রাকিবুল আওয়াল পাপুল, শেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
শেরপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী তানজিনা আক্তারকে (২১) শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মিজানের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ মে) তানজিনা বাদী হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলাটি দায়ের করেন।
আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আব্দুস সবুর মিনা মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রি কাবিনমূলে সদর উপজেলার খাসপাড়া গ্রামের হাসান মাস্টারের ছেলে আশরাফুল আলম মিজানের সঙ্গে ভাতশালা ইউনিয়নের মধ্যবয়ড়া গ্রামের মো. তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে তানজিনা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে আশরাফুল বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক বাবদ ১০ লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য স্ত্রী তানজিনাকে চাপ দিয়ে আসছিলেন। আশরাফুল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে স্ত্রী তানজিনা ও তার মা-বাবাকে নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন।
এর ধারাবাহিকতায় গত ৫ মে সকালে শেরপুর শহরের শিংপাড়া এলাকার ভাড়া বাসায় আশরাফুল আলম স্ত্রী তানজিনা আক্তারকে যৌতুক বাবদ বাবার বাড়ি থেকে ১০ লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য পুনরায় চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু তানজিনা টাকা এনে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে আশরাফুল স্ত্রী তানজিনাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মেরে ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। এতে তানজিনা গুরুতর আহত হন। পরে তিনি জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
তানজিনা বর্তমানে তিনি বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন এবং স্বামী আশরাফুলের বিভিন্ন ধরনের হুমকির ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি আদালতের কাছে স্বামী আশরাফুল আলমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আবেদন জানান।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আশরাফুল আলম মিজান বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্ত্রী তানজিনা আক্তারের সঙ্গে তার পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। এর জের ধরে তানজিনা তার বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা করেছেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশির আহমেদ বাদল বলেন, এখন পর্যন্ত এমন কোনো কাগজ আমি পাইনি, পেলে আদালতের আদেশ মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উল্লেখ্য, আশরাফুল ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০