মোঃ আবু সঈদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের দ্বিতীয় কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। কাউন্সিলে পুনরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ানকে সভাপতি ও দৈনিক সুনামকন্ঠের সম্পাদক বিজন সেন রায়কে সাধারণ সম্পাদক করে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং আগামী ৩ দিনের মধ্যে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করতে সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিকাল ৩ ঘটিকায় সুনামগঞ্জ জেলা শহরের কাজী পয়েন্টস্থ লতিফা কমিউনিটি সেন্টারে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের দ্বিতীয় কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে উপস্থিত কাউন্সিলারদের সর্বসম্মতিক্রমে পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে শপথ বাক্য পাঠ করান সংগঠনের অন্যতম উপদেষ্টা শীলা রায়। নতুন কমিটি কর্তৃক সম্প্রতি শাল্লায় সংখ্যা লঘু হিন্দু পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানানো হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০ ঘটিকা হতে দুপুর দুইটা পর্যন্ত কাউন্সিলের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মিলিত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অধিবেশনের সূচনা হয়। পরে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ খসরুসহ আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকা সকল প্রয়াতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং দাড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। কাউন্সিলে সিলেট বিভাগের ৪ জেলাসহ হাওর অধ্যুষিত নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার হাওর বাঁচাও আন্দোলনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। কাউন্সিলের প্রথম অধিবেশনে হাওর বাঁচাও আন্দোলন, কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ
সম্পাদক সালেহীন চৌধুরী শুভ’র সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী মু. ইনামুল হক বলেন, হাওর উন্নয়নের নামে হাওর এলাকার প্রকৃতি বিপন্ন হতে চলছে। হাওর এলাকার বিপন্ন প্রকৃতিকে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে হবে। হাওরের দেশী প্রজাতির মাছের দুরবস্থা নিরসন করতে হবে, হাওরের প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের কারণে এখন আর আগের মতোন মা মাছেরা ডিম উৎপাদন করতে পারছেনা, অতিথি পাখিরা হাওরে আসছেনা, হাওরের প্রাকৃতিক উদ্ভিদ বিলুপ্ত হতে চলছে। তিনি আরো বলেন, শুধু বাঁধ নির্মাণ করলেই চলবেনা, বোরো ফসল বৈশাখের আগে ঘরে তুলতে হবে, কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসের মধ্যে পিআইসি গঠন করে ফেলতে হবে, বৈশাখ মাসে বাঁধ কেটে ফেলতে হবে যাতে পানি প্রাকৃতিক ভাবে চলাচল করতে পারে, দেশীয় মাছ অবাধে বিচরণ করতে পারে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন হাওর বাঁচাও আন্দোলন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়,
বক্তব্য রাখেন হাওরবাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এডভোকেট স্বপন কুমার দাস রায়, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির আহবায়ক বাবু সুখেন্দু সেন, নেত্রকোনা জেলা কমিটির প্রতিনিধি আব্দুল হালিম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির প্রতিনিধি শামীম আহমেদ, হবিগঞ্জ জেলা কমিটির প্রতিনিধি জাফর ইকবাল চৌধুরী, এম এ জব্বার, সিলেট জেলা কমিটির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দীন, যুগ্ম আহবায়ক কাউসার আহমদ, সদস্য তারেক আল মঈন, সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য সচিব রাজু আহমদ, সদর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদ নূর আহমদ, জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহবায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল গণি, তাহিরপুর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক তোজাম্মুন হক নাসরুম, শাল্লা উপজেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাশ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিন, দিরাই উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম সরকার, জামালগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি শাহানা আল আজাদ প্রমুখ। বক্তব্যে বক্তারা দুর্নীতিবাজ লুটেরাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, হাওরের সামগ্রিক উন্ননয় কাজে কৃষকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, নদী খনন করে নদী শাসন নিশ্চিত করতে হবে। কাউন্সিলে হাওর বিষয়ক পৃথক মন্ত্রনালয় গঠনের দাবি জানানো হয়।