মৌলভীবাজারের মণিপুরী মুসলিম হাফেজ শফিকুলের শিক্ষা ও ধর্ম—উভয় ক্ষেত্রেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন
রফিকুল ইসলাম জসিম
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার উত্তর গুলের হাওর গ্রামের মেধাবী ছাত্র মোঃ শফিকুল ইসলাম দাখিল পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ অর্জন করেছেন। তিনি মণিপুরী মুসলিম (পাঙাল) সম্প্রদায়ের সন্তান এবং একজন হাফেজে কুরআন।
বর্তমানে তিনি মৌলভীবাজার জামেয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত। শিক্ষা জীবনের শুরু ইকরা বাংলাদেশ ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড মাদ্রাসা, শ্রীমঙ্গল থেকে, যেখানে প্রাথমিক বৃত্তি অর্জন করেন। ২০১৮-২০২০ সালে হিফজ সম্পন্ন করে ২০২২ সালে জামেয়ায় ৮ম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেন।
ফলাফল নিয়ে শফিকুল বলেন, “আমি ভালো আলেম ও দক্ষ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।” তিনি জানান, মা-বাবা ও শিক্ষকদের অবদানেই এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। ফল প্রকাশের পর মাকে জানালে তিনি আনন্দে কেঁদে ফেলেন।
হোস্টেল জীবনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে শফিকুল বলেন, “আমাদের সময় কেটেছে মূলত নামাজ, কুরআন চর্চা, পড়ালেখা ও অল্প বিশ্রামে। বাইরে খেলার সময় কম থাকলেও মনোযোগ ছিল পুরোপুরি পড়াশোনায়।”
শফিকুলের বাবা দুবাই প্রবাসী মোঃ বক্তিয়ার আহমদ বলেন, “ছেলেটা ছোটবেলা থেকেই পরিশ্রমী। হিফজের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষাতেও সাফল্য—এটা আমাদের গর্ব।”
মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ আব্দুল হক বলেন, “শফিকুলের জিপিএ-৫ তার অধ্যবসায়, শৃঙ্খলা ও একাগ্রতার প্রমাণ। আমরা গর্বিত।” তিনি সফলতার পেছনে আল্লাহর উপর ভরসা, নিয়মিত ইবাদত, সময়ানুবর্তিতা ও পরামর্শ মেনে চলার বিষয়গুলোকে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
এই সাফল্য শুধু শফিকুলের নয়, বরং তার পরিবার, জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা এবং মণিপুরী মুসলিম (পাঙাল) সম্প্রদায়ের জন্যও এক গর্বের মাইলফলক। দ্বীন ও দুনিয়ার সমন্বিত শিক্ষা-অর্জনে তিনি হতে পারেন আগামী প্রজন্মের এক অনুকরণীয় মডেল।