নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নেতৃত্বে সরকারি কাজে বাঁধা দান ও পুলিশের উপর হামলা চেষ্টার অভিযোগে ৪ দূবৃক্তকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার রাতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বালিয়াঘাট এলাকায় পাটলাই নদীতে সরকারি ইজারা মূল্য ভ্যাট, আয়কর ছাড়াই শান্তিপুর থেকে লুটে নেয়া একটি খনিজ বালু বোঝাই ষ্টিল বডি(ইঞ্জিন চালিত) নৌকা আটক করার পর পুলিশ সদস্যরা ওই হামলা চেষ্টার শিকার হন।
সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি,তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রপের আন্ত:র্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল খায়ের কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের কয়েকজন সেন্ট্রি (পাহাড়াদার) ও নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে আটক বালু বোঝাই ষ্টিল বডি নৌকা থানায় নিয়ে যাবার পথে পাটলাই নদী থেকে বালু বোঝাই নৌকা ছিনিয়ে নিতে ও পুলিশ সদস্যদের উপর হামলা চেষ্টা চালিয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা এমনকি খোদ পুলিশের পক্ষ থেকেই অভিযোগ উঠে।
পরে থানা থেকে রাতেই সহকারি পুলিশ সুপার তাহিরপুর সার্কেল(তাহিরপুর-জামালগঞ্জ) মো. সাহিদুর রহমানের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলা চেষ্টা জড়িত থাকায় অভিযান চালিয়ে চার দূবৃক্তকে আটক করে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয় লোকজন জানান, গেল এক সপ্তাহ ধরে ইজারাপ্রাপ্ত নয়া ছড়ার বালু বলে ইজারা বিহিন শান্তিপুর হাওর থেকে লক্ষাধিক ঘনফুট খনিজ বালু লুটে নিয়ে এসে একটি প্রভাবশালী চক্র বালিয়াঘাট পাটলাই নদীতে ষ্টিল বাডি নৌকায় করে লোড করে নিয়ে যাচ্ছে।
বিষয়টি স্থানীয় লোকজন প্রশাসন ও থানা পুলিশকে অবহিত করলে বুধবার রাত ৮টার দিকে থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মো. সোহেল রানার নির্দেশে টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এএসআই খায়রুল আলম দু’জন কনষ্টেবলকে নিয়ে এসে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পাটলাই নদী থেকে অবৈধ খনিজ বালু বোঝাই ষ্টিল বডি নৌকা আটক করেন। এরপর নৌকাটি থানায় নিয়ে যাবার পথে আবুল খায়ের মাদকাসক্ত অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে পৃথক নৌকা যোগে কয়লা আমদানিকারক গ্রপের বেশ কয়েকজন সেন্ট্রি (পাহাড়াদার) ও নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে এসে বালু বোঝাই নৌকা ছিনিয়ে নিতে ও পুলিশ সদস্যদের উপর হামলার চেষ্টা চালান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার বালিয়াঘাট এলাকার বুধবার রাতের ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও থানার টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এএসআই খায়রুল আলম এমন তথ্য নিশ্চিত করেন।
আবুল খায়ের তাহিরপুরের উওর শ্রীপুর ইউনিয়নের গোলকপুর গ্রামের বাসিন্দা। নিজেকে সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি একই সাথে তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের আন্ত:জার্তিক বিষয়ক সম্পাদক দাবি করেন।
অভিযোগ উঠেছে নিয়মিত মাদক সেবন করে বালিয়াঘাট এলাকায় গণ অশান্তি, ষাদারন লোকজনের মধ্যে ভীতি প্রদান, গালিগালাজ , প্রভাব বিস্তার করা, সরকারি দলের ক্ষমতার অপব্যবহার ও কয়লা আমদানিকারক গ্রপের পদবী ব্যবহার করে গেল কয়েক বছর ধরে বড়ছড়া-চারাগাঁও শুল্ক ষ্টেশন থেকে দেশব্যাপী নৌপথে কয়লা চুনাপাথর পরিবহনকালে কথিত সেট্রিদের দিয়ে নৌপথে চুরি, ভারতীয় চোরাচালানের কয়লা চুনাপাথর জব্দ করে নিজেরাই মনগড়া নিলামে ক্রয় বিক্রয় করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন খায়ের চক্র। খায়ের চক্র এরপর একটি প্রভাবশালী চক্রকে সাথে নিয়ে গেল এক সপ্তাহ ধরে ভুয়া ইজারার নামে সরকারী মুল্য ভ্যাট আয়কর ছাড়াই শান্তিপুর হাওর থেকে লক্ষাধিক ঘনফুট খনিজ বালু লুটে নিয়ে এসে পাটলাই নদীতে নৌকায় লোড করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেও হাতিয়ে নেন অর্ধ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আবুল খায়েরের বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে সরকারি লোক দাবি করে বলেন, আমি সরকারি কাজে বাঁধা দেইনি পুলিশের উপর হামলার চেষ্টাও হয়নি।
সীমান্তের নয়াছড়ার ইজারার বালু দাবি করলেও ইউএনও অফিস থেকে বিষয়টি অস্বীকার করে ইজারাবিহিন শান্তিপুর হাওরের খনিজ বালু ফাউ লোড করে নিয়ে যাচ্ছেন এমন অভিযোগের কোন সদুক্তর না দিয়ে তিনি সংবাদ প্রকাশ না করতে বার বার এ প্রতিবেদককে অনুরোধ করে বলেন বিষয়টি পুলিশের সাথে মিটমাটের চেষ্টা তদবীর চলছে।
তাহিরপুর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মো. সোহেল রানা জানান, সরকারি কাজে বাধা দান , খনিজ বালু বোঝাই নৌকা ছিনিয়ে নেয়া ও , হুমকি প্রদান অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এমনকি পুলিশ সদস্যদের উপর হামলা চেষ্টার ঘটনায় জড়িত আবুল খায়ের সহ বেশ কয়েক জনের নামে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।