন্যায় আগামীতেও ইনশাআল্লাহ অব্যাহত থাকবে।