যশোর জেলা প্রতিনিধি :
যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দন্ত চিকিৎসক ডাঃ আবু তাহেরের উপর অনিয়ম ও স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে রুগীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে।
সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে দন্ত চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি স্থানীয় নাভারণ বাজারে গড়ে তুলেছেন ব্যক্তিগত চেম্বার। যেখানে ব্যাপক অর্থের বিনিময়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন তিনি।
সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৬২ সালে নির্মিত হয় এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। উপজেলার ১১ ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও বেনাপোল স্থলবন্দরের প্রায় ৪ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল এটি। ২০১৫ সালের ৩ মার্চ ৩১ শয্যার হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও সেবার মান বাড়েনি। দেওয়া হয়নি চাহিদামতো জনবল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হাসপাতালে ২২টি মেডিকেল কর্মকর্তার পদ থাকলেও খাতা-কলমে রয়েছেন ৭ জন। হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন ৫ জন। বাকি ২ জন অন্যত্র ডিউটিতে থাকেন। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী থাকার কথা ৭৭ জন। সেখানে মাত্র ৩৫ জন কাজ করছেন। ২২ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও আছেন ১০ জন।
এই হাসপাতালে প্রতিদিন তিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। ভর্তি হন ৩৫-৪০ জন। চিকিৎসা দিতে না পারায় বেশিরভাগ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে জেলা হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
তেমনি ভাবে অর্থলোভী দন্ত চিকিৎসক ডাঃ আবু তাহের চিকিৎসা নিতে আসা দন্ত রোগীদের পরিপূর্ণ সেবা না দিয়ে নাম মাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নিজের ব্যক্তিগত ক্লিনিকে আসতে বলেন। কোন রোগী অপারগতা করলে তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তাড়িয়ে দেন।
ডাঃ আবু তাহের নিজ উপজেলা হাসপাতালে কর্মরত থাকায় প্রভাব খাঁটিয়ে রোগীদের অসৌজন্যমূলক আচরন করেন বলে জানা গেছে। শুধু চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগী নয় এই হাসপাতালে দায়িত্বরত সকল চিকিৎসক ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মাহফুজা খাতুনও তার অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে অবগত রয়েছেন বলে জানা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দন্ত রোগীরা জানান, আমরা গরীব মানুষ। অর্থের অভাব থাকায় সরকারি হাসপাতালে আসি। ডাঃ আবু তাহের টাকা খাদক হওয়ায় আমাদের মতো গরীবদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। কোন রকম চিকিৎসা দিয়ে উনার নিজস্ব চেম্বারে আসতে বলেন। সেখানে আসতে না চাইলে অনেক খারাপ আচরণ করেন। স্থানীয় ও সাধারণ রোগীরা জানান তার এলাকায় বাড়ী হওয়ায় লেট করে অফিসে আসা এবং রোগীদের সাথে খারাপ ব্যবহার কওে থাকেন তিনি। ডাঃ আবু তাহের এহেন আচারনের কারনে দূর-দূরান্ত থেকে সেবা নিতে আসা সাধারন রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ আবু তাহের বলেন, আমি রোগীদের সাথে এমন কোন খারাপ আচরণ করিনা। রোগীরা মিথ্যা বলছে।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মাহফুজা খাতুন বলেন, ডাঃ আবু তাহেরের অসৌজন্যমূলক আচরণ সম্পর্কে আমিও কিছুটা জানি। অচিরেই বিষয়টি নিয়ে তার সাথে কথা বলবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০