নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুনভাবে আলোচনায় উঠে এসেছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব, রাজনৈতিক অঙ্গনে পুনঃসংগঠনের প্রয়াস এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততায় সংগঠনটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিশেষ করে রমজান ও ঈদ পরবর্তী সময়টিতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় জামায়াতের বহুমাত্রিক কর্মসূচি জনমানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এতদিন রাজনীতিকে দূরের জিনিস মনে হতো, তবে এবার দেখলাম ওরা আমাদের বাড়ীতে এসে খোঁজ নিচ্ছে, এটা অন্যরকম একটা অনুভূতি।
রমজানের পবিত্রতা ও আত্মিক আবহকে কেন্দ্র করে রাঙ্গুনিয়া জামায়াতের নেতাকর্মীরা দাওয়াতি, সেবামূলক ও মানবিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সমাজে এক নতুন রাজনৈতিক চেতনার রূপরেখা উপস্থাপন করেছে জনমনে । উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত ধারাবাহিক ইফতার মাহফিলগুলো শুধু আনুষ্ঠানিক আয়োজনে সীমাবদ্ধ না করে তাওহিদি চেতনা জাগ্রতকরণ ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার একটি কার্যকর মাধ্যম হিসেবে নিয়ে কাজ করেছে সংগঠনটি।
রমজানে অসুস্থ, অক্ষম ও দুঃসময়ে পতিত কর্মীদের ঘরে ঘরে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান এবং আর্থিক সহযোগিতা সবমিলিয়ে একটি মানবিক ও সহানুভূতিশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে এইসব কর্মসূচিগুলোতে। পাশাপাশি ইন্তেকাল করা সাবেক কর্মীদের পরিবারগুলোর খোঁজ নেওয়া, দোয়া মাহফিল ও সহায়তা প্রদান করে সংগঠনের পারিবারিক মূল্যবোধের চর্চার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
ঈদের পর শহরমুখী নেতাকর্মীদের নিয়ে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী সভায় অংশগ্রহণ করেন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও ঈদ উপলক্ষে নেতৃবৃন্দ হাট-বাজার ও জনবহুল এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন, যা জনগণের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও গভীর করেছে।
বর্তমানে কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষিত গণসংযোগ কর্মসূচির আওতায় মাঠপর্যায়ে নেতাকর্মীরা সক্রিয়ভাবে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ওয়ার্ড পর্যায়ে কর্মীরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে ইসলামের দাওয়াত, সংগঠনের উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি তুলে ধরছেন। জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে সহযোগী সদস্য সংগ্রহের প্রক্রিয়াও চলমান।
যুব ও ক্রীড়া বিভাগের সদস্য সচিব ও হোসনাবাদ ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মহিউদ্দিন বাবু বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে কর্মীরা যে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করেছে, তা অনুকরণীয়। আমরা জনগণের হৃদয়ে ভালোবাসা ও আস্থার জায়গা তৈরি করতে পেরেছি।
দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরখাতুল আলম জুয়েল জানান, সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি সাংগঠনিক জনবল বাড়ানোর কাজ চলছে।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাসান মুরাদ বলেন, আমরা রাজনীতিকে ক্ষমতার খেলা নয়, বরং মানুষের সেবার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম হিসেবে দেখি। রমজান, ঈদ এবং গণসংযোগ এই ধারাবাহিকতায় আমাদের সাংগঠনিক শক্তি ও জনসম্পৃক্ততা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইনশাআল্লাহ, এই ধারা বজায় থাকবে।