ঢাকাশুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪
  1. সর্বশেষ
  2. সারা বাংলা

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আবারও ষড়যন্ত্র ; পাহাড় দাপাচ্ছে কুকি-চিন আর্মী

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
১৮ এপ্রিল ২০২২, ২:১৫ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

|| মুহাম্মদ ইলিয়াস ,রাঙামাটি- ||

সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে পাহাড় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মী। দেশের পার্বত্য ভু-খন্ডে পৃথক রাজ্য গড়ার প্রত্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম ( রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা) নিয়ে আবারও নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার শান্তিপ্রিয় হিসেবে পরিচিত ক্ষুদ্র ৬ টি নৃ-গোষ্ঠী (বম, পাংখুয়া, লুসাই, খুমি, ম্রো ও খিয়াং)’র সমন্বয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’র আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। দেশের এক-দশমাংশ জায়গা জুড়ে দীর্ঘদিন ধরে খুন,গুম, অপহরণ, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করে যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ( পিসিজেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ( ইউপিডিএফ), পিসিজেএসএস (সংস্কার), ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক), মগ পার্টি। সদ্য আত্মপ্রকাশ করা কেএনএফ’সহ পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত সংগঠনের সংখ্যা দাঁড়ালো সর্বমোট ৬ টিতে।

কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সক্রিয় সশস্ত্র ক্যাডারও গড়ে তুলেছে। তাদের সশস্ত্র সংগঠনের নাম কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মী। সম্প্রতি স্বনামে ফেইসবুক সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্য পেইজ খুলে নিজেদের স্বদম্ভ উপস্থিতি জানান দিয়েছে। রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাইছড়ি, বিলাইছড়ি উপজেলা এবং বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলিকদম উপজেলাসহ সর্বমোট নয়টি উপজেলা নিয়ে কেএনএফ’র স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের একটি মানচিত্র প্রকাশ করছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্তে নেমতেই কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মী বিষয়ক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।

একাধিক সূত্র ও সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানা গেছে, পাহাড়ে বসবাসরত বম, পাংখুয়া, লুসাই, খুমি, ম্রো ও খিয়াং হলো কথিত এই কুকি-চিন জনগোষ্ঠী। পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীও এরা । শিক্ষা-দীক্ষার ক্ষেত্রে অনগ্রসর হলেও নিকট অতীতে তারা শান্তিপ্রিয় জনগোষ্ঠী হিসেবেই সমধিক পরিচিত ছিলো। তারাই গড়ে তুলেছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। তদের দাবি পাহাড়ের সন্ত্রাসী দলগুলো তাদের এলাকা ব্যবহার করে অবলিলায় চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুমসহ নানা অপরাধ করছে।
সরকার তাদেরকে শায়ত্ব শাসন দিলে, তাদের অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নিশ্চয়তার কথাও ব্যাক্ত করছে তারা। পার্বত্যাঞ্চলের কুকি-চিন জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে হাতে অঙ্কিত মানচিত্রা প্রদর্শন করছে। তাদের দাবি পূর্ণ স্ব শাসনের ব্যবস্হা প্রদানের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ অঞ্চল সৃষ্টি করা সম্ভব। কিন্তু তাদের পতাকা তৈরির কারণে উদ্দেশ্য এবং বক্তব্যে বিস্তর ফারাক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্তমানে ভারতের মিজোরাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে এ সংগঠনের সশস্ত্র ও নিরস্ত্র সক্রিয় সদস্য সংখ্যা রয়েছে কমবেশি ৪ হাজার। এই কেএনএফ তাদের সশস্ত্র শাখার কার্যক্রম কয়েক বছর ধরে অতিগোপনীয়তার সাথে পরিচালনা করে আসছে। পরবর্তীতে ভারতের মনিপুর রাজ্যের এবং বার্মার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে সক্ষম হয়। গোপন আঁতাত করে কয়েক শত সদস্যকে মনিপুর রাজ্যে সামরিক প্রশিক্ষণে পাঠায়। একইভাবে শতাধিক সক্রিয় সদস্য কাচিন, কারেন প্রদেশ এবং মনিপুর রাজ্য থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। সশস্ত্র শাখার ক্যাডারগণ ২০১৯ সালে ইনফেন্ট্রি কমান্ডো প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছে মর্মে গোয়েন্দা রিপোর্ট রয়েছে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ৬টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলে খ্রিস্টান বাফার রাষ্ট্র তৈরীর জন্য নতুনভাবে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে এমন অভিমত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক একাধিক বিশ্লেষক’র।

