ঢাকামঙ্গলবার , ১৬ এপ্রিল ২০২৪
  1. সর্বশেষ

কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি নাকি BCS ফ্যাকাল্টি!

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২:০৬ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

—————–
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় এর রয়েছে এক সুদীর্ঘ, সুবিশাল আর গৌরবময় ইতিহাস। আর সেই ইতিহাসের এক বিরাট অংশ ধরে রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে যেমনিভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জড়িত তেমনি জড়িত কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারও। ১৯২১ সালে ১ জুলাই অর্থাৎ জন্মলগ্ন থেকেই যত শিক্ষার্থী এখানে পড়াশুনা করে পাশ করে বের হয়েছেন সবার অম্লান আর অমলিন স্মৃতিবিজড়িত এই গ্রন্থাগার। প্রতিদিন প্রতিটি মুহূর্তে হাজারো শিক্ষার্থীদের ভিড়ে, তাদের পদচারণায় মুখরিত থাকে এই গ্রন্থাগার। বর্তমানে এখানে প্রায় ৩ লাখ ১৮ হাজার ৭৪টি বই, ৪১ হাজার ৪৮৩টি সাময়িকী ও জার্নাল রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, হাজারো বন্ধন আর প্রাণের মিলনমেলা এই গ্রন্থাগার তার নিজস্ব রূপ হারাচ্ছে দিনদিন। কর্তৃপক্ষের কিছু ভুল সিদ্ধান্ত এবং পরিকল্পনা নষ্ট করে দিচ্ছে গ্রন্থাগারের পরিবেশ। সৃষ্টি হচ্ছে এক হিজিবিজি আর হ-য-ব-র-ল অবস্থা। নানা সমস্যায় জর্জরিত এই গ্রন্থাগার। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নেই সংস্কার। নেই কোনো নতুনত্ব। বরং দিনদিন যেন এর সমস্যা বেড়েই চলেছে।

শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়তই ভূগছেন আসন সংকটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসের তথ্য মতে, ২০১৩-১৪ সেশন পর্যন্ত বর্তমানে ১৩টি অনুষদের আওতাভুক্ত ৭০টি বিভাগে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশি। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীটটিতে উত্তরোত্তর বিভাগ ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বাড়ছে না লাইব্রেবির আসন সংখ্যা। কাটছে না ছিট-সংকট। ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে তাদের পড়াশুনার জন্য লাইব্রেরি রয়েছে মাত্র একটি। যার আসন সংখ্যা মাত্র ৬৬০টি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতিদিন ভোর ৬টার দিকে ঘুম থেকে উঠে প্রস্তুতি নিতে হয় লাইব্রেরিতে যাওয়ার জন্য। কারণ সাড়ে ৭টার পর ঢুকলে আর সিট পাওয়া যায় না। তার আগেই লাইনে দাঁড়াতে হয়। তীব্র শীতের সকালেও শিক্ষার্থীদের লাইনে দিতে কোনো আলস্য নেই যেন। লাইব্রেরি থেকে প্রতিদিন লাইন ডাকসু অথবা কলা অনুষদ ছাড়িয়ে যায়। এই সীমিত আসনের অনেক আসনই আবার ব্যবহারের অনুপযুক্ত। যার কারণে লাইব্রেরিতে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদেরকে পরতে হয় ভীষণ সমস্যায়।

এ ব্যাপারে গ্রন্থাগারিক বলেন, আসন-সংকট রয়েছে এটা ঠিক। ৬৬০টি সিটে থাকলেও সেখানে ১২০০ শিক্ষার্থী বসতে পারে। এভাবেই ছিটগুলো তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রতি আমরা আরো ১৫০টি আসন বাড়িয়েছি। ভবিষ্যতে আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

লাইব্রেরিতে প্রবেশে নেই কোনো চেকিংয়ের ব্যবস্থা। যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন, এমন অনেকে ঢুকে পড়ে গ্রন্থাগারে। যার ফলে আসন-সংকট আরো তীব্র হয়। এত সংগ্রাম করে আসন পাওয়ার পরও থাকতে হয় দুঃশ্চিন্তায়। জরুরি প্রয়োজনে ছিট থেকে উঠলেই যে ছিট না পাওয়া আরেকজন এসে দখল করে নেন। আবার অনেকে লাইব্রেরিতে না আসা বন্ধুটির জন্যও আলাদা একটি আসন দখল করে রাখেন তার আসার অপেক্ষায়।

