আনিসুল হক।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পর্কে মাইকেল মধুসূদন দত্তের মূল্যায়ন: ঈশ্বরচন্দ্রের আছে মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঈশ্বরচন্দ্র প্রাচীন ঋষির প্রজ্ঞা, ইংরেজের কর্মশক্তি ও বাঙালি মায়ের হৃদয়বৃত্তি।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার সম্পর্কে একই কথা বলা যায়।
এই করোনার কালে স্যার আমাকে নিয়মিত ফোন করে জিগ্যেস করেন, আমি ভালো আছি কিনা।
সেদিন বললাম, স্যার তলস্তয়ের ‘পুনরুজ্জীবন’ পড়লাম আবারো, সেই ছাত্রাবস্থায় পড়েছিলাম, এ তো সাংঘাতিক। স্যার বললেন, ওহ, সাংঘাতিক। তবে ওয়ার এন্ড পিস পড়ো, আরো ভালো।
আমি বললাম, স্যার এখনো ২০০ পৃষ্ঠা পড়া আছে, শেষ তো করতে পারি না।
তিনি বললেন, পড়ো। মহাকাব্যিক ব্যঞ্জনা পাবে।
ফলে ওয়ার এণ্ড পিস– ১৪০০ পৃষ্ঠা– পড়ে ফেললাম। স্যারকে ধন্যবাদ। তিনি আদেশ করেছেন বলে পড়া হলো।
আর স্যারের কর্মশক্তি? তিনি এক আশ্চর্য মানুষ, বয়স ৮১ কিন্তু তিনি এখনও তরুণ এবং কর্মচঞ্চল! তিনি একইসঙ্গে সংসারী এবং সন্ন্যাসী! তিনি একইসঙ্গে স্বপ্নবান এবং বাস্তব কর্মবীর! তিনি একইসঙ্গে পন্ডিত পুস্তকগত প্রাণ এবং কর্মযোগী। তিনি একইসঙ্গে লেখক এবং সংগঠক। তিনি বাগ্মী এবং কর্মী এবং লেখক। বহু বিপরীতের এক অপূর্ব সুন্দর সমন্বয়ের উদাহরণ হচ্ছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রতিবছর ২৮ লক্ষ ছেলে মেয়ের কাছে যাচ্ছে বাছাই করা বই নিয়ে। এদের মধ্যে ২ লক্ষ ৮০ জন হয়ে উঠবে উন্নততর পড়ুয়া মানুষ, ২৮০০০ হয়ে যাবে অগ্রনায়ক, ২৮০০ জন পাব বিশ্বমানের, ২৮ জন পাব জিনিয়াস!
শুভ জন্মদিন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার।
সম্পাদক, কিশোর আলো।