————
বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ১৯৭৯ সালে বিএনপির আদর্শিক ধারাবাহিকতায় গঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যার উপর ভরসা রেখে শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একটি শৃঙ্খলিত, আদর্শিক ও দেশপ্রেমিক ছাত্র সমাজ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
১৯৯০ এর দশক ছিলো ছাত্রদলের সোনালী অধ্যায়। এর কারণ মূলত সেনা শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামে ছাত্রদল একদম সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলো। তাছাড়া সে সময়ের প্রজন্ম জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বেড়ে ওঠার ফলে তাদের মাঝে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেম এবং বিএনপির প্রতি এক ধরণের ভালোবাসা ছিলো। কিন্তু বিগত ফ্যাসিবাদি শাসনামলে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে তাদের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে না পারায় এবং গতানুগতিক চিন্তাধারায় আবদ্ধ থাকার ফলে, একইসাথে নতুন প্রজন্ম শহিদ জিয়ার অবদান সম্পর্কে না জানার ফলে, তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও বামপন্থী কিছু সংগঠনের ক্রমাগত প্রোপাগান্ডা এবং চরিত্রহননের চেষ্টার ফলে নতুন প্রজন্মও বিভ্রান্ত হয়েছে।
২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ১৯৯০ এর মতো কোনো একক রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব ছিলো না কৌশলগত কারণে, যদিও ছাত্রদল কিংবা বিএনপির ত্যাগ এবং সরকার পতনে ভূমিকা এককভাবে সবচেয়ে বেশি। সুতরাং, ১৯৯০ এর সাথে ২০২৪ এর পার্থক্য রয়েছে যা আমাদের স্বীকার করে নিতে হবে।
১৯৯০ এর ছাত্রদল ছিলো যেমন স্মার্ট, মেধাবি (অনেক ছাত্রনেতা ছিলেন বোর্ড স্ট্যান্ড করা), সময়ের তুলনায় অগ্রচিন্তার অধিকারি আবার সে সময় শক্তি প্রদর্শনের রাজনীতিতেও ছাত্রদলের ধারে-কাছেও কেউ ছিলো না। কিন্তু বিগত দেড় দশকে অস্ত্রের ঝনঝনানি আর দেখা যায় না, মোবাইল-ক্যামেরার যুগে এবং জনগণ ও তরুণ প্রজন্মের মানসিকতায় আমুল পরিবর্তনের ফলে ছাত্র রাজনীতির রুপও পাল্টে গেছে। এই পরিবর্তনের সাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে অবশ্যই খাপ খাওয়াতে হবে। শুধু তাই না বরং ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক রাজনীতির গতিপথও ছাত্রদলকেই নির্ধারণ করতে হবে। ছাত্রদল will have to set the rules of the game. শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের করণীয় নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই কারণ তারাই ছাত্রদলের পথরেখা নির্ধারণ করে এসেছে।
১৯৯০ সালে সফলতার কারণঃ
এরশাদবিরোধী দীর্ঘ আন্দোলনে ছাত্রদল অন্যান্য প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনকে নিয়ে ছাত্র ঐক্য গড়ে তোলে, যা ছাত্রদলের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করে। ১৯৯০ এর স্বৈরাচার পতনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে নেতৃত্ব দেন। তখন সাধারণ ছাত্রদের কাছে ছাত্রদল হয়ে ওঠে প্রতিরোধ ও মুক্তির প্রতীক। তাছাড়া শহিদ জিয়ার শাসনামল দেখার সৌভাগ্য সে সময়ের তরুণ প্রজন্মের হয়েছিলো এবং ছাত্রদল সে সময় জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারা ও শহিদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত আদর্শকে ধারণ করে “দেশপ্রেমিক ও সুশৃঙ্খল সংগঠন” হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বাম দলগুলোর ভেতর অনৈক্য এবং ছাত্রলীগের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে দুর্বলতার বিপরীতে ছাত্রদল ছিলো তুলনামূলকভাবে বেশি সংগঠিত ও দৃঢ়, যা সাধারণ ছাত্রদের কাছে এক ধরণের স্থিরতা ও কার্যকারিতা বার্তা দেয়। মূলত এসব কারণেই ছাত্রদলের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিলো ক্যাম্পাসগুলোতে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ছাত্রদলকে মুখোমুখি করেছে বাস্তবতার, একটি নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে যা সদিচ্ছা , দেশপ্রেম, সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে কাজে লাগানো সম্ভব।
কেমন ছাত্রদল দেখতে চাই?
