মোঃ শিবলী সাদিক, রাজশাহী।
রাজশাহী মহানগরী শেষ পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। তার প্রমান মিলল ছিনতাইকালে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রাজশাহী কলেজ ছাত্রের অকাল মৃত্যুর ঘটনায়।
রাজশাহী কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র নিশাদ আকরাম ১৬ সেপ্টেম্বর ভোরের দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন রোগী দেখে হেতেমখায় তার মেসে ফিরছিলেন। এ সময় রাজশাহী বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় যাওয়ার টার্নিং এ তার পথ রোধ করে মাথায় ও শরীরের অন্যান্য স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত করে মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার পর মুমূর্ষ অবস্থায় তার স্বজনরা তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে আজ ভোরের দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহত নিশাদ আকরামের বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার আড্ডা চোরা সমাজপুর গ্রামে।
এর আগে ২০১৯ সালে নগরীর হেতেম খা ছোট মসজিদ এলাকায় ভোরের দিকে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার সময় রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের ছাত্র আসাদির রাব্বি ছিনতাইকারীদের হাতে খুন হন। বিগত পাঁচ বছরে এই দুই ছাত্র খুন ছাড়াও অসংখ্য জখমের ঘটনা ঘটেছে ছিনতাইকারীদের হাতে। ছিনতাইকারীরা কেবল মালামাল ছিনিয়ে নিচ্ছে না আঘাতও করছে। কোন কোন সময় ছাত্রদের অপহরণ করে বিকাশে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আদায় করা হচ্ছে মুক্তিপণ।
ছিনতাইকারীদের উপদ্রবে রাজশাহী মহানগরীতে কেবলমাত্র রাতের বেলাতেই নয়, দিনের বেলাতেও সাধারণ মানুষের চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নারী পথচারী ও রিক্সা আরোহীরা রাস্তায় বের হতে শঙ্কিত।
প্রতিদিন যতগুলো ঘটনা ঘটে সে অনুযায়ী থানায় মামলা হয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মামলা গ্রহণের ব্যাপারে থানার অনাগ্রহের ফলে ভুক্তভোগীরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। পাশাপাশি ধর্তব্য অপরাধে মামলা গ্রহণ না করে জিডিই রুজু করার প্রবণতাও বেড়েছে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আন্তরিক তদারকি, দায়িত্ব বন্টন ও টহল জোরদারে ব্যত্যয় ঘটায় পরিস্থিতি ছিনতাইকারীদের অনুকূলে চলে যাচ্ছে। কোন কোন ফাঁড়ি ও পুলিশ বক্সের ইনচার্জগণ ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাদের নিয়মিত টহলে কিংবা অফিসে তাদের অনুপস্থিত দেখা যায়।
সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোন ঘটনা ঘটলে কনস্টেবলদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ছিনতাই এর ব্যাপারে রাজশাহী মেট্রোপটন পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের কড়াবার্তা থাকলেও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গা ছাড়া ভাব পরিলক্ষিত হয়।