ঢাকামঙ্গলবার , ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  1. সর্বশেষ

গল্প–থট প্রভোকিং!!

প্রতিবেদক
নিউজ ভিশন
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

মুনিরুল আলম মুনির :

এক আবিদ। কখনো নিজের জ্ঞাতসারে কোন কসুর করেন না। আল্লাহ তায়ালার ইবাদাতের ব্যাপারে সদা সতর্ক তিনি।

তার আরও দুজন ভাই আছে।তারাও খুবই আবিদ।তিনি পবিত্র মক্কায় হজ্ব করতে এসেছেন।হজ্বের অন্যান্য কাজগুলো সম্পন্ন করার ফাঁকে পবিত্র কা’বা’র গিলাফ ধরার সৌভাগ্য তার হয়।

সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে তিনি সেখানে দোয়া করা শুরু করলেন।কারণ,এখানে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।তিনি দোয়া করছেন মনভরে।

কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো তিনি শুধু একটি দোয়া-ই ঘুরিয়েফিরিয়ে করছেন।তাহলো ” হে আল্লাহ, তুমি আমাকে মুসলিম না বানিয়ে দুনিয়া থেকে নিও না”।পাশে থাকা কা’বা’র খাদেম বিস্ময়মুখে তাকে জিজ্ঞেস করলেন- আপনি শুধু এই একটি দোয়া কেন করছেন? অথচ এখানে প্রত্যেক দোয়া-ই কবুলের সম্ভাবনা রয়েছে।কিন্তু আর কোন দোয়া আপনি করছেন না কেন?

তখন আবিদ হতচকিতকণ্ঠে জবাব দিলেন-

আমরা তিন ভাই।আমার বড় ভাই প্রায় ৪০ বছর বিনা পারিশ্রমিকে আযান দিয়েছেন শুধু আল্লাহর জন্য। কিন্তু মৃত্যুর সময় তিনি কুরআন হাতে নিয়ে বললো- এ কুরআনে যা আছে আমি সব অস্বীকার করলাম!
আমার দ্বিতীয় ভাইটিও প্রায় ৩০ বছর বিনা পারিশ্রমিকে শুধু আল্লাহর জন্য আযান দিয়েছেন।কিন্তু দূর্ভাগ্য,তারও একই অবস্থা হয়েছে!

এখন আমারও ভয় হচ্ছে যে,আল্লাহ আমাকেও শেষ পর্যন্ত কোন তাদের মত বেঈমান করে নিয়ে যাবেন কিনা! তাই অন্তত শুধু মুসলিম না করে দুনিয়া থেকে যেন বিদায় না দেন- সে দোয়া করছি।আহারে!কখন যে পথভ্রষ্ট হয়ে যাই! তাই সর্বদা হেদায়াত ও অবিচলতার দোয়া করা উচিত সবার।

খাদেম সাহেব আরও হতভম্ভ হয়ে জিজ্ঞেস করলেন-তারা এত বড় আবিদ হওয়া সত্তেও তাদের এ অবস্থা হওয়ার কারণ কি হতে পারে?
আবিদ বললেন-আমার জানামতে তাদের একটি বদ অভ্যাস ছিল।তা হলো তারা যখন মসজিদের ছাদে মিনারে আযান দিতে উঠতেন তখন তারা আশপাশের ঘরে থাকা,পুকুরে গোসল করা মহিলাদের দিকে কুনজর দিত,উলঙ্গ শরীরের দিকে তাকিয়ে বিষময় স্বাদ উপভোগ করতো।সম্ভবত একারণে এ অবস্থা!

ঈশ!কি করুণ এ দৃশ্য! আমরা প্রতিনিয়তই চোখ দিয়ে কত পাপ আর ব্যভিচার করে চলেছি খেয়াল করছি কি?ছাদে কিংবা রাস্তায় সবদিকে শুধু চক্ষুতীর নিক্ষেপ করে চলেছি।পাপের কোন অনুভূতি আছে কি? আল্লাহ পাক বলছেন-
يَعْلَمُ خَآٮِٕنَةَ الْاَعْيُنِ وَمَا تُخْفِى الصُّدُوْر
অর্থ:আল্লাহ চোখের খেয়ানতও জানেন এবং এ খেয়ানতের ফলে মনে কি(ভাবনা) উদয় হয় তাও তিনি জানেন! (গাফির 40:19)

সুতরাং আসুন, আমরা চোখসহ শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে হেফাজত করার চেষ্টা করি,ফলে মনও হেফাজতে থাকবে।কারণ,কিয়ামতের দিন শরীরের প্রতিটি অঙ্গ তাদের দ্বারা কৃতকর্ম আল্লাহর নির্দেশে সব খুলে খুলে বলে দেবে!
————
লেখক-
শিক্ষার্থী-চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

155 Views

আরও পড়ুন