এ ব্যাপারে গ্রন্থাগারিক বলেন, লাইব্রেরিতে বাইরের লোক আসে ঠিক আছে। অনেকে তাদের বন্ধুদের নিয়ে আসে। যার কারণে এ সমস্যা হয়। আমরা মাঝে মাঝে আইডি কার্ড দেখি। তবে এটা নিয়মিত করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

লাইব্রেরির পাশে বসে আড্ডা দেয় ক্যাম্পাসে আসা অন্য শিক্ষার্থীরা। তাদের উচ্চ আওয়াজে অনেক সময় পড়তে হয় বিপাকে। চরমভাবে নষ্ট হয় পড়ার মনঃসংযোগ। লাইব্রেরিতে আওয়াজ করে কথা বলা, গল্প করা, ফোনালাপ করা, আওয়াজ করে চেয়ার টানাটানি নিষিদ্ধ থাকলেও এসবের নেই কোনো কার্যকারিতা। এ ছাড়া গ্রন্থাগারে সবাই যে আবার পড়তে আসে তাও কিন্তু না। অনেকেই দল বেঁধে লাইব্রেরিতে এসে পড়াশোনার বদলে গল্পই বেশি করে। কেউবা প্রাইভেট পড়ানোর কাজটিও সেরে ফেলেন এই গ্রন্থাগারে বসেই! আবার কাউকে আসন দখল করে রাখতে দেখা যায় অন্য কারোর জন্য। অনেকে আবার লাইব্রেরিকেই বানিয়ে ফেলেন ডেটিং রুম। পড়ার আসনে বসে আওয়াজ করে ফোনে কথা বলা, পাশের ছিটমেটর সঙ্গে বসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার ফলে অন্যের পড়ায় ব্যঘাত ঘটে। অন্যদিকে পাশের রাস্তার যানবাহনের আওয়াজ তো আছেই।অচিরেই মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ শেষ হলে তখন ঝনঝনানিতে পড়ালেখার পরিবেশ আরো নষ্ট হবে। তবে কর্তৃপক্ষ বরাবরই এসব ব্যাপারে উদাসীন।

এ ব্যাপারে গ্রন্থাগারিক বলেন, প্রগতিশীল সংগঠনগুলো মিছিল শেষে সমাবেশ করে চলে যায়। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে আসা শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরির পাশে বসে নিজেদের গল্প করে। এ বিষয়ে অভিযোগ আসেনি। এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে কথা বললে সামগ্রিক সমস্যাগুলো স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী রয়েছে, সে তুলনায় আসলে লাইব্রেরিতে আসন দেওয়া সম্ভব নয়। প্রথমে এটি মাত্র ৭ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বর্তমানে ৪০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। বাজেট না থাকায় নতুন করে লাইব্রেরিও স্থাপন করা যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর বই কেনা যায়নি। এটা কোনোক্রমেই ঠিক হয়নি। তবে বরাদ্দকৃত অর্থ জমা রয়েছে। এ অর্থ দিয়ে বই কেনা যাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী ও বই অনুপাত করলে বিশাল একটা গ্যাপ রয়েছে। যেহেতু লাইব্রেরিতে আর আসন বাড়ানো সম্ভব নয়, তাই আমরা ইন্টারনেট লাইব্রেরি চালু করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই লাইব্রেরির বইগুলো পড়তে পারবে।’

সামনে ৪১তম বিসিএস। রয়েছে একাধিক ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা। এসব পরীক্ষাকে সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। যেন তিল ধারনের ঠাই নেই। সবাই নীরব জ্ঞানচর্চা করে যাচ্ছে। তাদের একটাই লক্ষ মর্যাদার একটি চাকরি । সরকারী চাকরিতে আগের তুলনায় বেতনসহ সুযোগ বাড়ায় ছাত্র-ছাত্রীরা মর্যাদার এ চাকরির দিকেই ঝুকছে। কেউ কেউ ব্যাংকের কর্পোরেট জীবনকে বেছে নিচ্ছে ক্যারিয়ার হিসেবে। এই লক্ষ্য সামনে রেখে সকাল ৮.০০ টার দিকে লাইব্রেরী খুললেও শিক্ষার্থীরা তার আগেই এসে লাইনে দাঁড়ায়।

