ঢাকাসোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার ও করোনার কারণে বিলুপ্তির পথে যশোরের বাঁশ শিল্প

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
১৯ আগস্ট ২০২০, ৬:৫৪ অপরাহ্ণ

Link Copied!

জেমস আব্দুর রহিম রানা, যশোর :

বাঁশ শিল্প বাঙালি সংস্কৃতির একটি বড় অংশ। আদিকাল থেকেই বাঁশ দিয়ে তৈরি ঘরের কাজের যোগ্য বিভিন্ন জিনিসপত্র ব্যবহার করে আসছে মানুষ। একটা সময় বাঁশ-চাটাইয়ের তৈরিকৃত জিনিসপত্রের বেশ কদরও ছিলো। যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের রূপদিয়ার চাউলিয়া ঋষিপল্লীতে প্রতিটা ঘরেই বাঁশ শিল্পের দেখা মিললেও এখন আর নেই বললেই চলে। মহামারী করোনা ভাইরাসের অগ্রাসনসহ বিভিন্ন কারণে এঅঞ্চলের দুই শতাধিক হস্তশিল্পীর অধিকাংশই পেশা পাল্টাতে বাধ্য হচ্ছে। কালের বিবর্তনে বাঁশ-বেতের তৈরি চাটাই, কুলা, ডালা, চাঙারি, টুকরি বা ঝুঁড়ি, পোলো, ডোল (ধান রাখা পাত্র), চালুনি, মাছ রাখার খালই, হাঁস-মুরগি রাখা খাঁচা ও টেপারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের বিকল্প হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে প¬াস্টিক ও আধুনিক পণ্য সমগ্রী। এমনিতে মানব সভ্যতার পরিবর্তন তার উপর মহামারীর অগ্রাসন সব মিলিয়ে কোনো মতে টিকে থাকার লড়াইয়ে চালিয়ে যাচ্ছে এঅঞ্চলের হস্তশিল্পীরা। দীর্ঘ সময়ের মহামারী ভাইরাসে এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রয়োজনীয় পুঁজির অভাব। শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি ও উপকরণের মূল্য বৃদ্ধিসহ প্লাস্টিক পণ্যের সহজলভ্যতায় এঅঞ্চল থেকেও বাঁশ শিল্প বিলুপ্তির পথে প্রায়। বলা চলে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য বাঁশ শিল্পের ঠিকানা এখন জাদুঘরে। একটা সময় রূপদিয়ার চাউলিয়া পল্লীর বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকার একমাত্র উপায় ছিলো বাঁশ-বেতের হস্তশিল্প। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিদিনই চলতো গ্রামীণ এ পল্লী জুড়ে বাঁশের চটা দিয়ে চাটাই বা চাঁচ, কুলা, ডালা, চাঙারি, টুকরি বা ঝুড়ি, চালুনি বা চালন, মাছ রাখার খালই, ঝুড়ি ও হাঁস-মুরগির খাঁচাসহ বিভিন্ন জিনিস তৈরির প্রতিযোগিতা। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এ কাজে সামিল হতো কাঁধেকাঁধ রেখে। প্রত্যেহ সপ্তাহের হাটবার গুলোতে আশপাশের অঞ্চলের স্থানীয় বাজারে পশরা সাজিয়ে চলাতো গভীর রাত পর্যন্ত বেঁচাকেনা। অনেকেই আবার বিভিন্ন অঞ্চলের বাড়ি বাড়ি যেয়ে ফেরি করে বিক্রয় করতো নিজেদের তৈরি বাঁশ-বেতের এসব পণ্য। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এ শিল্পের মূল উপকরণ বাঁশের মূল্য বৃদ্ধিতে বাঁশ-বেতের কারিগররা তাদের পেশা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে বেকার হয়ে পড়েছে গ্রামীণ এ বাঁশ-বেতের কারিগররা। অনেকেই আবার এ পেশা ছেড়ে চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়। এক সময় এসব এলাকার বিভিন্ন জনপদে বড় বড় বাঁশ বাগান দেখা গেলেও এখন আর চোখে পড়ে না। এ বাঁশ দিয়েই বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতো তারা। নির্বিচারে বাঁশ কড়–ল ধ্বংসের কারণে বাঁশের বংশ বিস্তার কমেছে বহু গুণ। বাঁশ শিল্প কারিগর কার্তিক চন্দ্র দাস সমাজের কথাকে বলেন, ‘বাঁশের তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র মানুষ এখন আর আগের মতো ব্যবহার করছে না। কারণ বর্তমানে প¬াস্টিক দিয়ে তৈরি পণ্যের উপর ঝুঁকছে মানুষ। ফলে এ শিল্পটি চিরতরে হারিয়ে যেতে বসেছে। বাঁশ-বেত শিল্পের দুর্দিন কাটিয়ে সুদিন ফিরিয়ে আনতে সরকারি উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। বাঁশ-বেতে তৈরি জিনিসের স্থানীয় পাইকারী ক্রেতা আনন্দ দাস বলেন, ‘একসময় প্রত্যেক বাড়িতেই বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের ব্যবহার ছিল। চাহিদাও ছিল ব্যাপক। বর্তমান প¬াস্টিক পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে মুখ থুবড়ে পড়ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী শিল্প’টি। এলাকার বাঁশ শিল্পের কারিগর প্রভাষ দাস, কালাচান দাস ও জগদীশ দাস বলেন, ‘কর্মসংস্থান সংকুচিত হওয়ায় আমরা এখন অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছি। শত প্রতিকূলতার মধ্যে পুরোনো পেশা ধরে রাখতে সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রয়োজনীয় পুঁজি আর উপকরণের অভাবে সে প্রচেষ্টা থমকে গেছে। আমরা সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার ঋণ সহায়তা ব্যাবস্থা কামনা করছি।

113 Views

আরও পড়ুন

শান্তিগঞ্জে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে সংকেতহীন স্পিড ব্রেকার,দূর্ঘটনার আশঙ্কা

বুটেক্স শিক্ষার্থীদের উপর ঢাকা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের হামলা, আহত অর্ধ শতাধিক

পাঠকের অনুভূতিতে ❝কলিজার আধখান❞

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে বিএনপি সন্দেহ করছে–ড. হুমায়ুন কবির

বিশ্বরূপ চন্দ্র বিশ্বাসের কবিতা:- হাসি

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণসংবর্ধনা ও কাউন্সিল শুক্রবার

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণ সমাবেশ সফল করার লক্ষে সংবাদ সম্মেলন

আইডিইবির ৫৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আধুনগর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের র‌্যালি ও আলোচনা সভা

দোয়ারাবাজারে এফআইভিডিবি’র স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ

বোয়ালখালীর নব যোগদানকৃত শিক্ষা অফিসার হারুন উর রশীদকে বরণ

জামালপুরে মৃত আইনজীবী হলেন অতিরিক্ত জিপি