-মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার
বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির পর অনেকটাই নিসঙ্গতা, বন্ধুদের পাল্লা, নোট আদান প্রদানের মাধ্যমেই মেয়েরা প্রেমে পড়ে যায়। প্রথমে বন্ধুত্ব কিংবা বড় ভাইয়ের সম্পর্কের দোহাই দিয়ে প্রেমের সম্পর্কটি আড়াল করলেও পরে গিয়ে তা আর থাকে না। পরে সেটি প্রকাশ পেয়ে যায়। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় প্রেমের লাগাম টেনে রাখাটাও দুরূহ হয়ে পড়ে। কিন্তু এর পরিণতি ভালো না মন্দ?
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমের স্থায়িত্ব কম থাকে। সে প্রেম হয় কেবলই সময় কাটানো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটাকে উপভোগের নামে জীবনের অঙ্কে দীর্ঘশ্বাসের পাল্লাটিকে যেন আরো বেশি ভারী করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমের স্থায়িত্বের কথা বলতে গিয়ে পড়ুয়া অনেক ছাত্রই বলেছেন, ছেলে -মেয়ের সম্পর্কটাকে শুরুতেই কেন বলা হবে প্রেমের সম্পর্ক?
এটি বন্ধুত্বই। কিন্তু অনেকেই আবার বলছেন দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস জীবনে একজন ছেলে আর মেয়ে একসাথে চলাফেরা করলে বন্ধুত্ব আর বন্ধুত্বে থাকে না। তখন একজনের ওপর একজনের দাবি চলে আসে। কর্তৃত্ব চলে আসে। এটিই তখন একসময় প্রেমে রূপ নেয়।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস জীবন, হলজীবনের অনেকের সাথেই কথা বলে জানা গেছে, ক্যাম্পাসের প্রেমের দীর্ঘস্থায়িত্বটি কম হয়। ক্লাসমেট হলে সে স্থায়িত্বের হারটা একটু বেশি হয়। কিন্তু সিনিয়র কারো সাথে যদি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাহলে তার স্থায়িত্ব খুবই কম। কারণ ছেলেটি পাস করে চলে যাওয়ার পরও মেয়েটি ক্যাম্পাসে থেকে যায়।
কর্মজীবনে ফিরে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে ছেলেটিকে পড়তে হয় পরিবারের নানা চাপে। বাবা- মা, ভাই বোনের সিদ্ধান্তকেই তখন বড় করে দেখতে হয়। তাছাড়া পরিবারের দায়িত্ব যখন শেষ হয়, তখন আর সময় থাকে না।
ক্যাম্পাসে যেমেয়েটিকে ভালোবাসার গল্প শুনিয়ে এসেছিলো, সে গল্পটা অনেক আগেই শেষ হয়ে যায়। মেয়েটির বিয়ে হয়ে যায় অন্য কোথাও। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা প্রেমে পড়েন কিংবা সিনিয়র, সহপাঠীদের সাথে একটা সমঝোতায় পৌঁছায় তখন পড়াশোনার ওপর তা কতটা প্রভাব পড়ে তা কেবল তারাই উপলব্দি করেন।
মেধাবী ছেলেমেয়েরা প্রেমের নামে খারাপ বন্ধুর পাল্লায় পড়ে। এতে সারাবছর ছেলেমেয়ে দুজনেরই
পড়াশোনা না করায় বছর শেষে একটা ফল বিপর্যয়ের আশঙ্কা থাকে।
যেভাবেই হোক জীবনের লক্ষ্যও উদ্দেশ্যটা শুরু থেকেই তৈরি করতে হবে, নিজেকে ভবিষ্যতে ভালো কোনো জায়গা দেখা। নিয়তি যেন নিয়ম মেনেই নিজের কাছে আসে। সহ¯্র ভালোবাসা ও ভালোলাগার বৈচিত্রেও আমাদের জীবনের পথে হাটতে হবে। যেকোন রঙিন আঁচড়কে আগেই দেখে নিতে হবে সেটি কতটা স্থায়ী।
লেখক: শিক্ষার্থী,
টেলিভিশন চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০