-------------
"এই অসুখীর রাজ্যে সুখের বড়ই অভাব।
সবাই সুখি হতে চায়, কুলীন থেকে প্রতাপ।"
সুখ একটি আপেক্ষিক বিষয়। আমাদের সুখ-শান্তি আমাদের আক্ষেপের ব্যস্তানুপাতিক। আমরা সবাই সুখী হতে চাই। সুখী হবার জন্য স্বপ্ন দেখি, পরিশ্রম করি।
প্রকৃত সত্যতো এটাই যে,আমরা জন্মগত ভাবেই সুখী। অর্থাৎ, সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সুখী করেই সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আমরা এই জগতের কিছু পরশ্রীকাতরতায় মুগ্ধ হয়ে নিজেকে অসুখী করা প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত।
সুখ বিষয়টি সম্পূর্ণই মনস্তাত্ত্বিক। তবে আমরা যদি সুখকে সংজ্ঞায়িত করার জন্য খুব জোড়াজুড়ি করি তবে হয়তো বিভিন্ন তাত্বিক সংজ্ঞা পাওয়া যাবে। একেক জনের কাছে সুখের সংজ্ঞা একেক রকম। কারো কাছে সুখ মানে- দামি বাড়ি-গাড়ি আর উজ্জল ক্যারিয়ার, করো কাছে সুখ মানে সুন্দরী তরুণী আর মদের গ্লাস। কারো কাছে দুমুঠু খেয়ে পড়ে কেবলই বেঁচে থাকাটাই সুখ। কেউবা নিরেট অলস জীবন-যাপনেই সুখ খুঁজে পান।
সত্যিকার অর্থে সুখ বিষয়টি নির্ভর করে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির উপর। উদাহরণস্বরূপ, কেউ হয়তো সকাল ছয়টা থেকে রাতো বারোটা পর্যন্ত রিক্সা চালিয়ে অথবা গার্মেন্টসে বারো ঘন্টা কাজ করে মাস শেষে আট হাজার টাকা বেতন পেয়ে সুখী আছে। যদিও তার সংসারে অভাব অনটনের শেষ নেই। আবার কারো হয়তো ডুপ্লেক্স বাসার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে আরামদায়ক বিছানায় ঘুম আসছে না। সে নিজেকে অসুখি ভাবছে।
সুখ জিনিসটা প্রাচুর্যের মুখাপেক্ষী নয়। আবার এর মানে এই নয় যে আপনি দরিদ্র হলেই সুখী হতে পারবেন। আসলে জীবন ধারণের জন্য যে পরিমাণ সম্পদ প্রয়োজন তা অর্জন অপরিহার্য।
আপনি তখনই সুখী হবেন, জীবনের স্বাধ পাবেন যখন আপনি জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ হবেন, জীবন আপনাকে যা দিয়েছে তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন। আমাদের জীবনের উচ্চাকাঙ্খা থাকা উচিত। প্রকৃতপক্ষে আশায় মানুষকে বাচিয়ে রাখে। মানুষের জীবনকে উপভোগ্য করে তোলে। তবে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আমাদের উচ্চাকাঙ্খা যেন আমাদের সুখ কেড়ে না নেয়।
জীবনে সুখে হওয়ার ক্ষেত্রে আরেকটি বড় বাধা হলো পরশ্রীকাতরতা। পরশ্রীকাতরতা মানুষের কৃতজ্ঞ হওয়ার স্বভাবকে লোপ করে, আত্মসম্মান বোধকে নষ্ট করে, মানুষকে অন্তঃসারশূন্য করে তোলে। কাজেই সুখে হতে চাইলে কখনো পরশ্রীকাতর হওয়া চলবে না।
---------
সিয়াম আহমেদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
sminforme@gmail.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০