নিজস্ব প্রতিবেদক :
আজ ২৫ মার্চ রোজ, মঙ্গলবার, ঐতিহাসিক কক্সবাজার পাবলিক হল মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা সভাপতি মাওলানা মুহাদ্দিস আমিরুল ইসলাম মীর এর সভাপতিত্বে জেলা সেক্রেটারি প্রভাষক রাশেদ আনোয়ার ও ইফতার মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটি সদস্য সচিব মাওলানা আব্দুল হামিদ আজাদ এর যৌথ সঞ্চালনায় ২৪ এর অভ্যুত্থানে সকল শহীদদের স্মরণে দোয়া ও মাহে রমজানের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্য সাবেক সভাপতি মাওলানা নুরুল বশর আজিজী।
প্রধান অতিথি ওনার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ তাদের সেই অধিকার ফিরে পায়নি। ১৯৭১থেকে আজ পর্যন্ত বাংলার জনগণ শুধুমাত্র ক্ষমতার পালাবদল দেখেছে। যারা ক্ষমতায় গিয়েছে তারাই দেশের মানুষের সামনে মিথ্যা বুলি উড়িয়ে ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার চেষ্টা করেছে। বিগত ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট সরকার সেই স্বাধীনতার কথা বলে মানুষের সকল প্রকার অধিকার হরণ করেছেন। এমন কোন অপকর্ম নেই যা সেই ফ্যাসিস্ট সরকার করেনি। গুম, খুন, লুঠতরাজ টেন্ডারবাজি সন্ত্রাসী ও অর্থ-পাচারসহ সব ধরনের অপরাধের মাধ্যমে দেশকে খাদের কিনারায় নিয়ে গিয়েছিল। সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের কবল থেকে দেশ জাতিকে মুক্ত করতে এদেশের সচেতন ছাত্র জনতা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও আলেম সমাজের সম্মিলিত সংগ্রাম আল্লাহর রহমতে আমাদের এক অবিস্মরণীয় বিজয় উপহার দিয়েছে। ফ্যাসিস্ট তাড়ানোর এই রক্ত ঝরানো সংগ্রামে, চব্বিশের জুলাইয়ের মুক্তির লড়াইয়ে জীবন দিয়েছেন দেড় সহস্রাধিক ছাত্র জনতা ও আলেম উলামারা। তাঁদের এই ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত আজকের বাংলাদেশ কে একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত সমৃদ্ধ ইনসাফপূর্ণ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্যেই পীর সাহেব চরমোনাইয়ের নেতৃত্বে আমরা আমাদের লড়াই কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আরো বলেন:- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তার সকল সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী নিয়ে আন্দোলনের শুরু থেকে দলীয় ব্যানারে মাঠে সক্রিয় ভুমিকায় ছিল। এমনকি প্রতিটা জেলা ও থানা শহরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষণীয় ছিল। কক্সবাজার জেলার নেতাকর্মীরাও এর ব্যাতিক্রম ছিলনা।
বৈষম্যবিরুধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কগণসহ সারজিস আলমরাও ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দদেরকে গনঅভুত্থানে পাশে পেয়ে সাহস পেয়েছেন।
আজকের এই ইফতার মাহফিল থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীসহ যেসকল দেশপ্রেমিক শাহাদত বরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। বর্তমানে গুটিকয়েক স্বার্থান্বেষী মহল বিতাড়িত সেই ফ্যাসিস্টদের সাথে হাত মিলিয়ে দেশকে পূণরায় অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করতেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সেসকল ষড়যন্ত্রকারীকে কঠোর হস্তে দমন করার জন্য দেশপ্রেমিক জনতাকে সাথে নিয়ে প্রস্তুত রয়েছেন ইনশাআল্লাহ। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের স্থান এই বাংলার জমিনে হবেনা। পবিত্র মাহে রমজান থেকে আমাদেরকে ত্যাগ এবং আল্লাহ ভীরুতার শিক্ষা গ্রহণ করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি কক্সবাজার জেলা শাখার সম্মানিত সভাপতি আলহাজ্ব বদিউল আলম সাও. জাতীয় ওলামা মশায়েখ আইম্মা পরিষদের সম্মানিত সভাপতি মাওলানা মুহসিন শরীফ, বাংলাদেশ জামাত ইসলামীর জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী, সেক্রেটারি জাহেদুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা মুফতি আবু মুসা, সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা ইউনুস ফরাজী, নেজাম ইসলাম পার্টির জেলা আমির মাওলানা আব্দুল খালেক নিজামী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুস, আমার বাংলাদেশ পার্টির জেলা যুগ্ম আহবায়ক সাংবাদিক শামসুল হক শাকের, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার সংগ্রামী সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার সংগ্রামী সভাপতি মাওলানা নুরুল ইসলাম আজিজী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার সংগ্রামী সভাপতি ছাত্রনেতা ইয়াসিন আরফাতসহ আন্দোলনের জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ প্রমূখ।