চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, বর্তমান সংসদে অনির্বাচিত অনেক সংসদ সদস্য রয়েছেন। এ বক্তব্যের পর সরকারি দলের এমপিদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। পরে স্পিকারের হস্তক্ষেপে বক্তব্য প্রত্যাহার করলেও এর প্রতিবাদে তিনি সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন। এ সময় বিএনপির সংরক্ষিত আসনের এমপি রুমিন ফারহানা সংসদেই ছিলেন।
গতকাল রবিবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে এমপি হারুন তার বক্তব্যে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন নিয়ে বলেন, যে এলাকায় ভোট হচ্ছে সেটা আতঙ্কের এলাকায় পরিণত হয়েছে। এ পর্যায়ে তিনি সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদের উদ্ধৃতি দিয়ে ‘এই সংসদে অনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা রয়েছেন’ বলে মন্তব্য করেন। সঙ্গে সঙ্গে সরকারি দলের এমপিরা মাইক ছাড়াই প্রতিবাদ শুরু করেন। এ সময় তাদের হইচইয়ে এমপি হারুন বক্তব্য দিতে পারছিলেন না।
এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাকে বক্তব্যটি প্রত্যাহারের অনুরোধ জনান। এমপি হারুন বলেন, আপনি প্রত্যাহার করতে বলেছেন। আমি আগে উত্থাপন করি। আপনি যদি আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারেন তা হলে অবশ্যই প্রত্যাহার করব। এ সময় সরকারি দলের এমপিদের চিৎকার-চেঁচামেচি আরও বেড়ে যায়। পরে হারুন স্পিকারকে উদ্দেশ করে বলেন, এ সংসদে অনির্বাচিত সংসদ সদস্য রয়েছেন বলেই আমার বক্তব্য আপনি প্রত্যাহারের অনুরোধ করছেন। আমি বক্তব্য প্রত্যাহার করছি।
পরে তিনি স্পিকারকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি সংসদের গার্ডিয়ান। আমি আপনার কাছে ব্যাখ্যা চাই, এরই মধ্যে দুই ধাপের ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। তিন শতাধিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও গোটা পরিষদ- বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাদের নির্বাচিত বলা হচ্ছে, তারা কাদের দ্বারা নির্বাচিত- এ বিষয়ে আপনার কাছে ব্যাখ্যা চাচ্ছি। এ বিষয়টি এখানে পরিষ্কার করবেন। সংবিধান যেখানে বলছে, প্রশাসনের সব পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো কাজের জন্য টেন্ডার হলে, একজন অংশগ্রহণকারী থাকলে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করা হয়। তা হলে যেসব জায়গায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাদের নির্বাচিত করা হচ্ছে, কেন সেসব জায়গায় পুনঃতফসিল করা হচ্ছে না- প্রশ্ন রাখেন তিনি। এটি একটি বড় ধরনের সংকট মন্তব্য করে হারুন বলেন, যুক্তিসঙ্গত সাংবিধানিক এ জায়গাটি পয়েন্ট অব অর্ডার আকারে আমি উত্থাপন করতে চেয়েছি। কিন্তু আমাকে প্রত্যাহার করতে বলায় সংসদ থেকে ওয়াকআউট করছি। এর পর তিনি অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করে চলে যান।
পরে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংরক্ষিত আসনের এমপি রুমিন ফারহানা বলেন, ওয়াকআউট করে সংসদকে খালি করে ফেললে বোধ হয় সরকারি দলের সদস্যদের সুবিধা হতো। তবে এত বেশি সুবিধা আমরা দেব না।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভা-ারী অনির্ধারিত আলোচনায় বলেন, উনি (বিএনপির হারুন) ওয়াকআউট করেছেন ভয়ে। বিএনপি ইউপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি বলে হারুন যে দাবি করেছেন তা সত্য নয়। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। আগামী সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে তারা এ কাজ করছে। সংবিধান রক্ষায় নির্বাচন আগেও হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে।
রাফিউল ইসলাম রাব্বি / এলআর
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০