নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের হাড়িগাতি গ্রামে এক স্কুলশিক্ষিকাকে বেধড়ক মারধর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী রাবেয়া খাতুন হাড়িগাতী (বানিয়াপাড়া) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।
তিনি জানান, “আজ সকালে বাবামায়ের সাথে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে স্থানীয় কতিপয় দুষ্কৃতিকারী আমার স্কুলের পঞ্চমশ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেস্টা করে। আমি তাদেরকে বাধা দিয়ে অবিভাবক হিসেবে অনুরোধ করি যাতে মেয়ে শিক্ষার্থীটিকে তুলে না যায়। তারপর এই দুষ্কৃতিকারীরা আমাদের বেধড়ক মারধর করে। মোবাইল ফোন, টাকা পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার জোর পূর্বক নিয়ে যায়। ”
তিনি আরও বলেন,’ দুষ্কৃতিকারীরা সকলেই একই এলাকার খাজা নাজিমুদ্দিনের অনুসারী। খাজা নাজিমুদ্দিনই এটার ইন্ধনদাতা। মেয়েটির বাবা-মায়ের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে মেয়েটিকে নির্যাতনের উদ্দেশ্যে তুলে নিতে চায়। মেয়েটির পরিবার সম্পুর্ন নিরপরাধ। কেউ যদি অপরাধ করে থাকে তার বিচার আইন অনুযায়ী হবে। নির্যাতন করার অধিকার কারো নাই।
স্বাধীন বাংলাদেশে এইসব নির্যাতন কোনোমতেই কাম্য নয়। আমরা এর বিচার চাই”।
স্কুল শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুন ছাড়াও এঘটনায় বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে ৪ ভর্তি আছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্কুল শিক্ষার্থীকে তুলে নেয়ার সময় বাধা দিতে গেলে শিক্ষার্থীটির মা নাসিমা বেগমকেও মাথা ফাটানো হয়।
নাসিমা বেগম, “আমরা গরীব মানুষ। কিছুদিন পর পর আমাদের এভাবে এসে আমাদের মারধর করে। তারা আমাদেরকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দিতে চায়। আজ বাডিতে আমাদের না পেয়ে আমার সন্তানকে তুলে নিয়ে যেতে চায়। মাস্টারনী এসে বাধা দিলে সবাইরে মারধর করে।
নারী নির্যাতনের এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল। শামীম মিয়া নামে একজন বলেন, খাজা নাজিমুদ্দিনের হুমুক ছাড়া এগ্রামে একটা গাছে পাতা নড়ে না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত খাজা নাজিমুদ্দিন কলমাকান্দা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ভোকেশনালে কর্মরত আছেন। এছাড়া সিধলি কারিগরি মহুয়া বাণিজ্য কলেজের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। হাড়িগাতি গ্রামে তাঁর বিশাল প্রভাব-প্রতিপত্তি। এদিকে খাজা নাজিমুদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি কোনো দুর্নীতি বা খারাপ কাজের সাথে জড়িত না।”
এব্যাপারে কলমাকান্দা থানার ওসি বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারের জন্য তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।