ঢাকাশুক্রবার , ২৬ এপ্রিল ২০২৪
  1. সর্বশেষ

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চাপে শিক্ষার্থীরা

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
২৫ মার্চ ২০২৩, ২:২৩ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

—————
মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সুষম খাদ্যের।সুন্দরভাবে জীবন যাপনের জন্য তাদের
বিভিন্ন রকম নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের প্রয়োজন হয়।এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের পাশাপাশি মানুষের
কিছু বিলাসবহুল পণ্যেরও প্রয়োজন হয়,কিন্তু বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে মানুষ চাহিদা
অনুযায়ী বিলাসী বা বেশি ব্যয়বহুল দ্রব্যগুলোর ব্যবহার কিছুটা বাদ দিতে পারলেও নিত্য প্রয়োজনীয়
দ্রব্যগুলের ব্যবহার বাদ দিতে পারছে না।বর্তমানে যে হারে পণ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সুষম
খাদ্য তো দূরের কথা বেঁচে থাকার জন্য যে খাদ্য প্রয়োজন তার জন্য মানুষকে লড়াই করতে হচ্ছে।
দ্রুতগতিতে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দিশেহারা হয়ে পড়েছে মেস বা বাসা
বাড়িতে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরাও।চাল,ডাল,কাঁচা সবজি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম
আকাশচুম্বী। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের আয়ের মানুষের সাথে এক কাতারে
হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রংপুর নগরীতে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীরা।নিত্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে শহরের নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের পাশাপাশি কলেজ ও
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।শহরের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে
তেমন আবাসন সুবিধা না থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে মেসে বা বাসা বাড়িতে বসবাস করতে হয়।এইসব
ছাত্রছাত্রীর অনেকে টিউশনি বা বিভিন্ন রকম পার্টটাইম চাকরি করে নিজের খরচ চালায়।কিন্তু
দ্রব্যমূল্যের উদ্ধৃতির ফলে তাদের বর্তমান ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে সবকিছুর, ফলে তাদের জীবন
যাপন করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

“সবকিছুর দাম এত বেশি বেড়েছে যে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা আমাদের মত মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীদের
জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে।মেসে কোনরকমে মিল চালাই।আলুভর্তা,পাতলা ডাল,শাকসবজি,ডিম ভাজি অথবা
রান্না ডিমই এখন নিত্যদিনের খাবার।মেসে খাবার খরচ বাঁচাতে এখন আর আমরা তেমন মাংস খাই না।কম
টাকায় কীভাবে মাস পার করা যায়;সবাই সেই চেষ্টা করছি।” নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কয়েকগুণ বেড়ে
যাওয়ার প্রভাবে মেসের খাবার মেনু বা খাদ্যাভ্যাসের কথা এভাবেই বলছিলেন রংপুর কারমাইকেল কলেজের
শিক্ষার্থী শাকিল হোসেন।

রংপুর মহানগরের কয়েকটি বাজার পরিদর্শন করে দেখা যায় দুই একটি পণ্যের দাম ছাড়া সবকিছুর দাম
অনেক বেশি।যেমন:ব্রয়লার দাম কেজি প্রতি ২৫০ টাকা যা আগে ছিল ১৪০–১৫০ টাকা,গরুর মাংসের কেজি
৮০০ টাকা,এছাড়াও আলু,বেগুন,পটল,সজিনা ও কুমড়াসহ সব কিছুর দাম অনেক বেশি।প্রতি কেজি মিনিকেট
চাল বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা কেজি, পাইজাম ও মোটা স্বর্ণা চায়না চাল বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৬ টাকা
কেজি।সয়াবিন তেল প্রতিলিটার ১৬৮ টাকা,সয়াবিন তেল(বোতল)৫ লিটার ৮৭০ টাকা,সয়াবিন তেল(বোতল)
১লিটার ১৮০ টাকা, পাম অয়েল প্রতি লিটার ১২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।তাছাড়া এই বছরে মেস ভাড়া,
সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিলসহ যুক্ত হয়েছে আরও বাড়তি ব্যয়। সবমিলিয়ে জীবন চালাতে
হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। রমজানের আগে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেশি হাওয়ায়
রমজান শুরু হলে কি ভাবে মেস জীবন অতিবাহিত করবে এ ভেবে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
“পণ্য দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি করার কোনো যৌক্তিক কারণ দেখি না।মূল্যবৃদ্ধির কারণে দরিদ্র
শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রা নির্বাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।যেখানে খাওয়া খরচ,মেস ভাড়া, খাতা কলম
কেনা কোনো মতে সম্ভব ছিল,মূল্য বৃদ্ধির কারণে এখন লেখাপড়া ও মেসের খাওয়া খরচ চালানো খুবই
কষ্টের হয়ে দাড়িয়েছে।এভাবে চলতে থাকলে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সংখ্যা আসতে আসতে কমে আসবে।”

নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যায় নির্বাহের কথা এভাবেই বলছিলেন,বেগম রোকেয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো.বেলাল হোসেন।

