শিমুল সরকার,যশোর প্রতিনিধি:
সারাবছর কমবেশি ফুল বিক্রি হলেও মূলত বসন্তবরণ উৎসব,ভ্যালেন্টাইনস ডে আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখেই জমজমাট হয় ফুলের বাজার।
প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে ফুলই শ্রেষ্ঠ। মানুষের মনের খোরাক মেটাতে গদখালীতে চাষিরা এখন দিনরাত পরিশ্রম করছেন।
ফুলের রাজধানী হিসেবে অনেক বছর ধরেই খ্যাত যশোরের গদখালী। যশোর জেলার ঐতিহাসিক গদখালীর বিস্তীর্ণ এলাকা পানিসারা, নবীব নগর,হাড়িয়া, পটুয়াপাড়া, টাওরা,শরীফপুরসহ অসংখ্য গ্রামের মাঠজুড়ে শুধু ফুলের বাগান। এখানে গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা, গ্যানেডোলা, চন্দ্রমল্লিকাসহ অসংখ্য দেশি-বিদেশি ফুলের সমারোহ।
প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ হচ্ছে সেখানে। এলাকার প্রায় ২ হাজার কৃষক ফুল চাষে সরাসরি জড়িত।
ফুলচাষীরা প্রতিদিন তাদের খামারের ফুল বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন গদখালি পাইকারি বাজারে।বসন্ত উৎসব, ভালবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে গদখালী এলাকায় ফুল বেচাকেনা জমে ওঠে। ফুলের বাড়তি চাহিদার কারণে দামও বেড়ে গেছে এরই মধ্যে। প্রায় সব রকমের ফুলই দ্বিগুন দাম।বুধবার,গদখালি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রজনীগন্ধা স্টিক ৮টাকা, গোলাপ ১৭/২০ টাকা, গ্ল্যাাডিওলাস ৮ থেকে ১২ টাকা, জারবেরা ১৫ থেকে ১৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাড়তি দামের হাওয়া লেগেছে গাঁদাফুলের গায়েও। দেড়শ’ টাকা হাজারের গাঁদাফুল এখন তিন’শ’ টাকা। অথচ দু’দিন আগেও রজনীগন্ধা ৩ টাকা, গোলাপ সাড়ে ৪ টাকা, গ্ল্যাডিওলাস ৪/৫ টাকা এবং জারবেরা ১০ থেকে ১২ টাকা দরে বিক্রি হত। এই দাম বেড়ে যাওয়াকে আমলেই নিচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।
গদখালি এলাকার নবীব নগর গ্রামের ফুল চাষী জানান শিহাব হোসেন, বাজারে ফুলের বেচাকেনা বেশ ভাল। বেচাকেনাতেও তারা খুশি। শুধু শিহাব নন, সকল ফুল চাষীরা সকলেই কমবেশি ফুল বিক্রি করছেন।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, এই তিন দিবস উপলক্ষে ফুলের বাজারে সব মিলিয়ে অন্তত ২৪-২৫কোটি টাকার ফুল হাতবদল হবে।
উপজেলা মানবাধিকার সাধারন সম্পাদক ও ফুল ব্যবসায়ী উজ্জ্বল হোসেন বলেন, গদখালীতে উৎপাদিত ফুল অনেকাংশে উন্নত। তবে ফুল রপ্তানির জন্য সবচেয়ে বেশি সমস্যা পরিবহন ব্যবস্থা। বিভিন্ন ট্রাক-বাসের ছাদে করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ফুল পাঠানোতে অনেক ফুল নষ্ট হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে অনেক সময় লোকসানের মুখে পড়তে হয়। পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করতে পারলে, গদখালীর ফুল চাষিরা হবে লাভবান আর সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে
পারবে।