চাকরির পরীক্ষার মত গ্রন্থাগারের সিট পেতেও রীতিমত সংগ্রাম করতে হয় শিক্ষার্থীদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার খোলার অনেক আগেই লম্বা লাইন পরে যায় গেটে। কোনো কোনো সময় এ লাইন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ পেরিয়ে মধুর কেন্টিন পর্যন্ত পার হয়ে যায়। লাইব্রেরিতে সিট পাওয়ার এই সংগ্রাম হাসি মুখে মেনে নিচ্ছে একটি চাকরি পাওয়ার আশায়। চাকরি নামের সোনার হরিন পেলে সব দু:খ-কষ্ট দূর হয়ে যাবে।

গ্রন্থাগারে ভিড় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারিক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড.এস এম জাবেদ আহমেদ একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ালেখার দিকে ঝুঁকছে, এটি সত্যিই প্রশংসনীয়। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে পড়ালেখার বিকল্প নেই। লাইব্রেরী যদি বন্ধ করা হয় এবং মানুষ যদি পড়ালেখা ছেড়ে দেয় তাহলে কোন জাতিই সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে না ।

বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাষ্টার্সের ছাত্র মোহাম্মদ মিজান উদ্দিন বলেন, বিসিএস যেহেতু বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে সম্মানের চাকরি তাই পরীক্ষার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। এছাড়া বেশ কয়েকটি ব্যাংকে যেহেতু পরীক্ষা রয়েছে সবমিলিয়ে সবকিছুর প্রস্তুতি নিতেই লাইব্রেরীতে আসা ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগের ছাত্র শফিক আহমেদের কাছে লাইব্রেরীতে পড়তে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন-রুমে পড়লে অলসতা চলে আসে। এছাড়া রুমে পড়ার পরিবেশ না থাকায় লাইব্রেরীতে আসি । এখানে অন্যদের পড়তে দেখলে আমারও পড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়।

অবকাঠামো সম্প্রসারণ না হলেও অনলাইন রিসোর্স বেড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির। লাইব্রেরিয়ান জানিয়েছেন, বর্তমানে সদস্যরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি এবং যেকোন স্থান থেকে অনলাইনে বই ও সাময়িকী পড়তে পারেন। ৩০ হাজার দুষ্প্রাপ্য পান্ডুলিপির ডিজিটাইজেশন করার কথাও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশে যেসব গ্রন্থাগার রয়েছে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বই আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে। বইয়ের পাশাপাশি ১৪-১৫ শতকের দুষ্প্রাপ্য পান্ডুলিপি আছে এ লাইব্রেরিতে। পান্ডুলিপিগুলো আধুনিক স্ক্যানার দিয়ে ডিজিটাইজেশনের কাজও চলছে।

তবে গ্রন্থাগারের অবকাঠামো সংকটের অভিযোগ স্বীকার করলেও লাইব্রেরিয়ান জানিয়েছেন, তারা ছাপানো জার্নালের চেয়ে অনলাইন জার্নাল কিনছেন বেশি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি দুটি সকাল ৮ টায় খুলে রাত ৯ টায় বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার বিকাল ৩ টায় খুলে রাত ৮ টায় বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার সকাল ১০টায় খুলে রাত ৮টায় বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া সরকারি ছুটির দিনে লাইব্রেরিটি পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়। এতে জ্ঞানচর্চা বাধাগ্রস্ত হয়। বই পড়ার জন্যে নিদৃষ্ট কোন সময় থাকা উচিত নয়। বিশেষত ছুটির দিনেই অন্যান্য একাডেমিক কাজ না থাকায় নিরবিছিন্ন পড়াশুনার সুযোগ রয়েছে।

কিন্তু লাইব্রেরিটি বন্ধ থাকায় নিত্যদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের যারাই লাইব্রেরি ব্যবহার করেন তারা পড়াশোনার ক্ষেত্রে লাইব্রেরি ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হন। এজন্য শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরির সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিল। এছাড়া সরকারি ছুটির দিনে বিশেষ ব্যবস্থায় ২৪ ঘন্টা খোলা রাখা, নিরবিচ্ছিন্ন বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা, গ্রন্থাগার এলাকাকে যথা সম্ভব নিরিবিলি ও শব্দ দূষণমুক্ত রাখা, গ্রন্থাগার এলাকায় যেকোন মিটিং মিছিল বা শব্দ উৎপাদন করে এমন যেকোন বস্তুর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, গ্রন্থাগার এলাকা ও গ্রন্থাগারের ভিতরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করা ও নতুন এক্সটেনশন নির্মাণ করে পড়াশোনার জন্য আরো আসন বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়ে আসছিলো।

