নির্মল এস পলাশ, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি;
কবি বন্দে আলী মিয়া ময়নামতীর চর এই কবিতায় আমাদের চারদিকের মুগ্ধতা ছড়ানো অযত্নে বেড়ে উঠা কচুরীপানা ফুল কবিতায় তুলে এনেছেন। যা সহজ-সরল এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণ । কবিতার রূপায়নে কবি মনের গভীর অনুরাগের পরিচয় পাওয়া যায়।
কচুরীপানার ফুল বেগুনী রঙের কচুরী পানার ফুল-
পানিতে ভাসিয়া চলে হেথা হোথা হয় নাকো দিক ভুল,
সুরসুর করি বায়ু চুপিসারে কয় কথা কানে কানে
শিহরায় তার বোঁটা আর পাতা শিহরায় অভিমানে;
কচুরী পানার ফুল কাজল বরণ লিকলিকে দেহ পিঠভরা এলোচুল। মেঘের মতন মুখ দেখে তার পানির আয়না দিয়া সবুজ বরণ শাড়ীখানি তার রহে তনু জড়াইয়া।
কচুরীপানা ফুল দেখেননি এ রকম মানুষ খুব কমই আছেন। দেশের নদী-জলাশয়ে কচুরীপানার বাস।
কচুরীপানা কবিতার বিষয় হতে পারে ! এই ভাবনা আমরা কয়জন ভেবেছি। কবি বন্দে আলী মিয়া কচুরীপানা নিয়ে সুন্দর অনবদ্য এক কবিতা লিখেছেন।নিপুন নির্মাণ কৌশলে কচুরীপানার ফুলকে কবিতায় ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি।
কবি বলছেন, ‘ বেগুনী রঙের কচুরীপানার ফুল-
পানিতে ভাসিয়া চলে হেথা হোথা হয় নাকো দিক ভুল।’
কুচরীপানার ফুলের সাথে বাতাস কথা বলে কানে কানে।
কবি বন্দে আলী মিয়া কচুরীপানার সবুজ রঙের পাতাকে সবুজ বরণ শাড়ীর সাথে তুলনা করেছেন। এখানেই কবি বন্দে আলী মিয়ার দেখার এবং ছান্দিক কবিতা লেখার এক যাদুকরি।
কমলগঞ্জের উপজেলা চৌহমুনা থেকে শমশেরনগর সড়কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাস ভবনের সীমানা প্রাচীর ঘেঁসেই সড়কের পাশেই নিচু জমিতে বিশাল জায়গা জুড়ে কচুরীপানার সাদা ফুলের চাদরে মোড়িয়ে হয়ে আছে । ব্যস্ত সড়কের পাশে অজস্র সাদা সাদা কচুরিপানা ফুলের বাহার ছেয়ে গেছে যা দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের ভীড় জমে ও অনেকে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন নিজের মোবাইলে। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা জলাশয় থেকে কচুরীপানার ফুল উঠিয়ে খেলা করে।অনেক মেয়েরা খোপায় বাঁধে।
নদীনালা, খাল-বিল আর জলাশয়ে শস্য-শ্যামল সবুজে ভরপুর খাল-বিল, জলাশয় আর বাড়ির পাশের ডোবায় এখন ফুটেছে দৃষ্টি নন্দন কচুরীপানা ফুল। বাংলাদেশের বিল-ঝিলে-হাওর-বাওড়ে বিভিন্ন জাতের বিভিন্ন রঙের ফুল ফুটে থাকে বিভিন্ন ঋতুতে। এসবের মধ্যে কিছু আছে যা আমাদের কাছে সৌন্দর্য বর্ধক, দৃষ্টিনন্দন, উপকারী আর কিছু আছে কোন কাজে আসে না। প্রাকৃতিক সম্পদ কে নিয়মন্ত্রাতিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে সম্পদে পরিনত হয় আবার সঠিক ভাবে কাজে না লাগাতে পারলে জঞ্জালে পরিনত হয়। কচুরীপানা তেমনি একটি বিভিন্ন নদী-নালা-খাল বিল, পুকুর, ডোবায় ও জলাশয়ে ফুটে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কে আরো বাড়িয়ে দেয়। জৈব সার তৈরিতে সাহায্য করে। কচুরীপানা ও তার ফুল জনপ্রিয় না হলেও বিভিন্ন সময়ে মাছ, গবাদিপশুর খাদ্য ও জৈব সার হিসাবে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। আমাদের দেশের কৃষকগন আলু ও পটলসহ বিভিন্ন সবজি চাষে কচুরিপানা ব্যবহার করে থাকে।
এ ফুলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছে মানুষকে।
নদীনালা, খাল-বিল, জলাশয়সহ বাড়ির পাশের ডোবায় এখন ফুটেছে দৃষ্টি নন্দন কচুরীপানা ফুল।
কমলগঞ্জে এই কচুরীপানার দৃষ্টি নন্দন ফুল ফুটে আরো আকর্ষনীয় করে তুলেছে জলাশয়কে ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০