নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী, তরুণ লেখক, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী কাজী আশফিক রাসেল ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলার নিন্দা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় লোকজন।
এব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আব্দুল লতিফ বলেন, রাসেল ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি নিজেও একজন প্রত্যক্ষদর্শী। মাদকের ব্যাপারে থানায় অভিযোগকারী দাবি করে রাসেলকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁর মামার বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। আমি নিজ উদ্যোগে ইতিমধ্যেই স্থানীয় ৬৪ জন প্রত্যক্ষদর্শীর লিখিত জবানবন্দি গ্রহণ করেছি। রাসেলের নিরাপরাধ পরিবারের পক্ষে স্বাক্ষী দেওয়ার কারণে আমি নিজেও মাদকসন্ত্রাসীদের হুমকি ধামকির শিকার হয়েছি। অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীদেরকেও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে জানতে পেরেছি ।
আমরা এলাকাবাসী চাই, অবিলম্বে মিথ্যা মামলাটি প্রত্যাহার করা হোক। জনগণের প্রত্যক্ষভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি ষড়যন্ত্রকারী সকল অপশক্তির বিষদাঁত ভেঙে দেওয়ার জন্য।
এব্যাপারে বিস্তারিত জানতে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে জানা যায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির
আব্দুল লতিফের উপস্থিতিতে লিখিত জবানবন্দি প্রদানকারীকে বাড়ি গিয়ে হুমকিধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ছমিরউদ্দীন (৬০) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সত্যের ভাত নাই এইদেশে। সত্য স্বাক্ষী দেওয়ার কারণে আমাদের হুমকিধামকি দেওয়া হচ্ছে। রাসেলের পরিবার সম্পুর্ন নিরপরাধ।
আলেহা বেগম (৩৫) নামের এক মহিলা বলেন, রাসেলের পরিবার সম্পুর্ন নিরপরাধ। সত্য স্বাক্ষী দেওয়ায় আমাকে মহিলাসন্ত্রাসী নাজমা মারধর করতে চাচ্ছিলো। জীবন বাচাতে আমি দৌড়ে পালিয়েছি।
প্রত্যক্ষদর্শী নাসিমা বেগম (৪৫) বলেন, রাসেলের পরিবার সম্পূর্ণ নিরপরাধ। মিথ্যামামলা যারা করেছে তাদের বিচার চাই।
হাজেরা বেগম (৫৫) বলেন, রাসেলের মতো ভালো ছেলে কয়েক গ্রামেও নাই। আমরা চাই মিথ্যা মামলাটি প্রত্যাহার হোক অবিলম্বে।
নূরজাহান বেগম (৫৫) বলেন, আমি নিজের চোখে দেখছি রাসেলের পরিবার সম্পুর্ন নিরপরাধ । আমরা সবাই মিথ্যমামলা বাতিল চাই। বাদীপক্ষ খুবই দুষ্টপ্রকৃতির। আমরা সত্যকথা বলে অনেকবার গালিগালাজের শিকার হয়েছি।
সফিক (২৫) বলেন, লেখক রাসেলকে হত্যা করতে না পেরে তার নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমরা চাই মামলাটি বাতিল হোক। কাইয়ুম নামের এক যুবক বলেন, রাসেলের পরিবার সম্পুর্ন নিরপরাধ। বাদীপক্ষের বিচার চাই। গিয়াস উদ্দিন ( ৬৫) নামের একব্যক্তি বলেন, রাসেলরা সম্পূর্ণ নিরপরাধ। বাদীপক্ষ মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে, এটার বিচার হোক। শাহ-আলম (৩০) - বাদীপক্ষ মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। এরা এই এলাকার অসংখ্য মানুষকে হয়রানির সাথে জড়িত। এদেরকে বিচারের মুখোমুখি করলে অসংখ্য মানুষ উপকৃত হবে।
মিথ্যা মামলাটির স্বাক্ষী হিসেবে ৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারমধ্যে ৪ জনই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। মামলার দুই নাম্বার স্বাক্ষী হাছেন আলী (৫০) বলেন, আমাকে স্বাক্ষী করা হয়েছে আমি নিজেই জানি না। আমাকে না জানিয়ে মিথ্যামামলার স্বাক্ষী করা হয়েছে আমি এটার প্রতিবাদ জানাই। রাসেল খুব ভালো ছেলে। ওরা কাউকে মারধর করতেই পারে না। বাদীপক্ষ খুব কলহবাজ। আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলাম না।
তিন নাম্বার স্বাক্ষী আব্দুল জলিল (৪২) বলেন, আমারে না জানিয়ে মিথ্যামামলার স্বাক্ষী করা হয়েছে। আমি এটার নিন্দা জানাই। রাসেলরা ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলো না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা। বাদী পক্ষকে রাসেলের মামার বাড়িতে হামলা চালাতে দেখেছি। মামলা তো রাসেলদের করা উচিত ছিলো।
মামলার চার নাম্বার স্বাক্ষী বকুল মিয়া (৩৫) বলেন, রাসেলদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে আমরা এটার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বাদীপক্ষ খুবই কলহবাজ।
ইয়াবার ব্যবসার করে। ইয়াবাসহ ধরা খেয়ে কয়েকবার জেলও কেটে এসেছে। আমাদের না জানিয়ে আমার স্বাক্ষী রাখা হয়েছে। এটার বিচার চাই।
মামলার পাচ নাম্বার স্বাক্ষী মিতু বেগম ( ৩২) বলেন, আমার শ্বাশুড়ি মারা গেছে সেদিন। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। রাসেলরা মারধর না করলেও মাদকের ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিয়েছিলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেছেন, মামলার বাদীপক্ষটি জঘন্য খারাপ শ্রেণির। এর আগেও মিথ্যামামলার ভয় দেখিয়ে অসংখ্য মানুষকে হয়রানি করেছে। মিথ্যামামলার ভয় দেখিয়ে জরিমানা আদায় এদের ব্যবসাতে পরিণত হয়েছে। প্রতিহিংসাপরায়ণ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির ইন্ধনে এরা এভাবে একের পর এক অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০