জহুরুল ইসলাম
নীলফামারী প্রতিনিধি
নীলফামারীর ডোমারে আফতাব উদ্দিন সরকারকে প্রধান আসামি করে পুলিশ কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনসহ আরো ৪০ জন অজ্ঞাত আসামি দিয়ে আমলি আদালত মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এ মামলাটি দায়ের করেন বিএনপি নেতা মাসুদ বিন আমিন (সুমন)।
এই দেশে বিএনপি থাকার কোনো অধিকার নাই, তোকে গুলি করে মারব। ক্রস ফায়ার করব, বিএনপি কর্মীদের থাকতে হলে চাঁদা দিয়ে থাকতে হবে। না হলে তাদেরকে মেরে লাশ গুম করব। ঠিক এইভাবে প্রায় ১০ বছর আগে পুলিশের সহায়তায় তৎকালীন ডোমার উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মাসুদ বিন আমিনকে (৪৫) হুমকি প্রদান করেন নীলফামারী-১ আসনের সাবেক সংসদ আফতাব উদ্দিন সরকার।
এ ছাড়া বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের দমনের জন্য হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেন তৎকালীন ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে (৫৫)। এমপি আফতাবের নির্দেশে ২০১৫ সালের ১৪ মার্চ মামলার বাদি মাসুদ বিন আমিনকে ডোমার থেকে রাতের অন্ধকারে তুলে নেয়া হয়।
মামলার প্রধান আসামি ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর কয়েক ঘণ্টাপূর্বে পালিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। দ্বিতীয় আসামি পুলিশ কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন (বিপি নম্বর ৭০৯৮০৬৬৮৮১) বর্তমানে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে পুলিশ অধিদফতর ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, বাদিকে তুলে নিয়ে গিয়ে থানায় অমানুষিক নির্যাতন করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে ক্রসফায়ারের হুমকিদেন ডোমার থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদি বলেন, ২০১৫ সালের ১৪ মার্চ সন্ধ্যায় ডোমার কৃষি ব্যাংক মোড়ে বন্ধুদের নিয়ে চা খাচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ ডোমার থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ প্রায় ৩০-৪০ জন পুলিশ সদস্য আমাদের তিনজনকে তুলে নিয়ে থানায় রাতভর পৈশাচিক নির্যাতন চালায়। পরে আমার পরিবারের সদস্যদের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় দু’টি মিথ্যা মামলায় দিয়ে আদালতে প্রেরণ করে। ২২ দিন কারাভোগের পর আমি জামিনে মুক্তি হই।
আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগটি আমলে নিয়ে ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু সোয়েম সরকার দৈনিক নয়া দিগন্তকে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মহাসিন আলী বলেন, এ সংক্রান্ত মামলার আদেশ পেলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তীতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০