হুমায়ুন কবির,পেকুয়া(কক্সবাজার)প্রতিনিধি :
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলায় কৃষি যন্ত্রপাতি ও উপকরণ সংরক্ষণাগার নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্প (জুলাই-২০২০ থেকে জুন-২০২৫) জিওবি’র অধীনে সারাদেশে ৩০০টি উপকরণ সংরক্ষণাগার নির্মাণ হচ্ছে।
এরমধ্যে পেকুয়া উপজেলা কৃষি অফিসের পাশে চলতি বছরের জুন মাসে এক তলা ভবনটির কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে ভবনের প্রায় ৭০ শতাংশ কার শেষ করা হয়েছে।
পেকুয়া উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দফতরের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, কাজের শুরুতে ভবনের নিচে ব্যাচমেন্ট ঢালাইয়েও নিম্নমানের স্থানীয় মাতামুহুরী নদীর কাদা মিশ্রিত বালি, ইটের কংকর ও লোহা ব্যবহার করা হয়েছে। আর ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের সময় নিম্নমানের সিমেন্টের সাথে কাদা মিশ্রিত বালি বেশি ব্যবহার করা হয়েছে। নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে ভবনের ফ্লোরে সিমেন্টের আস্তর দিয়ে লাগানো হয়েছে। অর্ধকোটি টাকারও বেশি বরাদ্দের এ ভবন নির্মাণে ঠিকাদার জসিম উদ্দিন পেকুয়ার পাশ্ববর্তী কুতুবদিয়ার আফাজ উদ্দিন নামের এক রাজমিস্ত্রিকে দিয়ে সাব কন্টাকে মাত্র ৫ লাখ টাকা দিয়ে ভবনটির নির্মাণ কাজ করাচ্ছেন।
চলতি বছরের জুন মাস থেকে ভবনের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকল্প অফিসের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজটি তদারকি ও সরেজমিন পরিদর্শন করেনি। এছাড়া স্থানীয় কৃষি অফিসের কর্মকর্তারাও কাজটি তদারকিতে নেই।
গতকাল ২৯ নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে পেকুয়া উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে উপজেলা কৃষি অফিসের পাশে সরেজমিনে পরিদর্শণ করে দেখা গেছে, কুতুবদিয়ার আফাজ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি কয়েকজন শ্রমিকের মাধ্যমে ভবনের ফ্লোরে ইট বিছানোর সাথে নিম্নমানের বালি দেওয়া হচ্ছে। বিকালে কাজ করলেও তদারকীতে দেখা যায়নি স্থানীয় কৃষি অফিসের কাউকেই।
আফাজ উদ্দিনের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাঙ্গামাটির জসিম সাহেবের কাছ থেকে তিনি ভবনটি তৈরী করে দেওয়ার জন্য ৫ লাখ টাকা কন্টাকে কাজটি নিয়েছেন। ভবন তৈরীর উপকরণ ঠিকাদার সংরবরাহ করছেন। তিনি শুধু ভবন নির্মাণের কাজটি তিনি করে দিচ্ছেন। নিম্নমানের ইট, বালি ও সিমেন্ট কেন ব্যবহার করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিকাদার যে রকম উপকরণ সরবরাহ করেছেন তিনি সেটিই ব্যবহার করে কাজ করেছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, পেকুয়া উপজেলা কৃষি অফিসারের সাথে যোগাসাজশে ঠিকাদার জসিম উদ্দিন সাব কন্টাকে কাজটি নিজের ইচ্ছেমতো অত্যন্ত নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে করাচ্ছেন। এরপরও অনিয়ম বন্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকল্প অফিস।
অনিয়ম প্রসঙ্গে ঠিকাদার জসিম উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যে ভাবে ডিজাইন করে দিয়েছে সে মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে। কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছেনা।
পেকুয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তপন রায় বলেন, ঠিকাদার শিডিউল মোতাবেক কাজ করছে বলে জানি। এর বাইরে আমি কিছু জানিনা।