সাফওয়ান আল আজিজ,শহর রিপোর্টার :
কক্সবাজার শহরের প্রবেশদ্বার লিংকরোড দিয়ে শহরের প্রবেশ পথ । এ প্রবেশ পথ দিয়ে শুরু ঝুঁকিপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থার । দীর্ঘদিন এ সড়কের টেকসই উন্নয়ন কাজ না করার কারনে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। এতে যানবাহন চলাচল হচ্ছে ভয়াবহ অসুবিধা। ভোগান্তিতে পড়েছেন যাতায়াতকারী হাজারো মানুষ। ভোগান্তির শিকার মানুষের অভিযোগ, সড়কে ইটের জোড়াতালি দিয়ে দায়সারা নিম্নমানের কাজের জন্য এই অবস্থা সৃষ্টি হয়।
এ সড়কের পিচের বিন্দুমাত্র অস্তিত্ব নেই, রাস্তা জুড়ে খানাখন্দ। কোথাও কোথাও আবার অনেকটা এলাকা নিয়ে গভীর গর্ত হয়ে গিয়ে ডোবার আকার নিয়েছে। কক্সবাজারের জেলার গুরুত্বপূর্ণ সরকারী অফিস , আদালত,স্কুল-কলেজ সহ সকল কিছু শহরের এই সড়কে হওয়ার কারনে ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা দিয়ে মাসের পর মাস যাতায়াত করছে স্কুলের ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে জনসাধারণ।
সাধারণ জনগনের অভিযোগ,রাস্তার এমন দূরাবস্থা সত্ত্বেও প্রশাসনের তরফ থেকে স্থায়ী কোনও উদ্যোগ নেই ।
সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, প্রবেশদ্বার লিংকরোড থেকে পৌরশহর হলিডের মোড় পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকায় জুড়ে সড়কের মধ্যে অনেক ছোট ও বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
মাস খানেক আগে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ইট-পাথর ফেলে গর্ত ভরাট করলেও মাস খানেক পরেই বৃষ্টির কারণে ফের একই অবস্থা সৃষ্টি হয় । পরে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে বার্মিজ মার্কেট এলাকায় ঢালাই দিয়ে সড়কের একাংশের সংস্কার করা হলেও প্রধান সড়ক জুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অনেক গর্ত থেকে যায় । খারাপ রাস্তার কারণে জনসাধারণ চলাচলের অন্যতম মাধ্যম টমটম (অটো) প্রায় চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে । প্রসূতি ও রোগী নিয়ে হাসপাতালে ঝুঁকি নিয়ে পৌঁছতে হচ্ছে ।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, পরিকল্পিত নগরায়নের অংশ হিসেবে কক্সবাজার শহরের ‘হলিডের মোড়-বাজারঘাটা হয়ে লারপাড়া বাসস্ট্যান্ড’ পর্যন্ত প্রধান সড়ক চার লেনে উন্নীত হচ্ছে। শহরের সৌন্দর্য বর্ধন ও যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ২৯৪ কোটি ১৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকায় সড়কটি চার লেন করার প্রকল্প নিয়েছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)।
সূত্র মতে, কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কটি প্রয়োজনের তুলনায় কম প্রশস্ত হওয়ায় যানজট লেগেই থাকছে। এতে সব শ্রেণি পেশার মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে প্রতিদিন। এভাবে বাড়তে থাকা নাগরিক দুর্ভোগ নিরসনে নেয়া প্রকল্পটি একনেকেও অনুমোদন পেয়েছে ।
তবে জনসাধারনের অভিযোগ, যেহেতু রাস্তার যোগাযোগ ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ অস্থায়ী হলেও প্রধান সড়কের রাস্তার গর্ত গুলো ভরাট করা প্রয়োজন। কারণ সড়কে অতিরিক্ত গর্ত ও ভাঙা হওয়ার কারনে বিভিন্ন যানবাহন গর্তে পড়ে বেঁকে যাচ্ছে কিংবা উল্টে যাচ্ছে । পুরো প্রধান সড়ক জুড়ে চারপাশ কাদায় ভরা। যাতায়াতকারীরা নিরাপদ চলাচল টুকুও পাচ্ছে না। অনেকে যানজটের কারণে হেঁটে রাস্তা পার হওয়ার সময় কাদা এসে লাগছে শরীর কিংবা কাপড়ে। পড়ছেন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। এছাড়া প্রধান সড়ক খানাখন্দের জন্য যানবাহনগুলো অত্যন্ত ধীরগতিতে চলাচল করছে। ফলে সড়ক তৈরি হচ্ছে স্বল্প থেকে তীব্র যানজট ।
শহরের বাসিন্দাদের মতে, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের শ্রমিকরা ইট দিয়ে সড়কের কিছু অংশের গর্ত মেরামত করলে ও আবার হঠাৎ বৃষ্টি কিংবা গাড়ির চাকার চাপে সেগুলো নিমিষেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। টমটম গাড়ি চালক কাশেম মিয়া বলেন, বাস টার্মিনাল থেকে শুরু করে পুরো প্রধান সড়কে কাদা ও খানাখন্দের জন্য ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। সরকারি কলেজের ছাত্র হাসান বলেন,আপনারা দেখেন প্রধান সড়কে চলাচলের কোনো পরিবেশ আছে কিনা? এগুলো কর্তৃপক্ষের চোখে পড়ে না।
প্রধান সড়কের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, বৃষ্টিতে কাদা আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলায় আমাদের জীবন আর ব্যবসা শোচনীয়। দু’দিন পরপর ইট দিয়ে লোক দেখানো কাজ করে, সেটা কয়েকদিন পরেই নষ্ট হয়ে যায়। আর ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ ।
তবে শহরের বাসিন্দা দের দাবি, প্রধান সড়কের ভাঙা ও গর্ত গুলো যেন ভরাট করা হয় যাতে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০