
--------
শতবর্ষী দাদু মল্লিকা বানু। তিন কুলে কেউ নেই। ভিক্ষেতে চলে যার পেটের আহার। অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে শেষ অবধি ১৩ এপ্রিল সোমবার বিকেলে পেয়ে গেলেন ‘সোনার হরিণ’ মানে সরকারী খাদ্য সহায়তা।
ইউএনও বিজেন ব্যানার্জীর মহোদয়ের হাত থেকে এ প্রাপ্তির পর খুশীতে প্রায় দাদু মণির কাঁদো কাঁদো অবস্থা। কিন্তু লক্ষ্য করলাম অন্যান্য ভিক্ষুক খালা ও প্রতিবন্ধীরা যে যার মত করে খাদ্য সহায়তা নিয়ে কারো কারো সহযোগীতায় আপন ঠিকানায় ফিরে যাচ্ছেন।
কিন্তু দাদু মণি খাদ্য সহায়তার বস্তা পেয়ে বার্ধক্য নূয়ে পড়া শরীরটা নিয়ে মাটিতে বসে আছেন হতাশ হয়ে। দাদুর কাছে পাশে বস্তা পাহাড়ায় আরেক অবুঝ শিশু কন্যা।
দাদুটি হয়ত এ বস্তা সহ তাকে তার বাড়িতে পৌছে দেবার মত ভরসার মানুষটি খুঁজে না পেয়ে ভয় পাচ্ছিলেন কে জানি আবার খাদ্য সহায়তার বস্তা সহ তাকে বাড়ি পৌছানোর কথা বলে খাদ্য সহায়তা র বস্তা নিয়ে চম্পট দেয়।
এমন উদ্ভদ ধারণা করছিলাম দাদুকে নিয়ে অদুরে দাঁড়িয়ে ।
তারপর দাদুর কাছে আসলাম। জানতে চাইলাম দাদু কী সমস্যা? বললেন, আমি এই বস্তা নিয়া বাড়ি যাইতাম কেমনে? বললাম চিন্তা কইরেন না খাদ্য বোঝাই বস্তা সহ আপনাকে নিরাপদে বাড়ি পৌছে দেয়া হবে।
কাছে থাকা যুগান্তর স্বজন সদস্য আরিফ , পায়েল আর আমার ছেলে শিহাব সরোয়ার শিপুকে ডেকে বললাম, মাথা বয়ে হলেও খাদ্য সহায়তা সহ দাদুকে উনার বাড়িতে পৌছে দিতে হবে যে।,
স্বজনরা সাথে সাথে বস্তা বয়ে দাদুকে তার হাত ধরে ধরে তারই বাড়ি পৌছে দিয়ে আমাকে ঘন্টা খানেক পর জানানোর পর আমার মুখে ফুটে উঠল ‘রাজ্য জয়ের হাসি’।।
এভাবে সোমবার আরো কয়েকজন স্বজন সদস্য ভিক্ষুক খালাদের/ প্রতিবন্ধী ভাইদের খাদ্য সহায়তা বাড়ি পৌছাতে রিক্সায় ভাড়া পরিশোধ ও রিক্সায় উঠিয়ে দেয়া অবধি সহযোগীতা করে মানবিক কাজ করে গেছেন। এ ঘটনাটি কাল্পনিক বা গল্প নয় ।
-----------
হাবিব সরোয়ার আজাদ,
স্টাফ রিপোর্টার
দৈনিক যুগান্তর,
নিউজ ভিশন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০