পার্বত্যাঞ্চলের ৯টি উপজেলা নিয়ে কেএনএফ’র অংকিত মানচিত্রের সীমানায় পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত একটি পৃথক রাজ্যের দাবিতে সংগঠনটি ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠা করে। ২০১৭ সালে সশস্ত্র শাখায় রূপ নেয়। কিন্তু প্রকাশ্যে আসে অতিসম্প্রতি। অথচ সংগঠনটি প্রাথমিক পর্যায়ে কে.এন.ডি.ও নামে একটি সেবা মূলক এনজিও’র খোলসে যাত্রা শুরু করে। দেশের এক-দশমাংশ এলাকা নিয়েই পার্বত্য চট্টগ্রাম। এই অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে বৈচিত্র্য রয়েছে। বর্তমানে বিভাজিত হলেও তৎকালীন ব্রিটিশ প্রশাসনের রেকর্ডসমূহে ৬টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টীর মানুষ কুকি বা কুকি-চিন নামে অধিক পরিচিত। ১৮শ শতাব্দীর শেষ দিকে কুকি জনগোষ্ঠীর ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম অশান্ত হয়ে উঠেছিলো। ব্রিটিশ রাজের বিভিন্ন স্থান ও স্বার্থে উপর কুকি-চিন বাহিনীর দূর্ধর্ষ আক্রমণ শুরুর প্রেক্ষিতে ১৮৬০ সালে চট্টগ্রাম জেলা থেকে বিভক্ত হয়ে গড়ে ওঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম। কিন্তু কালে কালে বেলা গেলেও তাদের অবস্থার কোনই উন্নয়ন হয় না। পক্ষান্তরে অন্য নৃ-গোষ্ঠী সুবিধা লাভ করে আর কুকি-চিন জনগোষ্ঠী পিছিয়ে যায়। উপ-মহাদেশ থেকে ব্রিটিশ বিদায় হয়। ৭১সালে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে স্বাধীনতার লাল সূসূর্য ছিনিয়ে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। দেশ স্বাধীনের ৫১বছর পরে এসে কুকি-চিন জনগোষ্ঠী তাদের বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করছে। তবে তাদের বঞ্চনার মূলে সরকার নয়, স্থানীয় বেহৎ ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ। বর্তমানে তাই তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের ৯টি উপজেলা নিয়ে ‘কুকি-চিন স্ট্যাট’ বা ‘কুকি-চিন রাজ্য’ নামে পৃথক রাজ্য প্রতিষ্ঠার বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি করছে। এই দাবির সাথে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এবং এর সশস্ত্র শাখা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সরাসরি জড়িত। তাদেরকে পৃথক রাজ্ বা স্বায়ত্বশাসন দিলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাস দমন সম্ভব হতো বলে দাবী, কেএনএফ’র। কেএনএফ’র মতে, দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের পূর্বাঞ্চল তাদের পূর্ব-পুরুষদের অঞ্চল বা আদিম নিবাস ছিল। কালক্রমে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীরা পাহাড়াঞ্চলে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে তাদের পূর্ব-পুরুষদের ভূমি জবরদখল করে নেয়। যে কারনে অনেকে ক্ষয়ক্ষতি সম্মুখীন অথবা ভয়ে দেশ ছেড়ে চিন,ভারত ও মায়ানমারে আশ্রয় গ্রহন করে।

এখানে টিকে থাকা সামান্য অংশ আজ সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে এমন দাবি করেছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। তবে সত্যতা নিশ্চিতে তাদের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ সেক্রেটারী হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের গণমানুষ সব সময় শান্তির পক্ষে এবং এখানে বসবাসরত পাহাড়ি-বাঙ্গালী ঐক্যবদ্ধ। পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা খুবই জরুরী।

পাহাড়ের নতুন সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সক্রিয় সশস্ত্র গ্রুপ কুকি-চিন আর্মী’র উত্থান বিষয়ে রাঙামাটি পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন এ প্রতিনিধিকে বলেন, ”সোস্যাল মিডিয়া নির্ভর প্রচারনা ছাড়া আর কিছুই দেখছি না। তারপরও আমরা সংগঠনটির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।” #

116 Views

আরও পড়ুন

নওগাঁর পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী সেবা প্রদানের জন্য এ্যামবুলেন্স প্রদান

র‍্যাবের ২৪ ঘন্টা অভিযানে ধর্ষন মামলার আসামী সেলিম গ্রেফতার

নকলায় পৃথক ঘটনায় দুই জনের মৃত্য

কক্সবাজারের রামুতে ছুরিকাঘাতে নিহত কৃষকলীগ নেতা নাজেম হত্যাকান্ডের ঘটনায় আটক ২

গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স’র কর্ণধার নূর মোহাম্মদ গ্রেপ্তার

চকরিয়ার নবাগত সহকারী কমিশনার ভূমি এরফান উদ্দিন

চকরিয়া প্রেসক্লাবের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন
সাংবাদিকরাই পারে মানুষের আশার প্রতিফলন করতে- সাংসদ সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম 

“বদর দিবস” এর ইতিহাস, শিক্ষা ও তাৎপর্য

মাইশা আক্তার নিশিলার কবিতা “আসক্ত মেঘকণ্যা”

বোয়ালখালীর ৬টি দুস্থ পরিবারে এম এ হাশেম ফাউন্ডেশনের ঘর হস্তান্তর

” আনজুমনে নওজোয়ান ” বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসা শাখার অনুমোদন

শান্তিগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত