সংগঠনে নেতার আনুগত্য সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তি/কর্মী/সদস্য’র ওপর অবশ্যকর্তব্য। আনুগত্য অর্থ মান্য করা, মেনে চলা, আদেশ ও নিষেধ পালন করা, কোন কর্তৃপক্ষের ফরমান-ফরমায়েশ অনুযায়ী কাজ করা।
এই সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, “মুমিনগণ, আল্লাহর আনুগত্য কর, রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের মধ্য থেকে যে উলুল আমর তার আনুগত্য কর।” -আন নিসা: ৫৯ আল্লাহ রাসূল বলেন, “যেই ব্যক্তি আমার আনুগত্য করলো সে আল্লাহর আনুগত্য করলো। যেই ব্যক্তি আমাকে অমান্য করলো সে আল্লাহকেই অমান্য করলো। আর যেই ব্যক্তি আমীর/নেতা/ দায়িত্বশীলের আনুগত্য করলো সে আমারই আনুগত্য করলো। যেই ব্যক্তি দায়িত্বশীলের অবাধ্য হলো সে আমারই অবাধ্য হলো।” – সহীহুল বুখারী “তোমরা শ্রবণ কর ও আনুগত্য কর যদিও তোমাদের ওপর কোন হাবশী গোলামকেও কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয় এবং তার মাথা দেখতে আংগুরের মতো (ছোট) হয়।” “সহজ অবস্থায় ও কঠিন অবস্থায় এবং সন্তুষ্টিতে ও অসন্তুষ্টিতে তথা তোমার অধিকার নস্যাৎ হওয়ার ক্ষেত্রেও শ্রবণ করা ও আনুগত্য করা তোমার কর্তব্য।” – সহীহ মুসলীম “তোমদের কেউ যদি তার আমীর/নেতা/দায়িত্বশীলের মধ্যে কোনরূপ অপ্রীতিকর বিষয় লক্ষ করে, সে যেন ধৈর্য ধারণ করে।” -সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলিম সালামাহ ইবনে ইয়াযিদ আল জুফী (রা)জিজ্ঞেস করেছিলেন, “তোমরা হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের ওপর যখন এমন আমীর(নেতা) ক্ষমতায় আসীন হবে যারা তাদের অধিকার আমাদের নিকট থেকে পুরাপুরি আদায় করে নিতে চাইবে আমাদের অধিকার দেবে না তখন আমরা কি করবো? রাসূলুল্লাহ (সা) তার প্রতি (প্রশ্নকর্তার)ভ্রুক্ষেপ করলেন না। সালামাহ আবার জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ (সা) এবার বললেন, “ তোমারা শ্রবণ করবে ও আনুগত্য করে যাবে। কারণ তাদের বোঝা তাদের ওপর। তোমাদের বোঝা তোমাদের ওপর। ” – সহীহ মুসলীম আনুগত্যের মূল অধিকারী হচ্ছেন আল্লাহ। আনুগত্যের দ্বিতীয় অধীকারী হচ্ছেন আল্লাহর রাসূল(সা)। আর তৃতীয় অধিকারী হচ্ছেন সংগঠনের দায়িত্বশীল/নেতা। আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য নি:শর্ত। অর্থাৎ কোন বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ কী তা জানার পর বিনা বাক্য ব্যয়ে তা পালন করাই মুমিনের কর্তব্য। আমীর( নেতার) নির্দেশ যদি আল্লাহ ও তার রাসূল (সা) নির্দেশের সাথে সাংঘর্ষিক না হয় তাও পূর্ণ আন্তরিকতার সহকারে পালন করতে হবে। কিন্তু তার কোন নির্দেশ যদি আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশের সাথে সাংঘর্ষিক হয় তা পালন করা যাবে না। এই সম্পর্ক আল্লাহর রাসূলের শিক্ষা হলো : “আনুগত্য কেবল মারূফ কাজে।” – সহীহুল বুখারী
“স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে কোন সৃষ্টির আনুগত্য করা চলবে না।” “গুনাহর নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নেতার নির্দেশ শ্রবণ ও পালন প্রত্যেকের জন্য অবশ্য কর্তব্য । গুনাহর নির্দেশ দেয়া হলে আনুগত্য পাওয়ার অধিকার তার নেই।” – সহীহুল বুখারী “প্রত্যেক মুসলিমের ওপর নেতার নির্দেশ শ্রবণ করা ও আনুগত্য করা অবশ্য কর্তব্য- চাই তা তার পছন্দ হোক বা অপছন্দ হোক, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর নাফরমানীর নির্দেশ না দেওয়া হয়। আল্লাহর নাফরমানীর নির্দেশ দেয়া হলে তা শ্রবণ করা ও আনুগত্য করা যাবে না।” -সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলীম সংগঠনের শৃঙ্খলার উপাদান হচ্ছে আনুগত্য। (নেতা যদি নেতা হাবশী গোলামও হয়) তার আনুগত্য করা প্রয়োজন। যেই সংগঠনে আনুগত্য নেই সেই সংগঠনে শৃঙ্খলা নেই। আর শৃঙ্খলাই যদি না থাকে তাহলে সংগঠনে বহুলোকের ভিড় জমলেও এর কোন মূল্য হয় না।
একটি সংগঠন তখনই কোন বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে পারে যখন এর কর্মীবাহিনী নেতার নির্দেশকে সেভাবে পালন করে যেভাবে সেনাবাহিনীর জওয়ানরা তাদের কমান্ডারের নির্দেশ পালন করে থাকে।
হালিম মোঃ জয়
সমাজকর্মী ও প্রতিষ্ঠাতা
কক্সবাজার ব্লাড ডোনেটিং ক্লাব
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০