শামীম হোসেন নামে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুরের আর এক শিক্ষার্থী বলেন, “দ্রব্যমূল্যের
উদ্ধৃতির ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে।যার প্রভাব পড়তেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপরেও।বাড়ছে
নিত্য প্রয়োজনীয় সকল দ্রব্যের দাম। পিছিয়ে নেই শিক্ষা উপকরণও। গত কয়েক মাসে আগের তুলনায় বই,
খাতা, কলমের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। বাড়তি ব্যয়ের তালিকায় রয়েছে বাসাভাড়া, খাবার খরচ, পরিবহন
ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, প্রতিষ্ঠানের খরচ।এখন খাদ্য যোগানোই বেশি টাকা চলে যাচ্ছে। তাছাড়া
অন্যান্য খরচ তো রয়েছেই।এমত অবস্থায় রোজায় হয়তো চলাটা আরও দুস্কর হয়ে উঠবে।”

“দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতর জন্য আমাদের জীবন চালানো দুর্বিষহ হয়ে পরেছে।কোনোরকম সবকিছুর
সাথে তাল মিলে চলতে হচ্ছে।আজ থেকে তিন বছর আগে যখন প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা থাকতো সেটা
দিয়ে অনায়াসে সেই মাসের সকল খরচ চালানো যেত কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য এখন তিন
হাজার তো দূরের কথা ছয় হাজারও কিছুই হচ্ছে না।” মেসের খরচ সম্পর্কে এভাবেই বলছিলেন বেগম
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুরের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র
মো.ইয়াসিন আরাফাত।

বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণগুলো তাহলে কী? সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র
ও যুক্তরাজ্যের মতো ক্ষমতাধর দেশগুলো ইউক্রেনের পক্ষ নেয় এবং যুক্তরাষ্ট্র জ্বালানি তেল
উৎপাদনে বিশ্বেরঅন্যতমশীর্ষ দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে রাশিয়ার তেল রপ্তানি বন্ধ
হয়ে যায়।ফলে ইউরোপজুড়ে জ্বালানি সংকট দেখা দেয়।এতে করে জ্বালানির দাম বেড়ে যায় এবং বৃদ্ধি পায়
নিত্যপণ্যের দামও।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ঊর্ধ্ব মূল্যের কারণ কি শুধু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নাকি আরো কিছু?উত্তর হলো
যুদ্ধের পাশাপাশি রয়েছে দুর্নীতি,দায়িত্বশীলদের গাফিলতি,অনিয়ম,ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট যা
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ক্ষেত্রে আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে।এখন প্রশ্ন উঠতে পারে অন্যান্য
দেশেও তো মূল্যবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি ঘটেছে তা কেন?উত্তর হলো যুদ্ধের জন্যসব দেশেই কমবেশি
নাকানিচুবানি খাচ্ছে এটা যেমন সত্য,তেমনি দুর্নীতি না হলে সংকট মোকাবিলায় আমরা একটু হলেও উপকৃত
হতাম এটাও নিরেট সত্য।

এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস দিয়েছেন এবং তা মোকাবিলায় দেশের প্রতি
ইঞ্চি মাটিতে ফসল ফলানো আহ্বান করেছেন।সর্বোপরি, সম্ভাব্য খাদ্য সংকট বা দুর্ভিক্ষকে মোকাবিলা
করতে সবাইকে আরো সতর্ক হতে হবে এবং অর্থ ব্যয় ও প্রকল্প গ্রহণে সাবধান হতে হবে। এক্ষেত্রে
কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ এমনটি যাতে না ঘটে, তারই প্রত্যাশা করে সাধারণ জনগণ।

142 Views

আরও পড়ুন

শেরপুরে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার আসামী কানন মিয়া গ্রেফতার

আদমদীঘিতে অবৈধ ভাবে মাটি কাটার অপরাধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

BIIHR ও অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত: নেতৃত্বে জবি শিক্ষার্থী ফয়সাল

পেকুয়ায় বনবিভাগকে ফাঁসাতে গভীর ষড়যন্ত্রে নেমেছেন বনদস্যুরা

পেকুয়ায় বনবিভাগকে ফাঁসাতে গভীর ষড়যন্ত্রে নেমেছেন বনদস্যুরা

কুতুব‌দিয়ার ইউ‌পি চেয়ারম্যান আজমগীর কারাগা‌রে

দোয়ারাবাজারে শিশু হত্যা মামলার আসামিসহ দুই ইয়াবা কারবারি গ্রেফতার

দীর্ঘ ৮ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস এর ঢাকায় ফেরা নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভ

এবার কুবির আরেক সহকারী প্রক্টরের পদত্যাগ

নাগরপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন আলো এর দাফন সম্পন্ন

দোয়ারাবাজারে বালিউড়া বাজার ব্যবসায়ী কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন

যৌথ-বাহিনীর কেএনএফ বিরোধী অভিযান বন্ধের দাবীতে রাঙামাটিতে ইউপিডিএফ’র অবরোধের ডাক

রাজশাহীতে আদালতে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত দুই বোন