তানজিলা তুহা:
নারীর অগ্রগতি বলতে আমরা বুঝি নারীর অগ্রসর, উন্নতি, মানবিক ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিকাশ।
বিশ্বে নারীদের অগ্রগতির তুলনায় বাংলাদেশ অনেকাংশে পিছিয়ে রয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক শিক্ষার পাশাপাশি তাদের ইচ্ছার মর্যাদা দিয়ে কে কোন কাজ করতে ইচ্ছুক তাকে সে কাজ করার ও গবেষণা করার পর্যাপ্ত সূযোগ করে দেওয়া হয়।
আমাদের দেশের নারীদের অগ্রগতির প্রধান অন্তরায় হলো দরিদ্রতা, শিক্ষার অভাও সামাজিক নিরাপত্তার ঘাটতি । এদেশে প্রায় ২৬.০২ শতাংশ লোক দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে।তাই এ অসহায় মানুষগুলো তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে অক্ষম। এ রকম অসহায় মানুষগুলো তাদের কন্যা সন্তানকে বোঝা মনে করে। ফলস্বরুপ; তাদের বাল্যবিবাহ নামক ভয়ানক ব্যাধির কবলে নিক্ষেপ করে।ঠিক তখনই স্বপ্নে বিভোর কিশোরীদের স্বপ্ন গুলো' আকাশ কুসুম 'হয়ে যায়। এভাবেই নারীর উন্নয়নের পথ ব্যাহত হয়।
নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অধিকার। কিন্তু আমাদের সমাজের এখন এমন অবস্থা,যাদের অঢেল সম্পদ আছে তাদের মানসম্পন্ন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে প্রবেশ অধিকার রয়েছে। এ রকম অনেক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির কারনেই বাংলাদেশের অধিকাংশ নারীকে মাধ্যমিক শিক্ষার গণ্ডি পার হওয়ার আগেই তাদের জীবনের সকল আশার আলো নিভে যায়।
UNFP এর এপ্রিল ২০১৯ এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় বাংলাদেশের বাল্যবিবাহের হার ৫৯ সতাংশ। যা দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ।
উন্নত দেশ গুলোতে বাল্যবিবাহ নেই বললেই চলে। স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিট স্হানে নারীর নিরাপত্তা আজ হুমকিতে। যার জলন্ত দৃষ্টান্ত তনু, নুসরাত, সায়মা, তানিয়ার মতো হাজার তরুণীর ধর্ষণ ও অবিবেচক পুরুষশাসিত সমাজ কর্তক হেনস্হার স্বীকার । তাইতো পিতা মাতা নিরুপায় হয়ে মেয়েকে আশ্রয় প্রদান করার জন্য তাদের স্বপ্ন গুলোকে বিনষ্ট করে দেয়।
আমাদের স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ছিল বৈষম্যহীন সমাজ গঠন করা।কিন্তু আমরা আইনগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, সকল ক্ষেত্রেই নারীকে পিছিয়ে দেখতে পাই।
যেহেতু এদেশের ৫০ শতাংশ নারী তাই ২০৩০ সালের মধ্য টেকসই উন্নয়ন অর্জন করতে হলে আমাদের অবশ্যই সকল ক্ষেত্রে নারীকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাই আমি বলতে চাই-
"নারী বলে করোনা তাচ্ছিল্য অপমান;
আমরাই তোমাদের এনে দিতে পারি বিশ্ব জয়ের সম্মান।"
শিক্ষার্থী : বিএম কলেজে, বরিশাল।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০