সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ঃ
শুধু আছে বাড়ির ভিটা! জমিজমা বলতে কিছুই নেই, ফেরি করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন। সকাল হলেই ফেরির বুঝা কাঁদে নিয়ে ভেড়িয়ে পড়েন বাড়ী-বাড়ী, গ্রামে-গ্রামে। টাকা ও চাল দিয়ে বিক্রিয় করেন, মটরভাজা, বাদাম, নিমকি, বুট, আর হাওয়াই মিঠাই জলপাই আচার,বড়ই আচার ইত্যাদি। কেউ ঘৃণার চোখে দেখে, কেউ আবার ফেরিওয়ালা বলে দূরে ঠেলে দেয়। পথই এদের জীবন, ঝুড়িভর্তি জিনিসপত্রই এদের জীবিকা।
৩ ছেলে ৫ মেয়ে স্বামী-স্ত্রীসহ ১০ সদস্যের এ পরিবার অতি কষ্টের সাথে মানবেতর জীবন-যাপন করে আসছে। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের কবিরনগর গ্রামের মৃত্যু তেরাব আলী ছেলে আলতাব আলী (৪৫)।
ফেরিওয়ালা আলতাব আলী বলেন, বাবা মা কেউ নাই! ছোট বেলা তাদেরকে হারিয়েছি। দুঃখ বলার জায়গা নাই। প্রায় ২৩ বছর ধরে ফেরি করি।
দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছি তারা ও শান্তিতে নেই। এক ছেলে এক মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। বাকিরাও পড়া লেখার ইচ্ছে আছে কিন্তুু আমার সম্ভল নাই। জীবনের অর্ধেক সময় পার করে দিয়েছি ফেরির কাজে তবুও পরিবর্তন নাই।
জনপ্রতিনিধি থাকলে ও কেউ আমাদের খোঁজ রাখেনা। গতবন্যার সময় এত কষ্ঠের মাঝে এক মাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা। এমন যদি হয় সমাজে আমাদের মতাে মানুষ টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে! আমার মতাে অসহায়ের জন্য সরকার কিছু করলে বেঁচে থাকা কিছুটা হলেও সহজ হয়ে উঠতো। তানা হলে বর্তমান সমাজে আমার মতাে মানুষ টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
প্রতিবেশী মুহি উদ্দীন বলেন, আমরা ছোট বেলা থেকেই দেখতেছি আলতাব আলী গ্রামে-গ্রামে ফেরি করে, বাড়ির ভিটা ছাড়া আর কোন সম্ভল নাই। প্রতিবেশিদের সহযোগিতা ঘরের চালে টিন দিয়েছেন। সরকারের কাছে বলতে চাই? অনেক সম্ভলবান ও সরকারে কাছ থেকে অনেক পায়দা নিচ্ছে। অসহায় আলতাব আলীর দিকে যেন সুদৃষ্টি দেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হুসাইন আহমদ তালুকদার বলেন, আলতাব আলী ফেরি করে অনেক দিন ধরে, গত বন্যার সময় আমি আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সাহয্য সহযোগিতা করেছি। আমরা পাই কি? আর তাকে দেবইবা কি!
বোগলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিলন খান বলেন, ২৩ বছর ধরে যে আলতাব আলী ফেরী করে তা আমার জানা নাই। চেয়ারম্যান হিসেবে না এই ধরণের অবহেলিত লোক আমাদের কাছে আসলে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করি। তবুও আমি খুজ নিয়ে দেখবো ।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াঙ্কা বলেন, আলতাব আলী ফেরিওয়ালা বিষয়ে আমার জানা নেই। তবুও তার বিষয়ে আমি খুজ নিয়ে দেখবো,সরকারী আওতায় যদি কোন ধরণের ভাতা পাওয়ার উপযোগী হলে ব্যবস্তা করে দেবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০