নারী অধিকার নিয়ে পাশ্চাত্য সমাজ ও মিডিয়া যতটা সোচ্চার, ইতোপূর্বে কেউ হয়তো এতটা সোচ্চার ছিল না বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে! তারা যেন নারীদের ত্রাণকর্তা রূপে ধরার বুকে আবির্ভূত হয়েছেন! ইসলামি ১২০০ শত বছরের শাসনে নারীরা যেন ছিল, চরম নির্যাতনের শিকার! ইসলাম মানে নারী নির্যাতন আর পাশ্চাত্য মানে নরী মুক্তি! আহ্! আহ্! সমীকরণটা কি আসলেই তাই? উত্তর দিচ্ছি একটু পর...
নারী অধিকারের নাম দিয়ে পুরো পাশ্চাত্য সমাজ নারীদেরকে খোলসমুক্ত করে প্রত্যহ কুড়িয়ে নিচ্ছে হাজার কোটি ডলার। এটার প্রধান ক্ষেত্র হলো পতিতাবৃত্তি। নারীর সতীত্বকে ইসলাম 'নারীর ভূষণ' হিসেবে বিবেচনা করলেও বিপরীত পক্ষে নারীর সতীত্ব বিক্রি করে মুনাফা কুড়ানো পাশ্চাত্যের কাছে তা 'অধিকার'। নারীদের কাছে নিজ সতীত্ব রক্ষার অধীকারের চেয়ে বড় কোনো অধিকার আছে বলে আমার অজানা। নারীদের অধিকারের কথা বলে পাশ্চাত্য পতিতাকে বৈধতা দিয়েছে। অতঃপর নারীরা কি নিরাপদ? যে পাশ্চাত্য, নারীদের অধিকার নিয়ে এতোটা সোচ্চার, চলুন একবার ঘুরে আসি ইউরোপ আমেরিকায়, দেখে আসি তাদের নারীদের সতীত্ব রক্ষায় তারা কতোটা তৎপর.....
.
*এক গবেষণা উঠেছে পাশ্চাত্যের সূতিকাগার আমেরিকার অবস্থা। রিপোর্ট বলছে, আমেরিকার মোট ধর্ষণের ৩৮℅ সংঘটিত হয় নারীদের ওয়ার্কপ্লেসে আর ৩৫℅ ঘটে বাসাবাড়িতে।
*আবার যে জাতিসংঘকে আমরা নারী অধিকারের প্রাণকেন্দ্র বলে বিশ্বাস করি, তাদের ব্যাপারে, Hear Their Cries নামক এক এনজিও-র রিপোর্টে উঠে এসেছে ভয়ানক চিত্র। তারা বলছে, জাতিসংঘকর্মীরা গত এক দশকে ৬০,০০০ ধর্ষণ ও যৌন নিগ্রহ ঘটিয়েছে।
*অন্য আরেক রিপোর্ট হলেন্ড বিষয়ে বলছে, ২২% ডাচ নারী জীবনে একবার হলেও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়।
*২০১৪ সালে জার্মানি বিষয়ে একটি রিপোর্ট বলছে, সে সময় জার্মানিতে ৪ লাখ পতিতা কাজ করত। জার্মানির জন্য এটা বছরে ১৬ বিলিয়ন ইউরাে কামানাের এক বিশাল ইন্ডাস্ট্রি। এতবড় ইন্ডাস্ট্রি দিয়েও পােষাচ্ছে না। এরপরও সে বছর জার্মান পুলিশের নােটিশে আসা যৌন নির্যাতনের কেস ২২, ৪২২টি ও শিশু যৌন নির্যাতনের কেস ১২, ১৩৪টি।
এছাড়া,
* দক্ষিণ আফ্রিকাতে প্রতি বছর ৫০০,০০০ জন, চীনে ৩১,৮৩৩ জন আর ব্রিটেনে ৮৫০০০ জন ধর্ষণের শিকার হয়। Huffington Post ২০১৭ সালে জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার লাস্ট পুলিশ রিপাের্টে এসেছে, প্রতিদিন সেখানে ১১৬ জন নারী ধর্ষিতা হচ্ছে। প্রতি ২৬ সেকেন্ডে একজন। ইন্টারপোল বলছে, দক্ষিণ আফ্রিকা ধর্ষণের রাজধানী। এবার বুঝুন, what is the actual meaning of female rights?
নারীর সতীত্ব রক্ষার অধিকার নিয়ে পাশ্চাত্য CEDAW এর অধীনে ৩০টি ধরা প্রনয়ণ করেও যেখানে পুরোপুরি ব্যার্থ সেখানে নারীর সতীত্ব রক্ষায় ইসলাম এক যুগান্তকারী সমাধান দিয়েছে, সূরা আহযাব ও সূরা নূর (কোরআনের মাত্র ২টি ধারার আংশিক আলোচনা) যেন নারীর সতীত্ব রক্ষার এক স্বর্গীয় উপহার। এ উপহার পেয়ে প্রতিটি মুসলিম জনপদ যেন একেকটি স্বর্গে পরিনত হয়েছে। ইসলাম যখন ব্যাভিচারের হত্যার বিধান দিয়ে ধর্ষণ বন্ধ করেছে, ঠিক তখন পাশ্চাত্য এই শাস্তিকে মানবতা বিরোধী বলে সারা দুনিয়াকে ধর্ষণের নোংরা অভয়ারণ্য ও বিভৎস পৃথিবী উপহার দিয়েছে। আজকের মুসলিম শাসিত ও পাশ্চাত্যের দোসরদের শাসিত দেশের ধর্ষণ সমীক্ষা পর্যালোচনায় আনুন; দেখবেন, কে নারী বান্ধব আর কে নারী বিদ্বেষী। আমাদের কাছে যা মুক্তির সনদ, পাশ্চাত্যের কাছে তা মানবতা বিরোধী । খোদার জমিনে মুসলিমরা পাশ্চাত্যের শিখানো মানবতা ও নারীবাদকে পদাঘাত করে স্রষ্টার দেওয়া বিধানকে বুকে নিয়ে স্বর্গীয় সুখ খুঁজে পেতে চায়। তারা নারীবাদী হতে রাজি নয়, তারা হতে চায় নারী বান্ধব। পাশ্চাত্যের কাছে নারী বিদ্বষী হয়ে তারা হৃদয়ে পুলক অনুভব করে। আপনি কি হবেন তাদের সংঙ্গী? তাহলে বসে আছেন যে ? চলুন না। হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাই। এগিয়ে যাই মুক্তির পথে। মুক্তবাতাসের সন্ধানে।
লেখক :
মাহমুদুল হাসান
শিক্ষার্থী- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০