ছাত্রদলকে হতে হবে শহিদ জিয়ার আদর্শের ছাত্রদল, যারা হবে আগামীর রাষ্ট্রনেতা জনাব তারেক রহমানের ভ্যানগার্ড, আস্থা ও বিশ্বস্ততার প্রতীক। নতুন বাংলাদেশে তিনি যে ধরণের স্বপ্ন দেখছেন তা বাস্তবায়নে, ছাত্রদলকে হতে হবে অত্যন্ত দক্ষ, যোগ্য, মেধাসম্পন্ন, অগ্রচিন্তার অধিকারি এবং পড়াশোনা ও স্কিলের ক্ষেত্রে সেরা। দলীয়ভাবেও এগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে যাতে ছাত্রদলের প্রত্যেকটি নেতাকর্মী দলের জন্য একেক জন “এসেট” হয়, “জনশক্তি” হয় যারা ভবিষ্যতে বড় বড় জায়গা থেকে দলের জন্য কাজ করবে, দেশের জন্য কাজ করবে।
কেমন ছাত্রদল দেখতে চাই-
১। শৃঙ্খলিত, আদর্শবাদী ও দেশপ্রেমিক ছাত্রসংগঠনঃ
ছাত্রদল হবে,
· সংগঠিত ও শৃঙ্খলিত,
· দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ,
· আদর্শিকভাবে সুসংহত
· ছাত্রসমাজকে নেতৃত্বদানের জন্য প্রস্তুতকারী একটি “লিডারশিপ স্কুল”
কিন্তু বর্তমানে দেখা যায়, ছাত্রদলে প্রচুর গ্রুপিং এবং উপগ্রুপের উপস্থিতি যা দলের অস্তিত্বের জন্য বড় হুমকি। সংখ্যায় বেশি হলেও দলে শৃঙ্খলার অভাব, যা শহিদ জিয়ার আদর্শের পরিপন্থী। যেকোনো প্রোগ্রাম মিছিল, মিটিং, সমাবেশে শৃঙ্খলা হওয়া উচিত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার কারণ এটা শহিদ জিয়ার দল। নিজেদের মধ্যে দলাদলি, গ্রুপিং এর ফলে শত্রুপক্ষ সুযোগ নেয় এবং দলে অনুপ্রবেশ করে যেটা বিগত আমলে ছাত্রলীগের ক্ষেত্রে দেখা গেছে। এই অনুপ্রবেশকারীরাই সংগঠনের ক্ষতি বেশি করে।
২। সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক সচেতনতাঃ
সাধারণ শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব, সংগঠন ও রাষ্ট্রচিন্তার প্রশিক্ষণ দিতে হবে যার মাধ্যম হবে রাজনীতি। ছাত্রদলকে হতে হবে,
· আদর্শগতভাবে রাজনৈতিক,
· কিন্তু সন্ত্রাসমুক্ত, গডফাদারমুক্ত ও ছাত্রদের মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন।
ছাত্রদলে তরুণদের নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে হবে যারা হবে অগ্রচিন্তার অধিকারি, যারা তাদের সময়ের আগে চিন্তা করতে জানবে।
৩। মূল্যবোধনির্ভর নেতৃত্ব প্রস্তুতির প্ল্যাটফর্মঃ
ছাত্রদল হবে “নেতৃত্ব গঠনের ইন্সটিটিউশন” যেখানে ছাত্ররাঃ
· রাজনৈতিক শিক্ষা নেবে,
· বিতর্ক, যুক্তি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান চর্চা করবে,
· এবং ভবিষ্যৎ সংসদ, প্রশাসন ও কূটনীতিতে নেতৃত্ব দেবে।
বর্তমান বাস্তবতায় ছাত্রদলের করণীয়ঃ
শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ছাত্রদল যেভাবে এগিয়ে নিতেন তা নিচে আলোচনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে শহিদ জিয়ার চিন্তাধারা, ভিশন, আগামীর নেতা জনাব তারেক রহমানের চিন্তাভাবনা, ভিশন, ৩১ দফাকে মাথায় রেখে এবং গবেষণার ভিত্তিতে করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
১। সাংগঠনিক কাঠামোকে অনেক বেশি শৃঙ্খলিত করতে হবেঃ
· ছাত্রদলের জন্য একটি নির্দিষ্ট নৈতিক আচরণবিধি (code of conduct) চালু করতে হবে।
· সাংগঠনিক মূল্যায়ণ ও পদোন্নতি হবে- পারফরম্যান্স, আদর্শ এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে।
· দলীয় আনুগত্য নয়, আদর্শিক দক্ষতা হবে নেতৃত্ব নির্বাচনের মানদন্ড।
ছাত্রদলের সাংগঠিন কাঠামতে যুক্ত করতে হবেঃ
· নিয়মিত মূল্যায়ণ,
· সাংগঠনিক রিপোর্টিং,
· বাছাইকৃত নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম,
· সুসংগঠিত কমান্ড চেইন,
· এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
জিয়াউর রহমান দলের কর্মীদের প্রশিক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন এবং মূল্যায়ণ করতেন যা তার বই “আমার রাজনীতির রুপরেখায়” পাওয়া যায়।
২। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে গুণগত পরিবর্তনঃ
শহিদ জিয়া বলতেন, “Only tested patriotism and merit can build the country.”
