মোঃ আবু সঈদ, স্টাফ রিপোটারঃ
কাজের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও ঝুলে রয়েছে সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার উজানীগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ। বার বার কাজের মেয়াদ বাড়ালেও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে বড় বড় গর্তেই সীমাবদ্ধ রয়েছে বিদ্যালয়টির নির্মাণ কাজ। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অভিভাবক ও শিক্ষকরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ ঝুলে থাকার বিষয়ে ঠিকাদারকে দোষারুপ করছেন উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানাযায়, উজানীগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির নতুন ভবন নির্মাণ কাজের জন্য ৮৪ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬শত ৫৮ টাকা ব্যয়ে ২০২২ সালে কাজ পায় ভৈরব কিশোরগঞ্জের মেসার্স মাহবুব আলম এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকারদারী প্রতিষ্ঠানটি। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৩০ মে কাজ শেষ করার শেষ করার কথা থাকলেও নাম মাত্র কয়েকটি গর্ত ও আংশিক পাইলিং করেই ফেলে রাখা হয়েছে বিদ্যালয়ের কাজ। অফিস থেকে বার বার তাগিদ দিলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শীঘ্রই কাজ শুরু করবে বলে কালক্ষেপণ করতে থাকে। ঠিকাদারের বিভিন্ন অজুহাত ও আবেদনের ভিত্তিতে কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে দিলেও কোন কাজে আসেনি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কাজ পাওয়ার পর উজানীগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি ভেঙ্গে নতুন ভবনের পাইলিংয়ের জন্য বিদ্যালয়ের সামনে বড় বড় কয়েকটি গর্ত করে কাজ ফেলে চলে যায় ঠিকাদার। এতে করে পূর্বের নির্মিত ছোট একটি ভবনে শিক্ষার্থীদের ক্লাস চললেও পর্যাপ্ত পরিমান ভবন না থাকায় দিনদিন শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। গর্তগুলো অনেক গভীর হওয়ায় এবং কাজের কোন গতি না থাকায় প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এতে করে যেমনিভাবে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাঘাত ঘটছে তেমনি এলাকায় সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। পাশাপাশি স্কুল মাঠে নির্মাণ সামগ্রী বছরের পর বছর পরে থাকার কারণে খেলাধুলা থেকেও বিরত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি এলাকার অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।
বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রিরা রানী দাশ জানান, বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের মেয়াদ অনেক পূর্বে শেষ হলেও ঠিকাদার শুধু গর্ত করে কাজ ফেলে রেখেছে। বারবার তাগিদ দেওয়ার পর কাজের কোন অগ্রগতি নেই।
কথা হলে উজানীগাঁও গ্রামের মো: আব্দুস সালাম, আব্দাল মিয়া সহ আরও অনেকে বলেন, এই বিদ্যালয়টি এখন মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। গত কয়েকদিন আগে গর্তে পড়ে ৩ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আমরা চাই দ্রুত কাজটি বাস্তবায়ন হোক।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম খাঁন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্ধিগ্ন। বার বার তাগাদা দিলেও কোন কাজ হচেছ না। প্রতিনিয়ত নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা হলে তারা জানান, আগামী সপ্তাহে বেইজ ঢালাই করে গর্ত ভরাট করে কাজ শুরু করে দেয়া হবে৷
মুঠোফোনে কথা হলে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আল নুর তারেক জানান, ঠিকাদারের সাথে কথা হয়েছে শিগগিরই কাজ শুরু করবে৷ এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা জানান, বিদ্যালয়টির কাজ দ্রুত করার জন্য উপজেলা প্রকৌশল অফিসের মাধ্যমে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বারবার চাপ দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত কাজ না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে৷