মাসুদুর রহমান-
জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বাউসী চন্দনপুর যাওয়ার কাচা রাস্তা বেহাল হওয়ায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ এখন চরমে পৌঁছেছে। গ্রামটি বাউসী বাজারের উত্তর – পূর্ব এবং বাউসী পঞ্চপীর বাজারের দক্ষিন – পূর্ব দিকে অবস্থিত। চন্দনপুর গ্রামে কয়েক হাজার মানুষ বসবাস করে। সাবেক পৌর কমিশনার মৃত মোঃ শামসউদ্দিন ফকিরের বসত বাড়ী এই গ্রামে।
জানা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘদিন পার হলেও এই গ্রামের রাস্তা-ঘাটের তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। এই অবস্থায় কাঁচা রাস্তায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মানুষসহ মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, ভ্যান ও রিকশা চলাচল করছে। এ ছাড়া কেউ অসুস্থ্য হলেও দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার জন্য ওই এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সও যেতে পারে না। নিরুপায় হয়ে রোগীকে হেঁটে কিংবা বাইসাইকেল, ভ্যান, রিকশা দিয়ে যেতে হয় চিকিৎসা কেন্দ্রে। ১৯৯০ সনে পৌরসভা স্থাপিত হওয়ার পরও ৯নং ওয়ার্ডের এই গ্ৰাম পৌরসভার সকল নাগরিক সুযোগ-সবিধা থেকে বঞ্চিত। প্রতিটি এলাকার সর্বপ্রথম চাহিদা এলাকার রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন । কিন্তু এই গ্ৰামের কাচা রাস্তার খুবই বেহাল দশা ।এতটাই বেহাল দশা যে পাশে থাকা পুকুরের পানি দিয়ে রাস্তা ভরপুর। দেখে মনে হয়, এটা রাস্তা নয়, পুকুরেরই অংশ । নিয়মিত তদারকির অভাবে অজ্ঞাতবসত মানুষ রাস্তা দখল করে ফেলছে । ফলে সংর্কীণ রাস্তা দিয়ে বড় কোন যানবাহন চলাচল অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে । যা একটি চরম ভোগান্তি এলাকার বাসীর । বর্ষা মৌসুমে এ ভোগান্তির শেষ নেই ।
এছাড়া দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে গ্রামের রাস্তার নকশাও বদলে গেছে । ফলে অপরিচিত লোকজন গ্ৰামে আসলে দিক হারিয়ে ফেলে ।একদল তরুণ নিজ উদ্যোগে মাঝেমধ্যে রাস্তা মেরামতের কাজ করলেও কিছুদিন পর আবার একই রকম হয়ে যাচ্ছে । এলাকায় নেই কোনো সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,নেই খেলাধুলা করার জন্য খোলা মাঠ। উক্ত পৌর এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং রক্ষায় নেই কোনো পরিকল্পনা,ফলে এলাকার অবশিষ্ট প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এলাকায় নাগরিকগণের পৌরসেবা প্রদানের লক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ইমারত নিয়ন্ত্রণসহ নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে নেই কোনো উদ্যোগ। নাগরিক নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ। উক্ত পৌর এলাকার দারিদ্রতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলাকা ঘুড়ে দেখা গেছে , এই এলাকা বাসীরা বিভিন্ন ফসল আবাদ করে থাকে। কিন্তু রাস্তা বেহাল হওয়ায় এলাকায় ট্রাক, মিনি ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করতে পারে না। তাই উৎপাদিত পণ্য নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্থানীয় কৃষকদের। রিকশা, বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল এই এলাকার পণ্য পরিবহনের একমাত্র বাহন। এজন্য বেড়ে যায় উৎপাদন খরচ। ফলে কষ্ট করে আবাদ ফসল করেও লাভের মুখ দেখতে হিমশিম খেতে হয় কৃষকদের।স্থানীয় কৃষকরা জানান, সড়কটি কাঁচা হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় গর্ত সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। চলাচলের অন্য কোন রাস্তা না থাকায় নিরুপায় হয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
একাধিক শিক্ষার্থী জানান, এই গ্রামের প্রায় এক হাজার ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও উপজেলা প্রশাসন থেকে রাস্তাটি মেরামতের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবে প্রতিফলন হয়নি। রাস্তাটি পাকা করে আমাদের দুর্ভোগ কমাতে বর্তমান সংসদ সদস্য , তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা মুরাদ হাসানের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মোঃ আব্দুল রশিদ এর ছেলে মোঃ মোরাদ হোসেন বলেন , সরিষাবাড়ী পৌরসভা “খ” শ্রেণীভুক্ত হয়ে “ক” শ্রেণীভুক্ত হওয়ার নেপথ্যে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ৯নং ওয়ার্ডের এই গ্রামটির মানুষ ৩০ বছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। কেন এই গ্রামটি পৌরসভার অন্যান্য ওয়ার্ড থেকে পিছিয়ে। এই বৈষম্যের জন্যে কে দায়ী। নির্বাচনের পর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গ্ৰাম পরিদর্শনে এসেছিলেন কিনা আমার সন্দেহ । পৌর মেয়রের কাছে আমাদের আকুল আবেদন অনতিবিলম্বে এলাকার রাস্তা সংস্কারের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্ৰহণ করে বাধিত করবেন।
কথা হলে ওয়ার্ড কমিশনার আব্দুল মালেক বলেন,রাস্তাটি অবস্থা নাজুক হওয়ায় মেয়র সাহেব রাস্তাটি পাকা করনের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে ।