সচেতনতা নাকি স্ব অচেতনতা? আসলে বর্তমান সময়ে যেই জিনিসটা সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায় তা হল বিভিন্ন সংবেদনশীল বিষয়ে মানুষের সচেতনতার অভাব। আধুনিকতার ছোঁয়ায় যত সময় যাচ্ছে,মানুষের জীবনে তত আরাম আয়েশ চলে আসছে। ফলে মানুষ পরিশ্রম বিমুখ, স্বাস্থ্য সচেতনতা, আত্ম সচেতনতা বিভিন্ন বিষয়ে পিছিয়ে পড়ছে। বর্তমান সময়ে স্বাস্থ্য সচেতনতার যে বিষয়টি সেটা সম্পর্কে সমাজে অন্ধকার পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন অসংক্রামক ব্যাধিকে নির্মূল করার জন্য মানুষ ব্যায়াম, লাইফস্টাইল মোডিফিকেশন, মেডিটেশন, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, সাউন্ড স্লিপ বাদ দিয়ে ওষুধের প্রতি নির্ভরশীল হচ্ছে। আমরা জানি প্রতিকার থেকে প্রতিরোধ উত্তম। আর মেডিসিন এর অপব্যবহার এর জন্য ওষুধের দোকানি থেকে শুরু করে রোগী নিজে একসাথে কাজ করছে,যেটা সবচেয়ে ভয়ংকর। এমন কোনো মানুষ পাওয়া যাবে না যার ঘরে এখন প্যারাসিটামল পাওয়া যাবে না। একটু মাথা ব্যথা হলেই প্যারাসিটামল,কারো এন্ডোমিথাসিন,মানে যে যার ডাক্তার। গবেষণায় উঠে এসেছে প্যারাসিটামল অন্যতম একটা টক্সিক ড্রাগ,যা আপনার লিভার এবং কিডনিকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আর এন্টি বায়োটিক রেজিস্ট্যান্স এর ভয়াল প্রভাব যে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের উপর পড়বে না,তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। ইতিমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এন্টি বায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে গেছে।এখন বেশিরভাগ মানুষই ফার্মেসির সেলসম্যান এর কাছে গিয়ে সিফ্রোফলক্সাসিন, এজিথ্রোমাইসিন এর মতো এন্টি বায়োটিক নিয়ে আসছে তাও আবার রেজিস্টার্ড ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়া। সাত বা চৌদ্দ দিনের ডোজ এর জায়গায়,দুই চার দিন পর থেকেই ঐ মেডিসিন খাওয়া বাদ দিয়ে দিচ্ছি,যার ফলশ্রুতিতে এন্টি বায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে যাচ্ছে। আমাদেরকে শরীরের বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে, শরীরকে একটু সময় দিলেই শরীর নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়, কিন্তু আমরা সে সময় দিচ্ছি না।অথচ আপনি আপনার লাইফস্টাইল মোডিফিকেশন করে,নিজে সচেতন হয়ে, বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে থাকতে পারেন। মানসিক প্রশান্তির চর্চা ও সুস্থ জীবনযাপন বিভিন্ন রোগ নির্মূল করতে সক্ষম। তাই নিজের কল্যাণে, পরিবারের কল্যাণে, সমাজের কল্যাণে,দেশ ও জাতির কল্যাণে আপনাকে আমাকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। আর অবশ্যই রেজিস্টার্ড ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়া ফার্মেসি থেকে ওষুধ নিতে বিরত থাকতে হবে। নিয়মিত হাঁটুন,ব্যায়াম করুন,টেনশন মুক্ত জীবনযাপন করুন। সবচেয়ে বড় কথা সুস্থ জীবনযাপন এর জন্য স্থায়ী সমাধান যদি কিছু থেকে থাকে,তবে তার চাবিকাঠি একমাত্র আপনার হাতেই, ডাক্তার আর ওষুধ আপনার সহযোগী মাত্র । তাই মেডিসিন ব্যবহারে নিজে সচেতন হোন, এবং সবাইকে সচেতন করুন।
লেখক: জয় পাল অর্ঘ,
শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০