এজি লাভলু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম (৪৯)। তিনি বড়ভিটা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড বড়লই লম্বাগ্রামের মৃত বাবু মিয়ার মেয়ে। স্বামী পরিত্যাক্তা নিঃসন্তান এই মহিলা দীীর্ঘ দিন যাবৎ ভগ্নপ্রায় একটি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জীবিকা নির্বাহের কোন অবলম্বন না থাকলেও তার ভাগ্যে কোন সরকারি সহায়তা জোটেনি। ভগ্নপ্রায় একচালা ঘরে বাস করলেও তার নামে বরাদ্দ হয়নি সরকারি ঘর।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, বড়লই লম্বাগ্রামে পৈত্রিকসূত্রে পাওয়া জমিতে বসবাস বৃদ্ধপ্রায় ফাতেমা বেগমের। একটিমাত্র ভগ্নপ্রায় একচালা টিনের ঘর। এর একদিকে টিন ও তিনদিকে বাঁশের চাটাই দিয়ে বেড়া দেয়া। এক কোণে রান্নার চুলা, রান্নার খড়ি রাখার যায়গা। পাশেই রাখেন থালা, বাটি, হাড়ি, পাতিল। রাতের বেলায় এ ঘরেই রাখতে হয় তার একমাত্র ছাগলটিকেও। অন্য কোনায় রয়েছে শোবার জন্য ছোট্ট একটি চৌকি। জামাকাপড় ঝুলিয়ে রাখেন বেড়ার ওপর।
কান্নাজড়িত কন্ঠে ফাতেমা বেগম জানান, বাবা মোর কিছুই নাই। ২৫ বছর আগে বাচ্চা কাচ্চা হয়না দেখিয়া মোর স্বামী মোক ছারি গেইছে। তখন থাকি মোর বাপের দেওয়া এই জায়গা কোনাত ঘর তুলিয়া আছোং। অন্যের বাড়িত কামাই করিয়া কোন মতে খায়া না খায়া দিন যায় মোর। ঘরটা দিন দিন ভাঙ্গি যাবাইনছে। কেমন করি যে থাকিম। ঝরি (বৃষ্টি) বাতাস হইলে ওশসানি পানিতে ঘর ভিজি যায়। বিছনাত শুতপার পাংনা বাহে। অমাত ছাগলটাক নিয়া এক কোনাত বসি থাকং। মোর কষ্ট কাইও দেখেনা বাহে।
এলাকাবাসী জানায়, ফাতেমা বেগম খুব কষ্টে দিন পার করলেও অদৃশ্য কারণে তিনি ভাতা ও সরকারি ঘর পাচ্ছেন না। তার চেয়ে হতদরিদ্র এ এলাকায় আর কেউ নেই। তিনি ভাতা ও সরকারি ঘর সবার আগে পাবার যোগ্য।
বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য খৈমুদ্দিন চৌধুরীর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ফাতেমা বেগমের মানবেতর জীবনযাপনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে ভাতাসহ সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০