পরিবারতন্ত্র নয়, মেধা ও আদর্শের ভিত্তিতে নেতৃত্ব নির্বাচন হবে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি হবে দক্ষ, শিক্ষিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন ছাত্রদের সমন্বয়ে।
৩। বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা ও ছাত্র কল্যাণে বাস্তবভিত্তিক কার্যক্রমঃ
ছাত্রদল হবে গবেষণা, থিংক ট্যাঙ্ক ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার কেন্দ্র। দলের উদ্যোগে হবেঃ
· বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক পলিসি ক্লাব,
· সেমিনার, ওয়ার্কশপ, থিংক ট্যাঙ্ক সংস্কৃতি,
· রাজনৈতিক ইতিহাস চর্চা,
· আন্তর্জাতিক ছাত্র সংগঠনের সাথে পারস্পরিক বিনিময়,
· বিদেশে ছাত্রসংগঠনগুলোর ন্যায় গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ (আইন, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন কাজ),
· স্টাডি সার্কেল, স্কলারশিপ সহায়তা, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং,
· হল সংকট, বৃত্তি, ক্যারিয়ার গাইডেন্সে সহায়ত,
· স্টাডি সার্কেল ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ছাত্রদলের সংগঠন হিসেবে ছাত্রাবাস সংকট, টিউশিন ফি, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং, স্কলারশিপ সহায়তা ইত্যাদি ইস্যুতে ভূমিকা রাখা।
৪। ক্যারিয়ারে সহায়তা ও দক্ষ সমর্থকগোষ্ঠী গড়ে তোলাঃ (***)
এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ। জনাব তারেক রহমান আগামীতে রাষ্ট্রপরিচালনায় বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ, অভিজ্ঞ ও মেধাবিদের সন্ধান করবেন। সুতরাং, এজন্য ছাত্রদলকে প্রস্তুত হতে হবে। দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা সবাই প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে জড়িত হতে চায় না, সবাই নেতাও হতে পারে না কিংবা চায় না, দিনশেষে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে তাকে ক্যারিয়ারের চিন্তা করতে হয় যাতে বিসিএসসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বেসরকারি চাকরি রয়েছে।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের জন্য এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝেও ইতিবাচকতা ও সমর্থকগোষ্ঠী তৈরির জন্য (যা ডাকসু নির্বাচনেও ভালো ফলাফল এনে দিবে দলকে) ছাত্রদলের উদ্যোগে তাদের ক্যারিয়ারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যাপারে সাহায্য করতে হবে যাতে তারা সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে গিয়েও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে ধারণ করতে পারে।
ছাত্রদল যা করতে পারেঃ
· বিসিএস ও অন্যান্য সরকারি চাকরির জন্য ফ্রি ক্লাস, সেমিনার, ক্যারিয়ার গাইডলাইন এমনকি কিছু ইনফরমাল কোচিং সেশন যাতে জাতীয়তাবাদের আদর্শ ধারণ কারী এবং আগ্রহী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারে। এভাবে জনশক্তি বা এসেট তৈরি হবে যা দীর্ঘমেয়াদে দলকে সুবিধা দিবে, একটি প্রফেশনাল জনগোষ্ঠীও গরে উঠবে ছাত্রদলের সমর্থনে,
· বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানী, ব্যাংক, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, এনজিওর সাথে কোলাবোরেশন এর মাধ্যমে সেমিনার আয়োজন (এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলে যোগ দিতে আগ্রহী হবে কারণ এখানে সে কিছু পাচ্ছে),
