আবু বক্কর ছিদ্দিক,মহেশখালী :
স্থানীয় সুশিল সমাজ ও প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত জমির এবং শ্রমিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন দেশের বৃহত্তর বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্টান কোল-পাওয়ার ও প্রকল্প অর্থায়নকারী সংস্থা জাইকা’র উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা । ২৯ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল সাড়ে ৯ টার সময় কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী মজিদিয়া সুন্নিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার হল রুমে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয় । উক্ত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন , জাইকা’র দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক কর্মকর্তা সহ কোল-পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর কর্মকর্তারা ।
কোল-পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর প্রকল্প পরিচালক গোলাম কিবরিয়া’র সভাপতিত্বে , মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহ । এতে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন , কক্সবাজার জেলা পরিষদের মহিলা সদস্য মাষ্টার মশরফা জন্নাত , মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এস এম আবু হায়দার , সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল হক চৌধুরী রুহুল , সাবেক চেয়ারম্যান কবির আহমদ , একশনএইড এর ম্যানেজার আযাদ আবুল কালাম , ইপসা’র প্রকল্প সমন্বয়কারী এম আজিজ সিকদার , আওয়ামীলীগ নেতা জিয়া উদ্দিন , মাষ্টার নুর বক্স , সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী মোঃ সাহাব উদ্দিন , ৯নং ওয়ার্ড়ের ইউপি সদস্য হামেদ হোছাইন , শ্রমিকদের পক্ষে নুরুল আবছার , মোহাম্মদ আলী প্রমূখ । মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন , মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধীকার ভিত্তিক উন্নয়নের মেঘা প্রকল্প নির্মাণে এতদাঞ্চলের উন্নয়ন তরান্বিত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই । প্রকল্প নির্মাণ করতে গিয়ে জমির মালিক কিংবা শ্রমিকের যে ক্ষতি হবে সে দিকে লক্ষ্য করে তাদের কে যতাযত ক্ষতিপুরন ও পুনর্বাসন সহ শ্রমিকের ন্যায্য মুল্য পরিশোধ করার নির্দেশনা থাকলেও তা কোন ধরনের তোয়াক্কা করছে না বলে অভিযোগ করেন বক্তারা । তারা বলেন , মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ নির্মাণ কাজে ৫ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো মাতারবাড়ীবাসির ন্যায্য মুলক ক্ষতিপুরন পরিশোধ করতে পারেনি কোল-পাওয়ার কর্তৃপক্ষ । প্রকল্পে যে ৪৫টি পরিবার উচ্ছেদ করা হয়েছে তাদের কে ১ বছর পরেই পুনর্বাসন করার কথা বললেও এখনো মাত্র ১০ টি পরিবার কে পুনর্বাসন করা হয়েছে । এতে বাকি ৩৫ টি পরিবারের পুনর্বাসন নিয়ে হতাশায় ভোগছেন তারা । শুধু তাই নয় , প্রকল্পের কাজে মাতারবাড়ীর চতুর্পাশে বেড়ীবাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে যে সমস্ত পানি নিষ্কাশনের স্লুইচগেট ও পলবোট বন্ধ করে দিয়েছে তার পরিবর্তে মাতারবাড়ীর পানি নিষ্কাশনের জন্য কোল-পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর পক্ষ থেকে স্লুইচগেট নির্মাণের কথা থাকলেও সে স্লুইচগেটও তারা এখনো নির্মাণ করে দেয় নি । ফলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বর্ষা মৌসুমে পুরো মাতারবাড়ীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে সিমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় এ দ্বীপবাসি কে । তাই অতি শীঘ্রই পানি নিষ্কাশনের জন্য স্লুইচগেট নির্মাণের দাবী জানান বক্তারা । তারা আরো বলেন , বিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরীরত শ্রমিকদের বেতন বৈষম্য দুর করে শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে হবে । ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও শ্রমিকের চেক নিতে হয়রানী বন্ধ করে আরো দ্রুত কাজের গতি বাড়ানোর আহবান জানান । দ্রুত মাতারবাড়ীর ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধটি টেকসই ভাবে নির্মাণ করে দ্বীপবাসি কে বিপদ মুক্ত করতে আহবান জানিয়ে বক্তারা বলেন , মাতারবাড়ীর এক মাত্র সড়কটি অত্যান্ত ঝুকিঁপূর্ণ ও সরু হওয়ায় প্রায় সময় কোন না কোন জায়গায় ঘটছে দুর্ঘটনা , তার মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যবহারকৃত গাড়ি এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করায় আরো বেশী ঝুকির সম্মুখীন হচ্ছে ইউনিয়নবাসি । তাই কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে যাতায়াতের জন্য বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতেও অনুরোধ জানান বক্তারা । কোল-পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর প্রকল্প পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বলেন , ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও শ্রমিকের অভিযোগ সহ মাতারবাড়ীবাসির যে সমস্ত যুক্তিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে তা শীঘ্রই সে গুলো ধাপে ধাপে পুরণ করার আশ্বাস দেন । মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন , সাংবাদিক এম বশির উল্লাহ , পরিবেশ ও সংবাদকর্মী আবু বক্কর ছিদ্দিক , ৭নং ওয়ার্ড়ের ইউপি সদস্য শাহাদাত হোছাইন নাছির , মহিলা ইউপি সদস্য ছকুনতাছ আতিক , মানবাধিকার কর্মী মৌলানা মোঃ মহসিন , আলী আজগর প্রমূখ । পরে মাতারবাড়ীর ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও জমির মালিকদের মাঝে চেক বিতরণ করেন কোল-পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর কর্তৃপক্ষ ।