– শামসুল আরেফিন শান্ত
ভালোবাসা যখন নিজ দায়িত্বে আদর,স্নেহ,মমতায় বড় হতে থাকে, তখন অতীত আর ভবিষ্যতকে কালো কাপড়ে ঢেকে যে সুখ পাই‚ তা আর যাই হোক প্রেমের সুবাস দিতে সক্ষম ‘আছে‚ পাশে‚ কাছে‚ পাবো‚ নেই’ ছিল শব্দগুলোর মধ্যে যে ভালবাসার এক দেয়াল পেড়িয়ে কিছুটা দায়িত্বের ইঙ্গিত বহন করে‚ এটা একটু কষ্ট করে বুঝে নিতে হয়। আর যদি ‘দায়িত্ব’ নামক শব্দটার’ই ঘ্রাণ না পাওয়া যায়তাহলে একটা কথা তো পরিষ্কার যে‚‘আপনার ভালোবাসা ছুটিতে গেছে।’
আরো কিছু শব্দ ‘ছিলাম‚আছি‚থাকব’
-এগুলো ভালোবাসার পবিত্রতা ও মহিমাকে কোলে করে রাতের চাঁদটা দেখিয়ে বলে‚ ওই যে তুমি! এখনো আমারই কাছে।
চলুন আজ সবাই মিলে দুঃখিত বলি এই সকল প্রেমিক-প্রেমিকাকে যাদের আমরা কোনদিনই বুঝতে পারিনি। যারা ভালোবাসার প্যাকেট দেখিয়ে ছোট্ট-ছোট্ট সোনামণিদের কষ্ট দেয়। যাদের ইচ্ছা‚চাহিদা‚আহ্লাদকে ভালোবাসা ভেবে আমরা ভুল করেছি‚ যাদের চোখে ও মনে- কাপড়ের উল্টা পিঠেও একটা চাহিদা কাজ করে। হয়তো ভুল আমাদেরই আমরাও চোখ দিয়ে ভরসা করি‚ তাই প্রকৃতির খেলায় আমাদের শেখানো হয় যে- মন দিয়ে ভরসা করা মানুষগুলো অন্যরকম হয়‚ এমন না যাতে আমরা ছিলাম। আরেক ধরনের পাবলিক আছে‚ যারা প্রেম জগতে ‘শিক্ষকতা’ চাকরিপ্রাপ্ত।
সম্পর্কের পর পরই আমাদেরকে ‘ভুলে যাওয়া’র প্রতিভাটা টুকু শিখিয়ে দিয়ে যান। আসলের এরা দায়িত্ব নিতে জানে না, তারপরও কি জানি কোন সুখের আশায় মানুষের দরজায় দরজায় ঘুরঘুর করতে দিব্যি দেখা যায়। এই যে বেতনহীন চাকরিজীবীরা আপনাদের বলছি‚ আপনাদেরও একদিন ভুলে যেতে হবে যেইদিনই- সত্যিই ভালোবাসতে শিখবে সেইদিনই। দুটো মন জোড়ার আগেই ভেঙ্গে গেল‚ হাতটা ধরে পথ হাঁটার আগেই বিচ্ছেদ‚ আদৌ জানি না কি লিখেছিল ওই চিঠিতে নাকি আমারই ভুল যে আমার খামসহ চিঠি কখনোই তোমার মন পর্যন্ত যাওয়ার যোগ্য ছিল না। তুমি তো এড়িয়ে গিয়ে বেঁচে গেলে‚ জানি এখন ঠিকই অন্য কারো। আর আমি? না পারিলাম বাঁচতে‚ না পারলাম মরতে‚ মরে যাওয়া মনের কবর না দিতে পারায়- জায়গার খোঁজে কখনো কি বের হয়েছো? -আমি হয়েছি।
তারপর কোনোদিন তোমার অসাফল্য জীবনে আবার আমাদের দেখা হলে তখন ঠিকই বলবে আমাকে‚ ‘ভালোবাসা কোথায় কোথায় বিক্রি করে এসেছো আর যখন এসেছো তখন কি নিয়ে এসেছো?’ আমি তখন বলব- ‘একটা ভালোবাসাকেও সামলাতে পারলে না?’ এটা নিজে কেউও জিজ্ঞাসা করবো। তারপর আরো বলবো- কাচের মন ভেঙে দিয়ে বলো নি সুই-সুতা দিয়ে সেলাই করে নিতে? আমার জীবনটা হাতে নিয়ে ঠিকই তো খেলা করলে আর তারপর বলোনি এবার যাও নিজের জীবনের ঐশ্বর্য খুঁজে নাও? -আরো ভালো পাবে।
এখন তো তোমার হৃদয়টাও কে জানি চুরি করে নিয়ে গেছে‚ আমার জন্য কি বা আছে বাকি বলো? খুব জানি আবার এলে কেউ আমাকে আবার এতিম করে চলে যাবা‚ ভালোবাসা থাকলেও কি? ভরসাটারে তো নিজ হাতেই খুন করে গিয়েছিলে! আজও যখনই ওই শীর্ষের কথা মনে পড়ে তখন এই মনও অজানা কোনো পিপাসায় কারে জানি সামনে আনে, এখন কষ্টেও এই মুখ একগাল হাসি দিয়ে পুরনো স্মৃতিকে কপালে চুমু খেয়ে বলে- ‘লক্ষীসোনা প্লিজ ঘুমিয়ে যাও।’
লেখক : [সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়]