শোক মিছিল
✍️সেঁজুতি মুমু
প্রভাত হতেই চারদিক ঝলমল মার্তন্ডের কিরনে।
কাদম্বিনী ভেসে বেড়াচ্ছে মনের সুখে নীল গগনে।
রৌদ্রের তীব্রতা প্রখর।
তীব্র রৌদ্রতাপে গাত্র দিয়ে ঘাম ঝরছে অঝর।
মাঝে মাঝে মেঘমালার পিছনে লুকাচ্ছে প্রভাকর।
তখন দীপ্তি রত্নচ্ছায়ায় মিলছে কিছুটা স্বস্তি।
কিন্তু প্রকৃতি যেন বারবার ছায়া রুপে দু:খের আভাস দিচ্ছে, হঠাৎ করে হচ্ছে অজানা অস্বস্তি!
কৃষ্ণবর্ণ আর শ্বেতকায় পোশাকে একত্রে মিলেছে মানুষের ভিড়।
শোকের প্রতীক কালো ব্যাজ একে অপরকে পড়িয়ে দিচ্ছে তারা স্মরনে মহাবীর।
শোক মিছিলে একত্রিত হয়ে সামনে ঝুলিয়ে এক ব্যানার, হাতে নিয়ে ফুলগুচ্ছ এগিয়ে চলেছে তারা।
সামনে আলোকচিত্র ধারনে শিল্পী হাতে নিয়েছেন ক্যামেরা।
এক ভাষ্কর্য যাতে অঙ্কিত সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালির ছবি।
তাঁর পবিত্রতা যেন আরও উজ্জ্বল করছেন রবি।
একত্রে মিলিত হয়ে সকলে পুষ্পগুচ্ছ দিয়ে জানালেন শ্রদ্ধাঞ্জলি।
স্মরন করলেন সেই শহীদদের যাঁরা হয়েছেন জঘন্য ষড়যন্ত্রের বলি!
শত শত স্থিরচিত্র ধারন করল যান্ত্রিক লোচনে।
আনুষ্ঠানিকতা শেষ এবার সবাই ফিরবে আপন ভবনে।
হঠাৎ যেন আঁখি আটকে গেল ভাস্কর্যে অংকিত সেই মানুষটির নয়নযুগলে।
যেন নতুন রহস্য যুক্ত হবে ভুগোলে!
বাঙালি জাতির পিতার ভাস্কর্য তাতে যেন এক অক্ষয় প্রতিমা অংকিত।
হঠাৎ পড়ল মনে আজ এই দিবসে কয়েক যুগ আগে স্বপরিবারে মহামানবকে পাপীরা করেছিল হত!
স্রষ্টার শিল্প এক মানব শরীরকে আঠারোটি গুলিতে করেছিল ক্ষত বিক্ষত।
তাদের হাত থেকে রক্ষা পায় নি দশ বছরের শিশু।
তাদের নির্মমতার শিকার হয়ে ধরনীর আলো দেখার আগেই মাতৃগর্ভে শেষ হয়ে গেছিল এক নবাগত যিশু।
শ্রেষ্ঠ বাঙালির মৃতদেহ দেখতে পায়নি তার দুই জীবিত সন্তান।
একদিনে পুরো পরিবারকে হারিয়ে নি:স্ব দুই বোন বিদেশের মাটিতে ডুকরে কেদেছে তবুও শেষবার পারেনি দেখতে আপনজন!
তবে সেই মহামানবের সুযোগ্যা কন্যা হননি ক্ষান্ত।
দীর্ঘ লড়াইয়ে মৃত্যুরমুখ থেকে বারবার ফিরে যুদ্ধে নেমেছেন সেই রণরঙ্গিণী, বৈশিষ্ট্যে অক্লান্ত।
আপন জনের খুনীদের দিয়েছেন উপযুক্ত শাস্তি।
নরকের অনলে দাহ্য হচ্ছে তারা যারা করেছিল পৈশাচিক মস্তি!
মুক্তি পেয়েছে সেই মহামানব সেই শহীদের আত্মা।
সুযোগ্য শাসক, মানবদরদী নেতা, গর্বিত পিতা
আমাদের বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান।
যাঁর নেতৃত্বে বাঙালি ছিনিয়ে এনেছে মাতৃভূমির সম্মান।
তাঁকেই অতি নির্মম ভাবে শেষ করতে রচনা করেছিল কুখ্যাত মোস্তাক চক্রান্ত।
তারা জানে না বঙ্গবন্ধু অমর, চিরজীবী তিনি বাঙালির হৃদয়ে তাঁর কীর্তি চির অম্লান, তিনি বাঙালির অস্তিত্বে চিরদিন রবে জীবন্ত।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০