মোঃ মনিরুজ্জামান,ভূরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম)থেকেঃ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে পতিত জমি, পুকুরপাড় এবং ক্ষেতের আইলে সুপারি গাছের বাগান লাগানো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে । ঐ সব জমিতে সুপারি বাগান করে স্বাবলম্বি হচ্ছে অনেক পরিবার।
পুকুরপাড় ও ক্ষেতের আইলে সুপারি গাছ লাগাতে অতিরিক্ত কোন জমির প্রয়োজন হয় না এবং জমির ফসলের তেমন ক্ষতি না হওয়ায় সুপারি গাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে চাষিরা। সুপারি বিক্রি করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়া ছাড়াও এসব গাছের শক্ত অংশ দিয়ে গ্রামাঞ্চলের ঘর বাড়িতে বসার মাচা (টঙ) এবং চালের বাতা করা যায়। সুপারি গাছের পাতা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়। এছাড়াও সারা বছর নিজের পরিবারের শৌখিন খাবার পান-সুপারি খাওয়ার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সুপারি বিক্রি করে সংসাসের সিংহভাগ ব্যয় মেটানো সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই এখন বসতবাড়ির আশপাশের পতিত জমি, পুকুরপাড় এবং ক্ষেতের আইলে বাণিজ্যিক ভাবে সুপারি চাষ করছে কৃষক। এমনই দৃশ্য চোখে পরছে উপজেলার দশটি ইউনিয়নের প্রায় সব কটি গ্রামে। এ সব এলাকায় বাণিজ্যিক ভাবে সুপারি বাগান গড়ে তুলেছেন চাষিরা। কথা হয় উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা বাবলু মন্ডলের সাথে। তিনি বলেন, প্রায় তিন একর জমির মধ্যে একটি পুকুর কেটেছেন। পুকুরের পাড়ে ও বাড়ীর চার পাশে বিশাল জায়গায় চার শতাধীক সুপারি গাছ লাগিয়েছেন। গাছ গুলোতে সুপারি ধরতে শুরু করেছে। পুকুরের মাছের পাশাপাশি সুপারি বিক্রি করে বেশ আয় হচ্ছে তার। এছাড়াও সুপারি গাছের ঝড়ে পরা পাতাসহ খোল(ডোঙ্গল) দিয়ে পরিবারের রান্নার জ্বালানী বেশ ভালই চলছে ।
বলদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান বলেন, আমার বাড়ির আশপাশসহ, পুকুরপাড় এবং ক্ষেতের আইল মিলে প্রায় ১৫ শতক জমিতে ১৫০টি সুপারি গাছ আছে। এই মৌসুমে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার সুপারি বিক্রি করেছি।
পাইকেরছড়া ইউনিয়নের গছিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক এরশাদ আলী জানান, তার বাড়ির চার পাশে প্রায় দুইশটি সুপারি গাছ আছে। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে দেড় থেকে দুই পোন সুপারি পারা যায়। বর্তমানে বাজারে সুপারির বেশ ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। প্রকার ভেদে প্রতি পোন সুপারি ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় বানিজ্যিকভাবে সুপারি চাষ বেশ জন প্রিয় হয়ে উঠছে। এ পর্যন্ত উপজেলার দশটি ইউনিয়নে ৩৫০ হেক্টর জমিতে সুপারি গাছ চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, সুপারি হলো পরিবেশ বান্ধব গাছ। বাড়ির আশপাশের পতিত জমি এবং পুকুরপাড়ে সুপারি গাছ লাগিয়ে আয় করা সম্ভব। এতে পতিত জমির সর্বত্তোম ব্যবহার হয়, সাথে অর্থও আসে। বানিজ্যিক ভাবে সুপারি গাছ চাষে কৃষকদেরকে আগ্রহী করে তুলতে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
##
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০