জাবি সংবাদদাতা
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ছাত্র,সম্প্রতি বিশ্বের ২% গবেষকদের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
আমেরিকার স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি সাইটেশন অর্জনকারী গবেষকদের ২% -এর একটি তালিকা ২০১৯ সালে সর্বপ্রথম PLOS Biology জার্নালে প্রকাশ করে। এই র্যাংকিং এ ১৯৬০ সাল থেকে প্রকাশিত গবেষকদের মোট প্রকাশিত নিবন্ধ সংখ্যা, এইচ-ইন্ডেক্স, সাইটেশন ও অন্যান্য সূচকের মাধ্যমে করা হয়।
বিশ্বের মোট ৬০ লক্ষেরও অধিক গবেষকদের মধ্য থেকে এই তালিকা প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই র্যাংকিংয়ে স্কোপাস ইন্ডেক্স আর্টিকেলকে ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। তাদের র্যাংকিং ২০২১ অগাস্ট মাসে হালনাগাদ করে প্রকাশিত করা হয়। সেখানে ১৯৬০ থেকে ২০২০ সালের প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সাইটেশন সংখ্যার ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে মোট ৪০ জন গবেষক সেই তালিকায় স্থান পান। (প্রথম হিসেবে আছেন আইসিডিডিআর,বি-র বিজ্ঞানী মোহাম্মফ ইউনুস, এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন)। শুধুমাত্র ২০২০ সালের র্যাংকিংয়ের তালিকায় বাংলাদেশ থেকে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন -সহ মোট ৯৭ জন গবেষকের নাম স্থান পেয়েছে। অধিকন্তু, মনোরোগবিদ্যায় তার র্যাংকিং বিশ্বে ৫১২ !
মোহাম্মদ মামুনের জন্ম কুড়িগ্রাম জেলায়, সেখানেই স্কুল ও কলেজ শেষ করে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগে। কিন্তু, গবেষণার প্রতি অত্যন্ত অনুরাগী মামুন, পরের বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগে ভর্তি হন। মামুন জানান, ‘এই বিভাগে আসার সিদ্ধান্ত আমার জীবনে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত ছিলো। আজকের এই সফলতা অর্জন জাবিতে না আসলে কখনই কল্পনা করতেও পারতাম না।’ এবং এই অর্জন প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘নিশ্চয়ই বিশ্বের ২% গবেষকদের তালিকায় আসার অর্জন অনেক সম্মানের। আর এই তালিকায় আমার নাম দেখতে পারাটা সৌভাগ্যও বটে।’
মোহাম্মদ মামুন ২০১৭ সালে পাবলিক হেলথ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ‘চিন্তা রিসার্চ বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি দেশী বিদেশী গবেষকদের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি প্রায় একশত নিবন্ধ বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক জার্নালে প্রকাশ করেছেন এবং সেগুলো তিন হাজার বারের বেশি সাইটেশন করা হয়েছে। মামুন গবেষণা করছেন মানসিক স্বাস্থ্য, আত্মহত্যা নিয়ে যা বাংলাদেশে অবহেলিত বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। সাইন্টিফিক বাংলাদেশের তথ্যমতে, প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সংখ্যার ভিত্তিতে গতবছর মামুন বাংলাদেশী গবেষকদের মাঝে ৫ম র্যাংকিং এ স্থান করেন । গবেষণার পাশাপাশি, তিনি নতুন গবেষকদের জন্য কিছু মেন্টরিং-ট্রেইনিং প্রোগ্রাম করে যাচ্ছেন। তার গবেষণা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জিজ্ঞাসায় তিনি নিউজভিশনকে জানান, ‘আমার স্বপ্ন হচ্ছে বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের জনস্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। আমাদের টিম নিয়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি, কিন্তু সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে “রিসার্চ ফান্ডিং”। আমাদেরকে সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যদি পৃষ্ঠপোষকতা ও আর্থিক অনুদান দিত, তাহলে আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা অনেক সহজ হত।’
ওউয়াজস জেক্বজধাক্কাহ
মোঃআবু হাসনাত আব্দুল্লাহ/নিউজভিশন