রংপুর ব্যুরো:
জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সত্যিকারের সোনার মানুষ ছিলেন। দেশকে সোনার বাংলা গড়ার মতো মানুষ তিনিই ছিলেন। মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে তার জীবনী জেনে এখন আমি তা উপলব্ধি করছি। যখন মন্ত্রী ছিলাম তখন তো মুজিববর্ষ পালন করা হয়নি। কিন্তু মুজিববর্ষে এসে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম এবং বুঝলাম। তিনি সত্যিই সোনার বাংলার একজন সোনার মানুষ ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রংপুর টাউন হল মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি জেলা ও মহানগরের বার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, বঙ্গবন্ধু শহিদ হওয়ার পরে আমরা কিন্তু তার সম্পর্কে ভালো কথা শুনিনি। আমরা সব সময় অশ্রাব্য কথাগুলোই শুনেছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু যে জীবনের ১৪ বছর জেলে ছিলেন সেই ইতিহাস এবং দেশের মানুষের জন্য তার সংগ্রাম ও আন্দোলনের কথা আমরা জানতাম না। এখন বঙ্গবন্ধুর সেই সময়ের আন্দোলন-সংগ্রামের বক্তব্য শুনলে অনেক কিছু জানা যায়। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতিকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে এক ঘোষণায় বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ ও কর্মরত শিক্ষকদের চাকরি সরকারিকরণ করেছিলেন। এখন তারই আদর্শে শিক্ষা এবং শিক্ষকদের জন্য কাজ করছেন
মুজিবকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন দাবি করে রাঙ্গা বলেন, পল্লিবন্ধু এরশাদ বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করতেন। তিনিও শিক্ষা এবং শিক্ষকদের জন্য অনেক কাজ করেছেন। শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে বেতন ভাতা বাড়িয়েছিলেন। বর্তমান সরকারও শিক্ষাবান্ধব সরকার। শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছে। শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে বেতন ভাতা বাড়িয়েছে। শিক্ষকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় ভাবেন।
মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, আমি বিরোধীদলের হতে পারি। কিন্তু সেই কারণে কি আমাকে সরকারের সব কিছুতেই বিরোধিতা করতে হবে। সরকারের ভালো উদ্যোগগুলোকে কেন আমি সমর্থন জানাবো না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ভেজাল খাবার এসব নিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে অনেকবার বলেছি। আজকে সরকারের উন্নয়নে শিক্ষা ও শিক্ষকের জীবনই শুধু বদলায়নি। এখন গ্রামে গ্রামে তিন-চার তলা বিল্ডিংয়ের প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যেটা গ্রামের মানুষ ভাবতে পারেনি, সরকার তাই করেছে। এ সময় তিনি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন দাবি সংসদে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তুলে ধরবেন বলে শিক্ষক নেতাদের আশ্বস্ত করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম তোতা। সমিতির রংপুর জেলা ও মহানগর সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক নুরুজ্জামান মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন, বদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আহসানুল হক চৌধুরী টুটুল, বদরগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম ও গঙ্গাচড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাজু আহমেদ লাল। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক গাজিউল হক চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শিক্ষক নিশাত নিগার করবী ও গোলাম মোস্তফা।
পরে কাউন্সিলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ এবং মহিলা বিষয়ক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে ৬১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০