দিনের শুরুতে লাইব্রেরীতে ঢুকতে শিক্ষার্থীদের এমন আগ্রহ সত্যিই মনোমুগ্ধকর। কি এক আকর্ষণের টানে তারা বাইরে থেকে ভিতরে ঢুকতে লাইনে দাঁড়িয়েছে। বই বিমুখদের কাছে এটা আশ্চর্যের বিষয়ও বটে। শিক্ষার্থীদের যেমন একদিকে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পাঠ চুকানোর তাগাদা। ভালো রেজাল্ট করার আকাঙ্খা। অন্যদিকে রয়েছে নিজেদের মেধা দিয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসনে আসীন হওয়া। দেশের সেবাই আত্মনিয়োগ করা। নিজেদের মেধা আর কর্মনিষ্ঠা নিয়ে দেশের সুনাম ও স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। আর এ সবের জন্য শিক্ষা তথা জ্ঞানার্জনের বিকল্প নেই। আর সেই জ্ঞানার্জনের সবচেয়ে উত্তম মাধ্যমই হলো গ্রন্থাগার। আর সেই জন্য লাইব্রেরী পেরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মন জয় করতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্লোগান ‘শিক্ষাই আলো’। সেই নামের প্রতি সম্মান রেখেই যেন শিক্ষার্থীরা পণ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশ্বময় জ্ঞানের আলোর দ্যুতি ছড়িয়ে দেয়ার। তাইতো শিক্ষার্থীদের বিদ্যা অর্জনের এই স্থানটি পরিণত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

কোথাও নদীর পারে সময়ের বুকে- দাঁড়ায়ে রয়েছে আজো সাবেক কালের এক স্তিমিত প্রাসাদ; দেয়ালে একটি ছবি : বিচারসাপেক্ষভাবে নৃসিংহ উঠেছে; কোথাও মঙ্গল সংঘটন হ’য়ে যাবে অচিরাৎ। আজ এই সময়ের পারে এসে পুনরায় দেখে… আবহমানের ভাঁড় এসেছে গাধার পিঠে চ’ড়ে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের চিত্র যেন আজ জীবনানন্দের সেই কবিতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার চেয়ে বিসিএস কেন্দ্রিক পড়াশোনার মিলনমেলা ঘটাতে দেখা যায়।লাইব্রেরিতে যে বই গুলো রয়েছে সেই বইগুলোর মধ্যে ছুঁয়েছে যে কয়েক বছর হয়েছে এরকম বইয়ের সংখ্যা ও কম নয়।এক কর্মচারীকে জিজ্ঞেস করে জানা গিয়েছে যে, দিনে সর্বোচ্চ ৫০ জন মানুষ পড়ার জন্য বই সংগ্রহ করে। আর অন্যরা সবাই বই নিয়ে আসে।তার মধ্যে অধিকাংশই বিসিএস পরীক্ষার্থী।
বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে যদি গবেষণা না হয় তাহলে গবেষণা হবে কোথায়?!
বিসিএস’ জাতিকে মেধাবী না করে বরঞ্চ আরো মেধাশূন্য করে দিচ্ছে।তাই বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের উচিত, যারা বিসিএস নিয়ে পড়ালেখা করছেন তাদের জন্য আলাদা সুন্দর লাইব্রেরির ব্যবস্থা করা।পাশাপাশি অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আরো নতুন লাইব্রেরি তৈরির জন্য কাজ করা।
—————-
হামিদুর রশিদ জামিল।
আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

241 Views

আরও পড়ুন

চকরিয়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন

শেরপুরে প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা ও তার পরিবারকে হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন

সমগ্র মুসলিম বিশ্ব ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা উদযাপন করবে–খামেনি

নোয়াখালীর দুই নাবিকের মুক্তিতে স্বস্তি পরিবারের মাঝে

প্রেম নিবেদন করে ব্যর্থ হয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ, তরুণ গ্রেপ্তার

শার্শায় প্রশাসনের আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন

নাগরপুরে নাবিক সাব্বিরের মুক্তির খবর শুনে তার পরিবারে খুশির বন্যা বইছে।

নাইক্ষ্যংছড়িতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ পালিত

ঈদসংখ্যার গুরুত্ব কি হারিয়ে যাচ্ছে?

যদুনাথ রি-ইউনিয়ন ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ৫ দিনব্যাপী ক্ষুদ্র কুটির শিল্প ও বৈশাখী মেলার শুভ উদ্বোধন

বৈশাখ নিয়ে স্বপ্ন দেখা মৃৎশিল্পীরা, এখন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রামে