· বিদেশে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহীদের জন্য সেমিনার আয়োজন,
· লিডারশিপ গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ বাড়ানো যেমন- Democracy International, NED, Asia Foundation, US Embassy Dhaka, UK in Bangladesh, Lee Kuan Yew School of Public Policy, UNDP এদের সাথে কোলাবোরেশনের মাধ্যমে নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করতে হবে।
এই কাজগুলো ঘন ঘন একটা সিস্টেমের মধ্যে করতে হবে। এগুলো ছাত্র সংগঠনের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ বানাতে হবে।
৫। ছাত্রদলের নিজস্ব বিশ্বমানের স্টাডি ও রিসার্চ টিম গড়ে তোলাঃ
ভুল তথ্য, অপপ্রচার মোকাবেলার ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আলাদা স্টাডি ও রিসার্চ সেল থাকবে যেখানে দক্ষ ও যোগ্য কোয়ালিটেটিভ ও কোয়ান্টেটিভ অ্যানালাইসিস পারে এমন কয়েকজনকে নিয়োগ করতে হবে যাদের কাজ হবে সোশাল মিডিয়ায় কন্টেন্ট অ্যানালাইসিস করা এবং ফ্যাক্ট চেকিং করা। আলাদা ফেসবুক পেজ থাকবে যেখানে নেতিবাচক প্রচারণাকে ফ্যাক্ট চেকিং এবং সত্য উপস্থাপনের মাধ্যমে কাউন্টার করা হবে।
এটি করতে না পারলে, ছাত্রদল খুব শীঘ্রই ইমেজ সংকটে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে ছাত্রদল বিভিন্ন সংস্থার সাথে কোলাবোরেশন করতে পারে যেমন, CGS, The Bangladesh Dialogue, US Embassy Dhaka, US Department of State (Countering Misinformation and Disinformation), FCDO etc.
ছাত্রদলের একটি স্বতন্ত্র মিডিয়া উইং গড়ে তোলাও গুরুত্বপূর্ণ যাদের কাজ হবে মিডিয়া ফেস করা এবং টক শো তে সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করা। বিতর্কে দক্ষ, বাকপটু এবং তরুণদের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করতে হবে যাদেরকে সিনিয়র নেতারা গ্রুমিং করবেন এবং বিভিন্ন ন্যারেটিভ নির্মাণে তারা কৌশলী ভূমিকা পালন করবে।
উপসংহারঃ
মাঠের রাজনীতির পাশাপাশি উপরোক্ত উদ্যোগগুলো গ্রহণ করতে পারলে ছাত্রদল এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে, ১৯৯০ এর হারানো গৌরব ফিরে পাওয়া সম্ভব হতে পারে এবং জনাব তারেক রহমানের যে ভিশন তা কিছুটা হলেও অর্জিত হতে পারে। মাঠের রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু এর পাশাপাশি আগামীদিনের নেতৃত্বের বিকাশ ও ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের অবস্থান শক্তিশালী করা এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে ছাত্রদলের সাংগঠিন ভিত্তিকে শক্তিশালী করতে চাইলে উপরের করণীয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে।
শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ছাত্রদল আজ হতো- A disciplined, intellectual and leadership-oriented political school for the youth of Bangladesh. জনাব তারেক রহমানও সেই স্বপ্ন দেখছেন- যেখানে ছাত্রদল হবে এক ধরণের “ছাত্রপ্রতিভা ও রাষ্ট্রচিন্তার ল্যাবরেটরি”- যেখানে সন্ত্রাস নয়, নেতৃত্বই হবে পরিচয়।
ছাত্রদল হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে শৃঙ্খলিত, শিক্ষিত, গণমুখী ও নেতৃত্বপ্রস্তুতিমূলক ছাত্র সংগঠন- যা দেশের প্রশাসন, কূটনীতি ও নীতিনির্ধারণে ছাত্রদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
জুলিয়ান রাফাহ, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।