|| রাঙামাটি প্রতিনিধি ||
রাঙামাটির সাজেক ভ্যালীতে আটকে থাকা পর্যটকরা মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ঘরে ফিরে গেছে। চাঁদের হাট খ্যাত মেঘ-পাহাড়ের মিতালীর রাজ্য সাজেকে প্রায় ৭ দিন পর্যন্ত আটকে গিয়ে খাদ্য সংকটের মুখে পড়ে। শুক্রবার পর্যন্ত সব হোটেল মোটেল বন্ধ থাকবে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, পাহাড়ী-বাঙ্গালীর রক্তক্ষয়ী সংঘাত-সংঘর্ষ ও ইউপিডিএফ'র ৭২ ঘন্টার অবরোধ চলার কারণে সাজেকে আটকে থাকা পর্যটকগণ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিরাপদে ফিরে গেছে। তারা সূর্যোদয়- সূর্যাস্ত ও মেঘ-পাহাড়ের মিতালীর মায়া নগর সাজেক ভ্যালীতে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্থানীয় হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট গুলোয় ওঠেন। দেশের অন্যতম প্রধান পর্য়টন এলাকা সাজেক ভ্যালীতে ছুটি পেলেই ছুটে আসে পর্যটকরা আর পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠেএ লাকাটি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
ভ্রমণ পিপাসু কমবেশী আড়াই হাজার পর্যটক ছুটি উপভোগ সমবেত হয় এখানে। ভাগ্য তাদের সুপ্রসন্ন হয়নি। হঠাৎ-ই বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ির দিঘীনালা ও রাঙামাটিতে পাহাড়ী-বাঙ্গালীর সাম্প্রদায়িক সংঘাত সংঘর্ষে পাহাড়ের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে যায়। এমন বেগতিক পরিস্থিতিতে সাজেকে আটকে পড়ে সব পর্যটক। বিনোদন প্রিয় মানুষগুলোর প্রায় ১ সপ্তাহ কাটে চরম উদ্বেগ উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায়। নিরানন্দের তেঁতো স্বাদে নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও উদ্যোগে এদের মধ্য থেকে ৭/৮ শ পর্যটক সাজেক ভ্যালী ছেড়ে গেছে। কিন্তু নারীশিশুসহ ১৬/১৭ শ পর্যটক আটকে আটকে থাকে।
সোমবারও আকাশ পথ ব্যবহার করে বেসরকারী হেলিকপ্টারে ধনাঢ্য পরিবারের স্বল্প সংখ্যক পর্যটক সাজেক ত্যাগ করেছে।
উদ্ভুত পরিস্থিতি ও ইউপিডিএফ'র ৭২ ঘন্টার অবরোধের কারণে আটকে থাকা পর্যটকদের মধ্যে পর্যাপ্ত খাদ্যের যোগান দিতে পারেনি স্থানীয় হোটেল-রেষ্টুরেন্ট, ও রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। পরিবহন যোগাযোগ বন্ধ থাকায় পণ্য সরবরাহও বন্ধ থাকে। যে কারণে একসাথে এতো বিপুল সংখ্যক পর্যটকের খাদ্যের চাহিদা পূরণে হোটেল মোটেলগুলোকে বেগ পেতে হয়। এ অবস্থায় পর্যটকরা বেশী বিড়ম্বনায় পড়েছে শিশুখাদ্য নিয়ে। মাছ-মাংসের যোগান তো ছিলোই না বলা চলে। পাহাড়ের স্থানীয় ভাবে উৎপাদত শাকসবজি ও অপরিচিত খাদ্যাভাসের সাথে সিংহভাগ পর্যটকই অপরিচিত ও অনভ্যস্থ। সেজন্য এক প্রকারের খাদ্য সংকট চলছে বলা যায়। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ইউপিডিএফ'র অবরোধ শেষ হলেও নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় প্রশাসন এতো বিপুল সংখ্যার পর্যটককে বহির্গমণের প্রশাসনের বারণ ছিলো।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় সাজেক ভ্যালী থেকে পর্যটকদের নিরাপদে ফিরে গেছে। যেকোন ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাজেক ভ্যালীতে আগামী শুক্রবারপর্যন্ত ৪ দিনের জন্য হোটেল, মোটেল, রিসোর্টগুলোয় বুকিং বন্ধ ঘোষণা করেছ।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার মিডিয়াকে বলেন, উপজেলা প্রশাসন, নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে বিপুল সংখ্যক পর্যটককে নিরাপদে তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়।
সতর্কতা মূলক আগামী শুক্রবার পর্যন্ত সাজেকে সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতি অনুকূল হলে আবারও চালু করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০