মোহাম্মদ আতিকুল্লাহ চৌধুরী, চট্টগ্রাম:
হাটহাজারীতে এবং পর্যায়েক্রমে দেশব্যাপী সর্বস্তরের মুসলমানের কাছে কোরআনের শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে দরসুল কোরআন কর্মসূচী ঘোষণা করেছে হাটহাজারীর আলেমদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন হাটহাজারী ওলামা পরিষদ।
গত ০৬.০৭.২৩ ইংরেজি রোজ বৃহস্পতিবার হাটহাজারীস্থ নূরানী তা’লীমুল কুরআন বোর্ড চট্টগ্রাম মিলনায়তনে সংগঠনের সাধারণ সভা ও কারামুক্ত মজলুম আলেম সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গ্রেফতারকৃত সকল আলেমের মুক্তি এবং হেফাজত নেতাদের মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়ে আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন,২০১৩ সাল এবং ২০২১ সালে হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে সবগুলোই মিথ্যা। অনতিবিলম্বে তাদের মুক্তি দিয়ে সবগুলো মামলা প্রত্যাহার করুন।
সংগঠনের সভাপতি ও হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক আল্লামা শোয়াইব জমিরীর সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন হাটহাজারী মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা মুফতী জসিম উদ্দিন,হাটহাজারী মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস আল্লামা আহমদ দীদার কাসেমী, মাওলানা মুফতী হাবিবুর রহমান কাসেমী, মাওলানা মীর কাসেম, মাওলানা ইয়াহইয়া,মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনির, মাওলানা ড. নূরুল আবছার আজহারী,মাওলানা আব্দুল ওয়াদুদ নোমানী, মাওলানা আবু তৈয়ব আব্দুল্লাহপুরী, মুফতী রাশেদুল ইসলাম ও মাওলানা এমরান সিকদার প্রমূখ।
মাওলানা হাবিবুল হক বাবু ও মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম মেহেদীর যৌথ সঞ্চালনায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রিস এর পক্ষে সংগঠনের ভবিষ্যত কর্মসূচী ঘোষণা করেন সংগঠনের সহ সভাপতি মাওলানা জাফর আহমদ।
সংগঠনের ভবিষ্যত কর্মসূচী ও প্রস্তাবনা সমূহ হলো…….
১.হাটহাজারীর নবীন-প্রবীণ সকল ওলামায়ে কেরামকে অত্র সংগঠনের সদস্য করে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করা।
২.অসচ্ছল,দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত অথবা দূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ওলামা পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৩.প্রাকৃতিক দুর্যোগ তথা অগিকান্ড,ঝড়-তুফান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ গরীব-অসহায় পরিবারগুলোকে তাৎক্ষণিক সহযোগিতা প্রদান করা।
৪.ওলামা পরিষদের কোন সদস্য অথবা তৌহিদি জনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা,গ্রেফতার,হয়রানী ইত্যাদি করা হলে তাদেরকে আইনী সহায়তা এবং প্রশাসনিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা।
৫.ইসলাম বিরোধী যে কোন কার্যকলাপের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে তাৎক্ষণিক যেকোন কর্মসূচী গ্রহণ করা ও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা।
৬.সর্বস্তরে আল্লাহর হুকুম ও নবীজী (সাঃ) এর ত্বরীকা প্রতিষ্ঠা এবং ঈমান আকিদা সংরক্ষণের লক্ষ্যে সংগঠনের বিজ্ঞ আলেম সদস্যদের মাধ্যমে প্রতিটি মসজিদে দারসুল কুরআনের ব্যবস্থা করা।
৭.সাধারণ মুসলিমদের মাঝে দ্বীনের সঠিক বার্তা পৌঁছানোর লক্ষ্যে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে একটি খতমে নবুওয়াত মহাসমাবেশ আয়োজন করা।
৮.হাটহাজারীর সকল দ্বীনি প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মুয়াজ্জিন, ইমাম ও খতিব সাহেবদের তথ্য সংগ্রহ এবং তাদের ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণে সহযোগীতা করা।
৯.হাটহাজারী সদরে ওলামা পরিষদের উদ্যোগে একটি মসজিদ কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে হেফাজতের মামলায় কারামুক্ত ২২ আলেম সদস্যকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।