কাইছারুল ইসলাম,মমহেশখালী :
# প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কার্যক্রম নাই হাসপাতালটির
# উর্ধতন কতৃপক্ষের নেই কোন তদারকি
# ১২ বছর ধরে দখলে হাসপাতালটি
# সেবা বঞ্চিত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ
কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালনাধীন একমাত্র মাতারবাড়ী পশু হাসপাতাল দীর্ঘদিন যাবত জবুরা বেগমে নামে এক মহিলার দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জবুরা বেগম স্থানীয় সিকদার পাড়া এলাকার মতিউর রহমানের স্ত্রী, মাতারবাড়ী গ্রাম পুলিশের সদস্য নুরুল আমিনের ছোট বোন বলে জানা যায়।
জানা যায়, আনুমানিক ১৯৯০ সালে মাতারবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে পুরাতন দীঘির পাড়ে পশু হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সাধারণ মানুষের কল্যাণে হাসপাতালটি নির্মাণ করা হলেও ৩২ বছর ধরে কোন সেবা পায়নি সাধারণ মানুষ। হাসপাতালটি ১৯৯০ সালে নির্মাণ করার পর সরকারিভাবে কোন পশু চিকিৎসক না থাকায় কোন কার্যক্রম ছিলনা বলে জানায় স্থানীয় এক বাসিন্দা।
তিনি আরো বলেন,উর্ধতন কতৃপক্ষের কোন তদারকি না থাকায় দীর্ঘদিন যাবত হাসপাতালটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছিল। সেই সুযোগে জবুরা বেগম হাসপাতালটি দখল করে বসবাস শুরু করেন।
স্থানীয়রা জানান, মাতারবাড়ীতে একটা পশু হাসপাতাল আছে আমরা জানতাম না, তবে মাতারবাড়ীতে একজন সরকারিভাবে পশু চিকিৎসক আছে বলে শুনছিলাম। হাসপাতালের কোন কার্যক্রম না থাকায় পশু পালনে আমাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। মহেশখালীর বিভিন্ন ইউনিয়নে সরকারিভাবে নানা রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হলেও আমরা সরকারিভাবে কোন সহায়তা পায়না। সরকারি হাসপাতাল নির্মাণ করা হলেও নেই কোন কার্যক্রম।যদি কেন কার্যক্রম না থাকে নামে মাত্র হাসপাতাল তৈরি করে সরকারের ক্ষতি করে লাভ কি?আমরা সরকারি হাসপাতাল পুনঃ উদ্ধার করে সহায়তা প্রধানের জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
খোজ নিয়ে জানা যায়,পশু হাসপাতালের জন্য সরকার ২০১৮ মোহাম্মদ ফয়সাল নামে একজনকে নিয়োগ দেয় সরকার।কথা হয় ফয়সালের সাথে।মাতারবাড়ী পশু চিকিৎসা কেন্দ্র সম্পর্কে জানতে চাইলে ফয়সাল বলেন,দীর্ঘদিন যাবত কিছু মানুষ কেন্দ্রটি দখল করে রয়েছে।আমি স্থানীয় চেয়ারম্যান আবু হয়াদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ডিসি অফিসে অভিযোগ দিতে বলেন।ডিসি অফিসে লিখিত অভিযোগ দেওয়া সত্ত্বেও কোন প্রতিকার মিলছেনা।
তিনি আরো বলেন,কেন্দ্রটি দখলে থাকার কারণে অনেক মানুষ সেবা নিতে পারতেছেনা।সরকারিভাবে পশুর জন্য বিভিন্ন ধরণের ভ্যাকসিনসহ ঔষধ দেওয়া হয় যা থেকে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি দখলমুক্ত করার জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় জবুরা বেগমের ছেলে আবু বক্করের সাথে।তিনি জানান,দীর্ঘ ১২ বছর আগ থেকে আমরা কেন্দ্রটিতে বসবাস শুরু করি। হাসপাতালটি দীর্ঘদিন যাবত পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছিল।আমাদের বসবাসের কোন জায়গা না থাকায় আমরা হাসপাতালটিতে উঠতে বাধ্য হয়েছি।পরিত্যক্ত হাসপাতালটি কোনমতে থাকার উপযোগী করে বসবাস শুরু করেছি। এখন পরিবার নিয়ে যাব কোথায়? সরকার যদি আমাদের পুনর্বাসনের কোন ব্যবস্থা করেন আমরা ছেড়ে দিতে বাধ্য হব।
এদিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নন্দন কুমার চন্দ বলেন,মাতারবাড়ী পশু চিকিৎসা কেন্দ্র দীর্ঘদিন যাবত একজন গ্রাম পুলিশের বোনের দখলে রয়েছে।আমি বহুবার স্থানীয় চেয়ারম্যান আবু হায়দারকে বিষয়টি অবগত করেছি, তিনি এইটা দখলমুক্ত করবে বলে আশ্বস্ত করেছিলেন কিন্তু এখনো দখলমুক্ত হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম আবু হায়দার জানান,তারা ভূমিহীন হওয়ায় হাসপাতালটিতে আশ্রয় নিয়েছে।আমি অবগত হওয়ার পর তাদের নোটিশ দিয়েছি এবং নিজে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা ছেড়ে দিবে বলে আশ্বস্ত করেছেন বলে জানান তিনি।