মাসুদুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার –
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বসার আসন কম সহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার অভিযোগে অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। গতকাল শনিবার ২৬ মার্চ বেলা সাড়ে ৮টায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন এর নেতৃত্বে অনুষ্ঠান বর্জন করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে চলে যায় প্রায় ৪ শতাধিক বীরমুক্তিযোদ্ধাগন। এসময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে কলেজ মাঠে শারীরিক ডিসপ্লে করতে আসা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে পড়ে।এ নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় সারা উপজেলা জুড়ে শুরু হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা এবং সাবেক জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর যুগ্ম সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হযরত আলী,থানার অফিসার ইনচার্জ মীর রকিবুল ইসলাম,সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজকে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ডা: মুরাদ হাসান এমপি সাথে নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে বৈঠক করে ২ ঘন্টা পর অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুক্তিযোদ্ধারা।
বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলোতে মুক্তিযোদ্ধাদের বসার জায়গা সংকটসহ নানা অব্যবস্থাপনা দেখা যায়। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ ছিল। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সরিষাবাড়ী কলেজ মাঠে আয়োজিত উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানে গিয়ে তারা আগের মতোই অব্যবস্থাপনা দেখতে পান। এর প্রতিবাদে তারা অনুষ্ঠান বর্জন করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসা ক্ষমা প্রার্থনা করলে ১০.৪৪ মিনিটে মুক্তিযোদ্ধারা অনুষ্ঠানে ফিরে আসেন।
জানতে চাইলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ২ বারের নির্বাচিত সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন জানান, এর আগের বারও অব্যবস্থা ছিল। এবারো আরো বেশি অব্যবস্থাপনা থাকায় আর সহ্য হয়নি। এর আগের ইউওন মুক্তিযোদ্ধাদের খুব যত্নসহকারে সব কিছুই ব্যবস্থা করে রাখত। তিনি নিজেদের কাজ কর্ম খুবই গুরুত্ব দেয় শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়টি এডিয়ে যায়। তার দায়িত্বের অবহেলা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা ভুল স্বীকার করলে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ প্রশাসনের রাষ্ট্রীয় কর্মসুচী যোগ দেন। তবে ইউওন’র অফিসে আমরা সরাসরি প্রবেশ করলেও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা কিংবা গ্রামাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা তার সাথে সরাসরি গিয়ে কথা বলতে পারে না। কারণ তিনি গেটে আনসার পুলিশ দাড় করিয়ে রাখে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রশাসক উপমা ফারিসা বলেন, গতকাল মুক্তিযোদ্ধারা মাঠ থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। ওনাদের বক্তব্য ওনারা বসার জায়গা পান নাই। আমাদের ওখানে পর্যাপ্ত চেয়ারের ব্যবস্থা ছিলো। ওনারা চেয়ার পায়নি কাউকে জানায়নি। হঠাৎ করেই চিৎকার চেচামি শুরু করে ছিলেন। পরে চলে গিয়েছিল। ওনারা কেন করেছে এটা জানিনা। অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা কিংবা গ্রামাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা তার সাথে গিয়ে কথা বলতে পারে না বলে প্রশ্ন করা হলে তিনি এটা মিথ্যা তথ্য বলে দাবী করেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে বার বার কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কথা হলে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শফিকুর রেজা বিশ্বাস বলেন, আমি অবগত না। আমি খোজ খবর নিয়ে জানি, তারপর ব্যবস্থা নিব।
২৭ মার্চ দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমানকে মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নেই। দেখি আমি এখনই কল দিচ্ছি খোজ খবর নিচ্ছি।