কাইমুল ইসলাম ছোটন
[]
আগামী ১৫ জুন মহেশখালীর দুই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ঘিরে প্রচার-প্রচারণা বেড়েই চলছে। প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দরজায় দরজায়। নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানাচ্ছেন। নানা-কৌশলে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা। তবে উৎসব মুখর ভোটের আমেজে মহেশখালীর দুই ইউপি নির্বাচনে সকলের চোখ এখন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া দুই সাংবাদিকদের ঘিরে।
মহেশখালীর বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয় ও সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ গুলো নিয়ে লেখালেখির কারণে তারা সচেতন মহল ও শিক্ষিত যুব সমাজের মন কেড়ে নিয়েছেন। এ হিসেবে তাদের বিশাল একটি ভোট ব্যাংক আছে বলে সর্বত্র তাদের নিয়ে আলোচনার চলছে।
কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে 'ঘোড়া' প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন দৈনিক পূর্বকোণ ও সিপ্লাস টিভি'র মহেশখালী প্রতিনিধি হোবাইব সজিব। অন্যদিকে বড় মহেশখালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে 'আপেল' প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন সি ভয়েজ' এর মহেশখালী প্রতিনিধি ও দৈনিক কক্সবাজার বার্তার স্টাফ রিপোর্টার সিরাজুল মোস্তফা রুবেল। অফলাইনের মতো অনলাইনেও প্রচার প্রচারণায় তারা এগিয়ে রয়েছেন। প্রচারণায় ভিন্ন ধর্মী চমকের কারণে ভোটের মাঠে জীবনে প্রথমবার নেমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন দু'জনেই। জয়ের সম্ভাবনার বিষয়ে তাদের উপেক্ষা করছে না কেউই, তারাও শতভাগ আশাবাদী বলে জানান।
কালারমারছড়া ইউনিয়নের স্থানীয়রা জানান, সাংবাদিক হোবাইব সজিব এলাকার পরিচিত মুখ। দীর্ঘদিন এলাকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে লেখালেখি করে মানুষের মন জয় করেছেন। ইউনিয়নের বৃহত্তর একটি গোষ্ঠীর সন্তান হওয়ায় তার বিশাল একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে। সবাই কাজ করাই ঘোড়া প্রতীকের সমর্থকের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। অন্যান্য প্রার্থীরা বিভিন্নভাবে সমালোচনার মুখ হওয়ার কারণে হোবাইব সজিবের প্রতি মানুষের আস্তা বাড়ছে বলে জানান।
এস.এম রুবেল সম্পর্কে এলাকাবাসী বলেন, বিভিন্ন অনিয়ম ও জনদুর্ভোগ নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি সামাজিক কার্যকলাপের মাধ্যমে মানুষের অনেক উপকার করেছেন। এলাকার যেকোন সমস্যা নিয়ে তার কাছে গেলে সবসময় সহযোগিতা করতেন। একজন প্রতিবাদী ও পরোপকারী সন্তান হিসেবে পরিচিত রুবেলের বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। ১৫ জুন নিরব ভোট বিপ্লব হবে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী আরও বলেন, রুবেলের সাথে লড়াই করা আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছেন। ফলে ওই প্রার্থীর ভোটে ভাটা পড়ছেন। সামাজিক কাজে সক্রিয় থাকা রুবেল তরুণ হওয়ায় পরিবর্তনের জন্য এলাকার যুবসমাজরা তাকে সাড়া দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, কালারমারছড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে লড়াই করছেন ৮ জন এবং বড় মহেশখালী ৯ নং ওয়ার্ডে মেম্বার হিসেবে লড়াই করছেন ৯ জন। ইভিএমে অনুষ্ঠিত নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করতে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাচন অফিসার জানান।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, দুই ইউনিয়নে হেভিওয়েট প্রার্থীদের সাথে তারা লড়াই করছেন। দুই সাংবাদিক ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন প্রতিনিয়ত। তাদের পক্ষে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ছন্দের তালে তালে চলছে মাইকিং। তরুণ হওয়ায় অন্যান্য প্রার্থীদের থেকে ব্যাপক সাড়া পারছেন। তাদের ওঠান বৈঠক ও গণসংযোগে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে। বিভিন্ন অন্যায়-অনিয়ম বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ভোটাররা পরিবর্তনের জন্য তাদেরকে বাছাই করছেন। তরুণদের কোন বিকল্প নেই বলে তারা জানান।
কয়েকজন ভোটার জানান, তারণ্য নির্ভর বাংলাদেশে তরুণদের কোন বিকল্প নেই। তরুণরা পারবেন আগামীর বাংলাদেশ গড়তে। আগামী জনপ্রতিনিধি হিসেবে তারা তরুণদের পক্ষে রায় দিবেন।
কালারমারছড়া ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হোবাইব সজিব তার নির্বাচনী প্রচারণায় বলেন, একসময় কালারমারছড়ায় প্রতিনিধি খুনাখুনি চলতো। সাংবাদিক আকরামের সহযোগিতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে সকল সন্ত্রাসীদের তুলে দিয়েছি। যাতে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। আমি জনসেবায় বিশ্বাসী, মানুষ আমাকে ভালোবেসে বিজয় করবেন বলে আশাবাদী।
বড় মহেশখালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী এস.এম রুবেল তার নির্বাচনী গণসংযোগে বলেন, আমার এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। গ্রাম যেখানে শহর হচ্ছে যেখানে আমাদের সড়কগুলোতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বিচার ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সেবা নিয়ে মানুষ দীর্ঘদিন হয়রানির শিকার হয়েছেন। নির্বাচিত হলে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নসহ শিক্ষার উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন। একটি আধুনিক ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলার জন্য তিনি ভোটারদের ভোট ও সকলের দোয়া চেয়েছেন। ভোটারের ব্যাপক সাড়া পাওয়ার কারণে তিনি বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলে জানান।
নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দুইজন সাংবাদিকই বিচার ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। সমাজ থেকে মাদক, সন্ত্রাস, অন্যায় দূর হবে এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠা হবে বলে জানান। আগামী ১৫ ই জুন বিজয়ী হওয়ার জন্য ভোটারদের ভোট ও সকলের দোয়া চেয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০